বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হারাচ্ছেন লিটন দাস!

গুড লেন্থে পড়ে ইনসুইং হতে থাকল ব্লেসিং মুজারাবানির বলটি। সেই বলটি যেন বুঝতেই পারেননি লিটন কুমার দাস। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে সে বল উপড়ে ফেলে স্ট্যাম্প। হতভম্ব লিটনের ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে মাত্র এক রানে। অবশ্য এই ধারা নতুন নয়। যদিও মুজারাবানির সেই বলটিকে খাটো করে দেখবার উপায় নেই।

দারুণ একটি ডেলিভারিতেই লিটন বোল্ড হয়েছেন। কিন্তু লিটনকে বেশ দক্ষ একজন ব্যাটার হিসেবেই বিবেচনা করা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট। তেমন একজন ব্যাটার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাবলীলভাবে রান তুলতে ব্যর্থ- বিষয়টি নেতিবাচক নিঃসন্দেহে।

খারাপ সময় খেলোয়াড়দের জন্যে ধ্রুব এক সত্য। কিন্তু লিটনের ক্ষেত্রে সেটা লম্বা সময় ধরে পেয়েছে স্থায়িত্ব। সেই কবে জাতীয় দলে লিটন খেলেছিলেন লিটন সুলভ একটা ইনিংস। সে স্মৃতিও যেন হতে চলেছে মলিন। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দল থেকে বাদও পড়েছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের বাইরে ছিলেন ওয়ানডে সিরিজের একটি ম্যাচে।

সে সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটেও মনোনিবেশ করেন। সেখানেও নিজের বাজে সময়টা কাটিয়ে উঠতে পারেননি লিটন কুমার দাস। বরং ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও নিজেকে কিছু সময়ের জন্যে গুটিয়ে নেন। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। একটুখানি বিশ্রাম যেন তার ছিল খুব প্রয়োজন।

সেই বিশ্রামের মধ্যেই স্বস্তি খুঁজেছেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু তাতে কি তার মস্তিষ্কে চলা অস্থিরতার হয়েছে হ্রাস? সম্ভবত নয়। বরং অস্তিরতার মাত্রা আগের থেকেও বেড়েছে কয়েকগুণ। এবার যে তার উপর আসা চাপ হয়েছে দ্বিগুণ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ওপেনিং পজিশনে এখনও প্রথম পছন্দ লিটন দাস। তবে বিকল্প খেলোয়াড়রাও যে কড়া নাড়ছেন দরজায়। এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজেই স্কোয়াডে রয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। দারুণ করেছেন এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে। তার ব্যাটে রান যেন ছিল ধ্রুব এক ঘটনা।

এছাড়াও দলের বাইরে ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার অপেক্ষায় সৌম্য সরকার। অতএব লিটন এখন নিশ্চিতভাবেই নন ‘অটোচয়েজ’। দারুণ এক প্রতিযোগিতার অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছে তাকে। কিন্তু ব্যাটে রান খুঁজে বেড়ানো লিটন মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত। সেটা বারে বারে ফুটে উঠছে তার শরীরি ভাষায়।

তিনি নিজে কি নিজের উপর ভরসা রাখেন কি-না সে প্রশ্ন চাইলেই তোলা যায়। ওই যে ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০-২৫ গড়ে রান করতে করতেই তিনি কখন যেন গড়পরতা থেকেও এক ধাপ নিচের ব্যাটারে পরিণত হয়ে গেলেন। নিজের সেই বক্তব্যেই হয়ত আনমনে দেয় পীড়া। তিনি কি এখনও বলবেন, তিনি আছেন দারুণ ‘চিল মোডে’? তবে বাংলাদেশের জন্যে নেই কোন স্বস্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link