বাংলাদেশের স্পিনারদের কাছে অসহায় আত্নসমর্পণ করে সহজেই ওয়ানডে সিরিজে হোয়াটওয়াশ হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেও স্পিনে ধরাশায়ী হয়ে দুই টেস্টেই হেরেছিলো ক্যারিবিয়ানরা। তাই বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেই স্পিন নিয়ে নিজেদের দূর্বলতা ও প্রস্তুতির কথা অনেক বারই বলেছেন সফরকারীরা।
২০১৮ সালে দুই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার ইনিংসের ৪০ উইকেটের প্রতিটাই শিকার করেছিলেন বাংলাদেশের চার স্পিনার সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান। এবারও বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াডে রয়েছে এই চার স্পিনারই। তাই মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায় দুই টেস্টেই স্পিন সহায়ক উইকেট বানাবে বাংলাদেশ।
তবে গতকাল ঘোষিত টেস্ট স্কোয়াডে এই চার স্পিনারের সাথে রাখা হয়েছে পাঁচ পেসার আবু জায়েদ রাহী, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও এবাদত হোসেনকে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে ক্যারিবিয়ান বধে কেমন পরিকল্পনা সাজাচ্ছে স্বাগতিকরা। তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছেন করোনার কথা মাথায় রেখে ও দলের সাথে থেকে যেনো পেসাররা উন্নতি করতে পারে তাই স্কোয়াডে রাখা হয়েছে তাঁদের।
নান্নু বলেন, ‘কোভিড-১৯ আর কে কখন অসুস্থ হয় এটা মাথায় রেখেই স্কোয়াডটা বড় করেছি। যাদেরকে নিয়েছি টেস্ট ক্রিকেটের কথা মাথায় রেখেই দল সাজিয়েছি, যারা খেলবে না তারাও যেন একটা সিস্টেমের ভেতরে থাকে। তারা যেন টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কাজ করে উন্নতি করতে পারে এবং পরবর্তীতে খেলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে স্পিনাররা মূল দায়িত্ব পালন করলেও নিউজিল্যান্ডে দায়িত্ব নিতে হবে পেসারদেরই। প্রধান নির্বাচক জানিয়েছেন ভবিষৎয়ের কথা ভেবে দলের ভারসাম্য ঠিক রাখতেই রাখা হয়েছে পাঁচ জন পেসার।
তিনি বলেন, স্কোয়াড কেবল একটা ম্যাচের কথা চিন্তা করে করা হয় না, সামনের দিনের কথা ভেবে। বিদেশ সফরে গেলে তো পেসার বেশি নিয়ে খেলতে হবে। ঘরের মাঠে স্পিনারদের একটু বেশি প্রাধান্য দিই আমরা। দলের সবকিছু যেন ঠিক থাকে এইজন্যই ভারসাম্যটা রাখা।’
ভারত অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজে একাধিক পেস বোলারকে চোটে পড়তে দেখা গিয়েছে। চোটের আশঙ্কা ও ফিটনেসে ঘাটতি চলে আসার কথা ভেবেও স্কোয়াডে বেশি পেসার রাখা হয়েছে। নান্নু জানিয়েছেন এখন সব বোলারেরই ম্যাচ ফিটনেস রয়েছে। নান্নু আশাবাদী দুই টেস্ট শেষেও পেসারদের ফিটনেস ভালো অবস্থানে থাকবে।
প্রধান নির্বাচক বলেন ‘এখানে ৫ জন পেসার রেখেছি কারণ অনেক দিন পরে আমরা ৫ দিনের ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি। যেকোনো সময় যেকোনো বোলারের আহত হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। ওদের ফিটনেস ৫ দিন খেলার পরে একই অবস্থানে থাকে না। আর ওরা পুরো একবছর টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে। সেই হিসেবে ওদের এই ফিটনেসের কথা চিন্তা করেও বেশি ফাস্ট বোলার নিয়েছি। সবার ফিটনেস এখন ভালো অবস্থানে আছে এবং আশা করছি দুইটা টেস্ট ম্যাচেই ভালো অবস্থানে পাবো।’
স্কোয়াডে চার জন স্পিনার ও পাঁচ জন পেসার রাখলেও প্রধান নির্বাচক নিশ্চিত করে কিছু বলেননি একাদশে কতজন পেসার ও স্পিনার রাখা হবে। জানিয়েছেন ম্যাচের আগে টিম ম্যানেজমেন্ট এটা সিদ্বান্ত নেবে। তিনি আহবান করেছেন সবাইকে প্রস্তুত থাকতে।
তিনি বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা আগে টিম ম্যানেজমেন্ট টিম তৈরি করবে তাই এখনই বলা মুশকিল। কয়জন স্পিনার, কয়জন পেসার নিয়ে খেলা হবে সেটা তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলের পেসার, স্পিনার সবাইকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।
আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। এবং ১১-১৫ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে শেষ হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফর।