ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) পারফর্ম করলেই মিলবে জাতীয় দলে সুযোগ। অঘোষিত এই প্রথা মেনেই চলে ভারতীয় ক্রিকেট। তবে এবার শুধু আইপিএল নয়, কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেটে তাদেরকে সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েই জাতীয় দলে আসতে হবে।
এমনটাই জানিয়েছে বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। শুধু তাই নয়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের চেয়ে খেলোয়াড়দের আইপিএলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রবণতায় কিছুটা অখুশিই দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। সম্প্রতি বিসিসিআই সচিব জয় শাহ আইপিএলের সফলতা নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাতে তিনি গর্বিত সেটিও জানিয়েছেন।
তবে, ক্রিকেটারদের এক রকম সতর্ক বার্তা দিয়েই তিনি বলেছেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটি প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তাঁরা সব কিছু বাদ দিয়ে আইপিএলকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এটা কিন্তু বেশ উদ্বেগের কারণ। এই ধরনের প্রবণতা কখনোই প্রত্যাশিত না। ঘরোয়া ক্রিকেটই সবসময় মূল ভিত্তি। ভারতীয় ক্রিকেটের যা ইতিহাস, তা এই ঘরোয়া ক্রিকেটের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে। এমনও তো না, ঘরোয়া ক্রিকেটকে আমরা অবমূল্যায়ন করেছি। বরং সব সময় এটাকে উপরে রাখা হয়েছে।’
তিনি মনে করেন, ঘরোয়া ক্রিকেট ভারতীয় ক্রিকেটের মেরুদণ্ড। তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটই ভারতীয় ক্রিকেটের মেরুদণ্ড এবং এটাই জাতীয় দলের পাইপ লাইন হিসেবে কাজ করবে। ভারতের হয়ে খেলতে আগ্রহী প্রত্যেক ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স জাতীয় দলে নির্বাচনের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হিসেবে আছে এবং সেখানে অংশগ্রহণ না করাটা গুরুতর প্রভাব ফেলবে।’
সম্প্রতি ঈশান কিষাণ, শ্রেয়াস আইয়ার জাতীয় দলের বাইরে থেকেও রঞ্জি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করেনি। আর এরপরই কিছুটা কঠোর অবস্থানে গিয়েছে বিসিসিআই। এরই মধ্যে চুক্তিভূক্ত ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেটে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে বোর্ড। বিসিসিআইয়ের চুক্তির গ্রেড বি-তে আছেন শ্রেয়াস আইয়ার আর গ্রেড ‘সি’-তে রয়েছেন ঈশান কিষাণ।
মানসিক অবসাদের কারণে ক্রিকেট থেকে বিরতিতে রয়েছেন কিষাণ। তবে তাঁকে দুবাইয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, পার্টিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু রাঁচির হয়ে রঞ্জি খেলার কথা থাকলেও তিনি খেলেননি।
এ দিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ভালো করতে না পারায় শেষ তিন ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। কিন্তু বাদ পড়ার পর তিনিও রঞ্জিতে খেলছেন না। সব মিলিয়ে ক্রিকেটারদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট লিগ খেলতে অনীহায় বেশ খানিকটা চিন্তিত বিসিসিআই। আর তাই সে প্রবণতা থামাতেই কঠোর হচ্ছে তাঁরা।