সমালোচনা, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ – চারপাশে তাকিয়ে রিয়ান পরাগ এসবই দেখেছেন এতদিন। দিনের পর দিন তাঁকে নিয়ে হাসাহাসিতে মেতেছিল পুরো ক্রিকেটাঙ্গন। ব্যতিক্রম ছিল শুধু রাজস্থান রয়্যালস, টানা ব্যর্থতার পরেও তাঁর কাঁধে ভরসার হাত রেখেছিল তাঁরা। সেটার প্রতিদান এবারের আসরে দিতে শুরু করেছেন তিনি, একের পর এক ম্যাচে দুর্দান্ত সব পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছেন।
লম্বা একটা সময় লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলার পর এই মৌসুমে উপরের দিকে খেলার সুযোগ পেলেন এই ব্যাটার। টিম ম্যানেজম্যান্টের এমন সিদ্ধান্তই বদলে দিয়েছে সবকিছু, পুরোদস্তুর পারফরমার বনে গিয়েছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ঝকঝকে এক ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।
এদিন মাত্র ৪৯ বলে ৭৭ রান করেছেন এই ডানহাতি, আট চারের পাশাপাশি চারটি ছক্কায় সাজানো ইনিংসটিতে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল প্রায় ১৬০। রাজস্থান রয়্যালস জিততে না পারলেও শেষপর্যন্ত যেভাবে লড়াই করেছে সেটার কৃতিত্ব তাঁরই।
অথচ এই তরুণ যখন বাইশ গজে আসেন তখন লজ্জাজনক কোন পরিস্থিতির অপেক্ষায় ছিল রাজস্থান। প্রথম ওভারেই দুই ইনফর্ম ব্যাটার জশ বাটলার, সাঞ্জু স্যামসনের উইকেট হারিয়ে বসেছিল তাঁরা; দলীয় সংগ্রহ তখন স্রেফ এক রান! তবে তীব্র চাপের মুখেও ভেঙে পড়েননি তিনি; যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।
রক্ষণাত্মক নয়, বরং দু’জনেই ইতিবাচক ব্যাটিং করে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেন। এরই মাঝে ৩১ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পরাগ; তবে এতটুকুতেই তুষ্ট হননি তিনি, জয়সওয়াল ফিরে গেলেও দলকে জয়ের পথে ধরে রাখেন। তাঁর ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায় স্যামসনরা।
যদিও শেষমেশ জিততে পারেনি টেবিল টপার, এই তারকা আউট হওয়ার পরেই প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখে হায়দ্রাবাদ। দারুণ ডেথ বোলিংয়ের কল্যাণে এক রানে জিতে যায় দলটি। তবে তাঁর বীরত্ব এতে ম্লান হয়ে যায়নি, চলতি আসরে যেই ধারাবাহিকতা তিনি দেখিয়ে চলছেন সেটি নিন্দুকদেরও কুর্নিশ করতে বাধ্য করেছে।