বিস্ময়! এক লহমায় গোটা বাংলাদেশকে নিস্তব্ধ করে দিলেন নুয়ান থুসারা। তাওহীদ হৃদয়ের উইকেট তুলে নেওয়ার পর অবশ্য খানিকটা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। তবে সেটাকে আবারও নিশ্চুপ করে দিয়েছেন থুসারা। হঠাৎ-ই যেন বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
তাওহীদ হৃদয় এসেছেন বাইশ গজে। এসেই আবার ফিরে যেতে হয়েছে তাঁকে। তবে যাওয়ার সময় ঘটে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তাওহীদ হৃদয়। তাতে করে মাঠের ভেতরকার পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে শুরু করে।
তবে পরিস্থিত খুব বেশি গম্ভীর হতে দেননি আম্পায়ার তানভীর ইসলাম। তিনি হৃদয়কে দ্রুতই ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ক্ষিপ্ত হৃদয় প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটা শুরু করতেই আবারও কেউ একজন তার উদ্দেশ্যে মন্তব্য করে বসেন। হৃদয় আবার ঘুরে গিয়ে সেই কথার প্রতিবাদ করেন। মুহূর্তের মধ্যেই সেই পুরনো উত্তাপ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ মানেই এখন নতুন এক দ্বৈরথ। ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের উত্তেজনা ছাপিয়ে যায় এখন এই দুই দলের লড়াই। তবে এদিনের লড়াইটা অবশ্য নুয়ান থুসারাই শুরু করেন। না তিনি প্রথমেই বাকবিতণ্ডার সূত্রপাত করেননি। তিনি যা করেছেন, তাকে বলা যায় বল হাতে ধ্বংসজজ্ঞ।
প্রথমবারের মত বাংলাদেশের বিপক্ষে চলমান সিরিজে বল হাতে থুসারা। শুরুর ওভারটাতেই তিনি গুড়িয়ে দেন গোটা বাংলাদেশ দলকে। আনপ্লেয়েবল সব ডেলিভারি সামলে নিতেই যেন মুখ থুবড়ে পড়েন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। পঞ্চম শ্রীলঙ্কান বোলার হিসেবে হ্যাট্রিকের স্বাদও পেয়ে যান তিনি।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর বিপক্ষে দারুণ এক লেন্থ বল করেন। থুসারার সেই বলটি শান্তর ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে উপড়ে ফেলে স্ট্যাম্প। আগের দিন হাফসেঞ্চুরি করা শান্ত ফিরে যান ছয় বলে এক রান করে। এরপরই বাইশ গজে এসেছেন তাওহীদ হৃদয়।
তরুণ এই ব্যাটারও কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। তার বিপক্ষে লেন্থ বলে আউটসুইং আদায় করেন থুসারা। তাতে আবারও উপড়ে যায় স্ট্যাম্প। আনন্দে ভাসে গোটা শ্রীলঙ্কা শিবির। এরপরই ঘটে যায় বাকবিতণ্ডার ঘটনা। উচ্ছ্বাস প্রকাশের ধরণ সম্ভবত হৃদয়ের আক্ষেপকে রাগে রূপান্তরিত করে। শ্রীলঙ্কানরা ক্ষেপিয়ে দেওয়ার সেই সূবর্ণ সুযোগ আর হেলায় হারায়নি।
এরপরও থামেননি নুয়ান থুসারা। না, উত্তপ্ত বাক্যের বিনিময় না। তিনি বাইশ গজে তাণ্ডবের সমাপ্তি ঘটাননি। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে তুলে নেন থুসারা। তাতে করেই মুহূর্তের মধ্যে বাংলাদেশের তিন ব্যাটার সাজঘরে। সেই সাথে সিরিজ জয়ের স্বপ্নও মিশে যায় ধুলোর সাথে।
তবে সেই এক ওভারের ধ্বংসলীলায় সন্তুষ্ট থাকেননি থুসারা। এরপরও বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে আঘাত হেনেছেন তিনি। দলের জয়কে নিশ্চিত করেছেন একা হাতে। তার সেই লো রিলিজ পয়েন্টের সাথে দারুণ লাইন-লেন্থ ও গতির মিশেল ধরতেই পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। নুয়ান থুসারাই তাই হয়েছেন জয়ের নায়ক।