উন্মুক্ত চাঁদের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে যিনি জিতিয়েছিলেন শিরোপা। ২০১২ সালের ফাইনালে এক শতক হাকিয়ে দলটির দাপটকে রেখেছিল সমুন্নত। তবে নানা জটিলতায় তিনি ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের কাছাকাছিও শেষ অবধি আসতে পারেননি। এরপরই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁদের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন তিনি, সেটাই ছিল প্রত্যাশিত।
উন্মুক্ত যে শুধু ইউএসএ দলের হয়ে খেলবেন তা নয়। সমর্থকরা তো ভেবেছিলেন তিনি হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্র্য ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পারফরমার। তবে সেটাও যে বাস্তব হিসেবে দিচ্ছে না ধরা। উন্মুক্ত যেন আমেরিকার দলেও উপেক্ষিত। এর পেছনে অবশ্য দায়ী তিনি নিজেই।
সাম্প্রতিক সময়ে পারফর্ম করতে হয়েছেন ব্যর্থ। প্রস্তুতি ম্যাচ ও জাতীয় পর্যায়ের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁর পারফরম্যান্স সন্তুষ্ট করতে পারেনি মার্কিন দলের নির্বাচকদের। যদিও একটি ম্যাচে তিনি সত্তুরোর্ধ রানের ইনিংস খেলেছেন। তবুও তা ছিল না যথেষ্ট। অথচ সবাই ভেবেই রেখেছিল উন্মুক্ত চাঁদ অনায়াসে সুযোগ পেয়ে যাবেন আমেরিকার জাতীয় দলে।
কেননা মাইনর লিগ ক্রিকেটে যে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। প্রায় ১৫০০ এর বেশি রান আছে তাঁর ব্যাটে। তাছাড়া ভারতীয় ক্রিকেট সংস্কৃতি থেকে বেড়ে ওঠা একজন আমেরিকার ক্রিকেট দলের জন্যে হতে পারত সম্পদ। সেদিক বিবেচনায় হয়ত তাঁর সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত ছিল অনেকেই। তবে কানাডার বিপক্ষে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজে তিনি নেই দলে।
উন্মুক্ত ছাড়াও এই দলে জায়গা হয়নি পাকিস্তানি বংশদ্ভুত সামি আসলামও পাননি সুযোগ। জনপ্রিয় এক ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইটের মতে সামি আসলাম ইনডোর ট্রায়ালে নির্বাচকদের সন্তুষ্ট করতে হয়েছেন ব্যর্থ। ঠিক সে কারণে তাকেও বাদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচকরা।
এছাড়া ইউএস দলের হয়ে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন শ্রীলঙ্কান শিহান জয়াসুরিয়া। মাইনার লিগ ক্রিকেটের অন্যতম কার্যকর ব্যাটার তিনি। তাঁর ব্যাটেও প্রায় ১৫০০ এর উপরে রান রয়েছে মাইনর লিগে। তিনিও শেষ অবধি সুযোগ পাননি কানাডার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সিরিজে। তিনি ব্যর্থ হয়েছে ‘ইয়ো ইয়ো’ নামক ফিটনেস টেস্টে।
উপমহাদেশ থেকে উঠে আসা এই খেলোয়াড়দের ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র খেলতে চলেছে। সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে মোট আটটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে চলেছে দলটি। যার পাঁচটি তারা খেলবে কানাডার বিপক্ষে, তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে।
তাইতো খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবার সুযোগ নেই দলটি নির্বাচকদের হাতে। একটা দল নির্ধারণ করে তাদেরকে নিয়েই পরিকল্পনা সাজাতে হবে চমক দেখানোর। তবে উন্মুক্ত, সামি ও শিহানদের দলের সাথে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে হয়ত ফলাফল খানিকটা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও চলে আসতে পারে। কিন্তু সে জন্যে অবশ্য বেশ সাহসী সিদ্ধান্তই নিতে হবে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড ও নির্বাচকদের।
তাদের উপর খানিকটা অন্ধ ভরসাই করতে হবে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে বোর্ড থেকে। এরপর না হয় শেষবারের মত বাজিয়ে দেখা যাবে তাদেরকে। যদিও তেমন ঝুকি ইউএস দল নিতে চাইবে কি-না সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।