চট্টগ্রামকে আগলে রাখলেন তামিম, কিন্তু!

এমন একটি ইনিংসের দেখা মিলবে তানজিদ হাসান তামিমের কাছ থেকে- সেটাই যে ছিল প্রত্যাশিত। ইনিংসের শুরু থেকে একেবারে শেষ অবধি টিকে থাকবেন। দলকে রাখবেন সঠিক কক্ষপথে। দ্রুত রান তোলার কাজটাও করবেন সমান তালে। সেসবই করেছেন তানজিদ তামিম দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে।

টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করবার সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। তবে শুরুতেই ব্যাকফুটে স্বাগতিকরা। ইনিংসের প্রথম বলেই আউট সৈকত আলী। স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে যায় গোটা চট্টগ্রাম শিবির। সেই চাপকে আরও ঘনিভূত করেছে ঢাকার বোলাররা।

২৪ রানে জশ ব্রাউন আউট হলে চাপ বরং দ্বিগুণ হয়। সেই চাপটাকে পাশ কাটিয়ে খেলে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। তাকে সঙ্গ দিয়ে গেছেন টম ব্রুস। দুই জনে মিলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে তাদেরকে একটু ধীরলয়েই ব্যাটিং করতে হয়েছে।

টম ব্রুস ৪৮ রান করে আউট হলেও তানজিদ তামিম নিজের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ইনিংসের ১৯তম ওভারে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তামিম। ততক্ষণে অবশ্য সন্তোষজনক একটা অবস্থানে পৌঁছে দেন দলকে।

সে যাত্রায় নিজের নামের পাশেও যুক্ত করেন বেশ বড় রান। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পেয়েছেন তরুণ এই ব্যাটার। তবে আগের যেকোন ইনিংসের চাইতে এই ইনিংস তিনি নিজেও সম্ভবত এগিয়ে রাখতে চাইবেন। রান বিচারে ৭০ রানই এখন পর্যন্ত এবারের বিপিএলে তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

১৩৭ স্ট্রাইকরেটের এই ইনিংসটিতে তিনি দলের প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়েছেন। সময় বুঝে ব্যাট চালিয়েছেন। ভারসাম্য বজায় রেখেই নিজের ইনিংসটি এগিয়ে নিয়ে গেছেন তানজিদ তামিম। তবে দলের বাকিদের খুব একটা সহয়তা পাননি তামিম। ঠিক সে কারণেই ১৫৯ রানেই থেমেছে চট্টগ্রামের ইনিংস।

যার প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি রান একা তামিমের ব্যাট থেকেই এসেছে। তা করতে গিয়ে ছয়টা বিশাল ছক্কা মেরেছেন তামিম। সেই সাথে একটি বাউন্ডারির মার এসেছে তার ব্যাট থেকে। এখানেই খানিকটা নেতিবাচকতা খুঁজে নেওয়া যায় তামিমের।

দারুণ একটা ইনিংস খেলেছেন তিনি, সে বিষয়ে নেই কোন সন্দেহ। তবে খুব বেশি ডট বল খেলে ফেলছেন তামিম। ৫১ বলের এই ইনিংসটিতে ১৯টি বলে কোন রান নিতে পারেননি তিনি। সুতরাং নিজের ইনিংসের প্রায় ৩৭ শতাংশ বলই ডট দিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। তাতে করে চাপ বাড়ে বৈকি কমে না।

তামিমের এই সমস্যাটা নতুন নয়। এবারের পুরো বিপিএল জুড়েই এই সমস্যায় জর্জরিত তিনি। প্রথমবার খেলছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, সেই মানদণ্ডে হয়ত তাকে ছাড় দেওয়া যায়। কিন্তু বিপিএলের মূল উদ্দেশ্যই তো তরুণ ক্রিকেটারদের উঠে আসা। এমন একটা মঞ্চে দাঁড়িয়ে খুব বেশি বাউন্ডারি নির্ভরতা নিশ্চয়ই হতে পারে না আদর্শ।

বরং চাপের মুহূর্তে সিঙ্গেল-ডাবলস বের করা রানের চাকা সচল রাখাই তো ব্যাটারদের । রানিং বিটুইন দ্য উইকেটের পাশাপাশি বাউন্ডারির মিশেল ঘটলেই তো তা দলকে দেবে স্বাচ্ছন্দ্য। সেই সাথে একজন ব্যাটারকেও করবে আত্মবিশ্বাসী। বাড়াবে রানের পরিসংখ্যান। তানজিদ তামিম নিশ্চয়ই সেসব শিখে নেওয়ার চেষ্টাই করবেন অতি দ্রুত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link