আইপিএলে ম্লান মহাতারকারা

আইপিএল ক্রিকেটারদের পারফর্ম করার একটি দুর্দান্ত একটি মঞ্চ।

সেটা হোক ভারতীয় কিংবা অন্য কোনো দেশের ক্রিকেটার। আইপিএলে পারফর্ম করে জাতীয় দলে জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। ইদানিংকালে দেখা যায়, বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার আইপিএলে নিয়মিত পারফর্ম করছেন। বিপরীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল, কিন্তু আইপিএলে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন এমন তারকা ক্রিকেটারের সংখ্যাও কম না।

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্রিকেটারদের কাছে প্রত্যাশা থাকে তাঁরা নিয়মিত পারফর্ম করবেন। কিন্তু তাঁরা এই প্রত্যাশা সব সময় রাখতে পারেন না। আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিগুলো বরাবরই কিছু বড় তারকাদের দলে ভিড়িয়েছে। কিন্ত সেই প্রত্যাশার পরিপুর্ণ প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি তাঁরা।

আইপিএলে ব্যর্থ হওয়া সে রকম কয়েক জন তারকার খোঁজ জানা যাক।

  • যুবরাজ সিং (ভারত)

ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের মধ্যে যুবরাজ সিং। তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার নতুন কিছু নেই। তিনি ভারতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জয়ের নায়ক। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টে জয়ের ক্ষেত্রে ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু আইপিএলে বরাবরের মত নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। কোনো দলের হয়েই যুবরাজ বলার মত কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেননি। প্রত্যেকবারই আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিগুলো তাকে নিয়ে হতাশ হয়েছে।

আইপিএল ক্যারিয়ারে ১৩২ ম্যাচ খেলে করেছেন ২৭৫০ রান। বল হাতে নিয়েছেন মাত্র ৩৬ উইকেট।

  • রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়া তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা অধিনায়কদের মধ্যে একজন।অধিনায়ক হিসেবে জিতেছেন ২ বিশ্বকাপ। কিন্তু আইপিএল ইতিহাসে তিনিও ছিলেন ব্যর্থদের তালিকায়। আইপিএলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মত দলের। কোনো দলের হয়েই সাফল্য পাননি তিনি।

আইপিএল ক্যারিয়ারে ১০ ম্যাচে ব্যাট হাতে করেছেন মাত্র ৯১ রান। ২০১৩ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে বাজে শুরুর পর রোহিত শর্মার কাছে দায়িত্ব স্থানান্তর করেন এবং আইপিএলকে বিদায় জানান।

  • মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া)

পূর্বসূরির মত তিনিও ব্যর্থ ছিলেন আইপিএলে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বোলারদের জন্য ভয়ংকর ছিলেন ক্লার্ক। কিন্তু আইপিএলে তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেননি। ২০১২ সালে আইপিএলে পুনে ওয়ারিওর্সের প্রতিনিধিত্ব করেন। পুনের হয়ে ৬ ম্যাচে ব্যাট হাতে করেন মাত্র ৯৬ রান। বল হাতে আরো ব্যর্থ ছিলেন তিনি। ৬ ম্যচে বোলিং করে উইকেট নেন মাত্র দুইটি। তিনি হয়তো আরো ভালো করতে পারতেন। কিন্তু বিভিন্ন ইনজুরি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সময় দেয়ার কারনে আর কখনোই আইপিএল কিংবা টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটের কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নেননি।

  • সৌরভ গাঙ্গুলি (ভারত)

ভারতের অন্যতম সেরা অধিনায়ক তিনি। ভারতকে বিদেশের মাটিতে জয় এনে দেওয়া কিংবা সার্বিকভবে শক্তিশালী করে তুলতে সৌরভের ভূমিকা অপরিসীম। ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবেও খ্যাতি ছিল সৌরভের। কিন্তু আইপিএলে বরাবরের মত ব্যর্থ ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি।

কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং পুনে ওয়ারির্সের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো দলকেই কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেননি তিনি। এমন কি ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের দিক থেকেও ব্যর্থ ছিলেন। আইপিএলে ৫৯ ম্যাচে মাত্র ২৫.৪ গড়ে করেছেন মাত্র ১৩৪৯ রান। স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০৬.৮।

  • অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডের এই ইনজুরি প্রবণ ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যতটা ভয়ংকর ছিলেন। আইপিএলে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতে পারেননি। ২০০৯ সালে আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ছিলেন ফ্লিনটফ। কিন্তু চেন্নাইয়ের হয়ে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলে বল হাতে নিয়েছেন মাত্র ২ উইকেট। ব্যাটিং এ ২ ইনিংসে করেছেন ৬২ রান। ব্যাটিং এ তুলনামূলক ভালো করলেও বোলিং এ ভালো না করার কারনে দলে সুযোগ পাননি। কারণ, দলে তার প্রধান কাজ ছিল বোলিং।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link