জ্যামের ফাঁদে আটক তামিম তিন নম্বরে!

অবশেষে তামিম ইকবাল ব্যাট করেছেন তিন নম্বরে। খানিকটা বিস্মিত নিশ্চয়ই হয়েছেন। বিশ্বকাপে তামিমকে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে বলা হয়েছিল তার ওপেনিং পজিশন পরিবর্তন করতে। সে নিয়ে তো কম জলঘোলা হয়নি। তবে এবার এক প্রকার বাধ্য হয়েই তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছেন বা-হাতি এই ওপেনার।

ঘটনাটা ঘটেছে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল)। তামিম বর্তমানে রয়েছেন জাতীয় দলের বাইরে। জাতীয় দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলছে। তবে নানামুখী কারণে তামিম নেই দলে। তাইতো নিজেকে প্রস্তুত করতে তামিম খেলছেন ডিপিএল।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফরচুন বরিশালের হয়ে শিরোপা জয়ের পর তার হাতেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। দলের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে সবার আগেই উপস্থিত থাকার কথা ছিল তামিমের। তবে ঘটেনি তেমনটি।

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশ ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার নম্বর মাঠে খেলতে নামে প্রাইম ব্যাংক। প্রতিপক্ষ ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তাদের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে সঠিক সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে পারেননি তামিম। ঢাকার ট্রাফিক জ্যামের বলি হয়ে বেশ দেরিতে নির্ধারিত ভেন্যু-তে পৌঁছান তিনি। মূলত সাভার মুখী রাস্তায় এক দূর্ঘটনার কারণেই লেগে যায় বিশাল ট্রাফিক জ্যাম। সে জ্যাম ঠেলে তামিমের মাঠে পৌঁছাতে সময় লেগে যায় প্রায় চার ঘন্টা।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করবার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কার্যত সময় অনুযায়ী ম্যাচ শুরু করতেই হতো। অগ্যতা কোন উপায়ন্তর না দেখে শাহাদাত হোসেন দীপুর সাথে এদিন ওপেনিং করতে পাঠানো হয় আরেক তরুণ পারভেজ হোসেন ইমনকে।

তবে তাতে করে যে প্রাইম ব্যাংকের খুব ক্ষতি হয়ে গেছে তেমনটি নয়। এই দুই তরুণ ব্যাটারই পরবর্তীতে তুলে নেন সেঞ্চুরি। তাদের অনবদ্য জুটির কল্যাণে ব্রাদার্সকে বিশাল এক লক্ষ্য ছুড়ে দেয় প্রাইম ব্যাংক। যদিও তামিম পরবর্তীতে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন বাইশ গজে।

তবে ব্যাট হাতে অনুজদের দারুণ দিনেও, নিজের ছায়া হয়েই প্রস্থান ঘটে তামিমের। দুই চারের সমন্বয়ে ১৫ বলে ১৬ রান করে আউট হন তামিম ইকবাল খান। তবে তাতে অবশ্য কোন প্রকার বেগ পোহাতে হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। দিপু ও ইমনের ২৪৬ রানের জুটির পর, প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস থামে ৩৮০ রানে।

তামিম তার ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম বিপাকে পড়ে ওপেনিং পজিশন ছেড়ে মিডল অর্ডারে ব্যাট করেছেন তেমন নয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিল একবার। সেটা আবার আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচে। সেবার তামিম এক সূক্ষ্ম পরিকল্পনার বলি হয়ে খেলেছিলেন মিডল অর্ডারে।

সেবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে, পাঁচ নম্বরে ব্যাট করেন তামিম। কারণটা ছিল চার বিরতির আগের সেশনে ৪৯ মিনিট মাঠে ছিলেন না তিনি। নিয়মানুসারে পরবর্তী ইনিংসে ওপেনিং করতে হলে নির্ধারিত মাঠে থাকতে হবে আগের ইনিংসের শেষভাগে। সে সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে দেন ফাফ ডু প্লেসি।

তাইতো অগ্যতা মিডল অর্ডারেই ব্যাটিং করতে হয়েছিল তামিমকে। সেটা ছিল একেবারেই কৌশলগত ফাঁদ। এবারে তামিমকে ফাঁদে ফেলেছে ‘বাটারফ্লাই ইফেক্ট’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link