দামামা বেজে গেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল)। মাঠে গড়াচ্ছে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা আয়োজন। আর সেই সেরা টুর্নামেন্টের অন্যতম সফল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সও প্রস্তুত। তাদের এবারের মিশন নিজেদের হারানো জৌলুশ ফিরে পাওয়া।
চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পর কলকাতাই আইপিলের সফলতম দল। দুই দফা দলটি জিতেছিল চ্যাম্পিয়নের খেতাব। ২০১২ ও ২০১৪ সালে সেই শিরোপা জেতার পর থেকেই দলটা যেন ক্রমশ হয়ে গেছে সাদামাটা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে খানিকটা পিছিয়েই ছিল দলটি।
তবে এবার যেন শোনা যাচ্ছে দিন বদলের গান। খেলা মাঠে গড়ানোর আগেই কলকাতাকে মনে হচ্ছে বেশ গোছানো একটা দল। এর পেছনে রয়েছে বেশকিছু কারণ। অধিনায়ক হিসেবে আবারও স্বস্থানে ফিরছেন শ্রেয়াস আইয়ার। গেল আসরে ইনজুরির থাবায় তিনি ছিলেন মাঠের বাইরে। নিতীশ রানা দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বটে। তবে থেকে গিয়েছিল ঘাটতি।
সেই ঘাটতি অন্তত এবার আর থাকছে না। অন্যদিকে ফিনিশিংয়ে কলকাতার যেন নেই কোন দুশ্চিন্তা। কেননা দলে রয়েছেন আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিং। যদিও রাসেল তার সোনালী সময়টা পেছনে ফেলে এসেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে ফেলে আসা দিনের ঝলক দেখিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের সেই পাওয়ার হিটিং দক্ষতারই প্রদর্শন ঘটিয়েছেন তিনি।
তাছাড়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও নিজের সেই দক্ষতা ঝালাই করে নিয়েছেন। অন্যদিকে রাসেলকে সঙ্গ দিতে রয়েছেন রিঙ্কু সিং। তিনি রীতিমত তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সময় পার করছেন। একা হাতে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়ার সক্ষমতা রাখেন রিঙ্কু। সেটাই বরং নির্ভার করছে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে।
আরও একটা বিষয় নির্ভরতার জায়গা হিসেবে ধরা দিয়েছেন নাইটদের শিবিরে। অজি পেসার মিচেল স্টার্ক অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন দলটিতে। অধিকাংশ সময়েই কলকাতার স্পিন ডিপার্টমেন্ট একেবারে সমৃদ্ধ থাকে। এবারও তেমনটি রয়েছে।
স্পিন ত্রয়ী সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী ও সুয়াশ শর্মা রয়েছেন। পাশাপাশি আফগানিস্তানের মিস্ট্রি স্পিনার মুজিব-উর রহমানঅ যুক্ত হয়েছেন দলটির সাথে। স্পিন ডিপার্টমেন্টের পাশাপাশি এবার পেস আক্রমণেও প্রতিপক্ষকে কাবু করতে চাইবে কলকাতা। নিজের দিনে স্টার্ক ঠিক কতটা দুর্ধর্ষ- তা নিশ্চয়ই নতুন করে বলবার নয়।
তবে মানসিকভাবে কলকাতাকে এগিয়ে রাখছে গৌতম গম্ভীরের সংযুক্তি। ফ্রাঞ্চাইজিটিকে দুই দফা শিরোপা জিতিয়েছিলেন তিনি অধিনায়ক হিসেবে। ২০১২-১৪ এই তিন বছরের মধ্যে দুইবার শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছিল নাইটরা।
সে অভিজ্ঞতাই হয়ত ছড়িয়ে দিতে চাইবেন গৌতম। বিশ্বকাপ জেতানোর অভিজ্ঞতাও তো রয়েছে তার। গৌতমের সেই চ্যাম্পিয়ন মানসিকতা কলকাতার জন্যে হতে পারে আশির্বাদ। তাছাড়া প্রচণ্ড প্রতিযোগিতামূলক আর আগ্রাসী মনোভাবের গৌতমের কারণে দলটি হয়ে উঠতে পারে অদম্য। গৌতমের মেন্টর হিসেবে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই কলকাতার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে দেবে।