ব্যাটিং তাণ্ডবের মৌসুমে কলকাতার কার্যকারী বোলিং

আহমেদাবাদে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ট্রাভিস হেডের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেওয়ার পর রবিবার রাতে চেন্নাইয়ে মিচেল স্টার্ক যেন তারই পুনারাবৃত্তি ঘটালেন। যেখানে তার শিকার তরুণ অভিষেক শর্মা। প্রায় এক দশক পর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলতে আসা স্টার্কের সুইং, সিম এবং স্ট্যাম্পে আঘাত হানার প্রবণতা আইপিএলে দীর্ঘদিন পরে হলেও জাতীয় দলের জার্সিতে তিনি তা বছরের পর বছর নিয়মিত করে আসছেন।

মৌসুমের শুরুতে ২৪.৭৫ কোটি টাকার উচ্চমূল্যের জন্য পরিহাসের পাত্রে রুপান্তরিত হলেও পরিচালকরা জানতেন তারা কোথায় টাকা ঢালছেন। এবং তিনি তার প্রতিদান শুধু মাঠে নয় মাঠের বাহিরেও রাখেন। ২০২৩ মৌসুমের পর উমেশ ও শার্দুলকে ছেড়ে দেওয়ার পর তারা একজন অভিজ্ঞ বোলার চেয়েছিলেন। যার কাছে বৈভব অরোরা এবং হার্ষিত রানার মতো অনভিজ্ঞ বোলাররা শিখবে। স্ট্রার্ক যেন সে কাজটাই করেছেন।

ব্যাটিং তাণ্ডবের এক মৌসুমে অনভিজ্ঞ দেশীয় পেসাররাই যেন ছিল কেকেআরের তুরুপের তাস। প্রথম ম্যাচেই হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে রানা যেন তারই প্রমাণ রাখেন। শেষ ওভারে ক্লাসেন-কামিন্স জুটির সামনে কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি তার স্লোয়ার যেভাবে কাজে লাগালেন হয়ত অনেক অভিজ্ঞ বোলারও তা পারতেন না।

তাই তো শ্রেয়াশ প্রায়শই তাকে শেষের দিকে বোলিংয়ে পাঠাতেন। আর মৌসুম শেষ করলেন ১৯ উইকেট নিয়ে। বৈভব আরোরার ছিল পাওয়ার প্লেতে অসাধারণ বল করার দক্ষতা। তার ১১ উইকেটের নয়টিই এসেছে প্রথম ৬ ওভারে।

গত মৌসুমের তুলনায় রাসেলকে দ্বিগুণ ব্যাবহার করেছে কেকেআর। মাঝের ওভার হোক বা শেষ দিকে, উইকেট নেওয়ার প্রবনতা যেন এইবার রাসেলের অনেক বেশি ছিল। ১৯ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে তার সেরা মৌসুম পার করেছেন তিনি।

শ্রেয়াস আইয়ারের সব থেকে ভরসার স্থান ছিল তার দুই জাদুকরী স্পিনার সুনিল নারাইন ও বরুণ চক্রবর্তী। মৌসুমে কোলকাতার সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার ছিলেন বরুণ। মাঝের ওভারগুলোতে যেন তার ঘূর্ণিতে নাকানিচুবানি খেয়েছে বিপক্ষ দলের ব্যাটাররা। তার ২১ উইকেটের ১৭টিই এসেছে ৭ থেকে ১৬ ওভারের মধ্যে।

এদিকে পাওয়ার প্লে হোক আর ডেথ ওভার, প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান যেন কোনোভাবেই চড়াও হতে পারেনি নারাইন এর উপর। মাত্র ৬.৬৯ ইকোনামি রেটে বল করে তিনি নিয়েছেন ১৭ উইকেট। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সমান দক্ষতার সাথে খেলে জিতেছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব।

এমন একটি মৌসুম যেখানে ব্যাটারা তাণ্ডব চালিয়েছেন বোলারদের উপর, ভেঙ্গেছেন একাধিক রেকর্ড। সেখানে কেকেআর বোলাররা গড়েছেন অপ্রতিরোধ্য এক বোলিং ইউনিট। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে সানরাইজার্সের বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপকে দুবার খোলস বন্দী করে ঘরে তুলে নিয়েছে তাদের তৃতীয় শিরোপা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link