টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে দিন কয়েক আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান, খেলতে পারেননি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ম্যাচটি। অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড় তো সেদিন অকপটে স্বীকার করেছিলেন দল তাঁকে মিস করবে। কেন অধিনায়কের এতটা ভরসা তাঁর উপর সেটাই প্রত্যাবর্তনে বুঝিয়ে দিলেন তিনি।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচে চার ওভার হাত ঘুরিয়ে মোটে ২২ রান দিয়েছেন এই তারকা। বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন দুই উইকেট – তাঁর পারফরম্যান্সে চেন্নাই সুপার কিংসের ভক্তরা তো বটেই, ক্রিকেটপ্রেমীরাও বাধ্য হয়েছে প্রশংসা করতে।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই এদিন আক্রমণে এসেছিলেন টাইগার পেসার। কোন উইকেট না পেলেও নতুন বলে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন তিনি, এক চার হজম করা সত্ত্বেও তাই ছয় রানের বেশি খরচ করতে হয়নি তাঁকে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আবারো বোলিংয়ে আসেন দ্য ফিজ, প্রথম বলে ব্যাটার চার মেরেছে ঠিকই কিন্তু এরপর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান তিনি – পরের পাঁচ বলে এক ওয়াইড সহ কেবল দুই রান দেন।
ডেথে বরাবরের মতই নিজের জাদু দেখিয়েছেন এই বাঁ-হাতি। আঠারোতম ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে একের পর এক স্লোয়ারে বিভ্রান্ত করেছিলেন তিনি। যদিও দুর্ভাগ্যের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে, মহেন্দ্র সিং ধোনির বিশ্বস্ত হাত বেঈমানী না করলে রাসেলের উইকেটও পেয়ে যেতেন। তাছাড়া নো বল, ওয়াইডের ফাঁদে না পড়লে সেই ওভারে রান বের করতেই কষ্ট হয়ে যেত কলকাতার।
কাটার মাস্টার অবশ্য আসল ভেলকি দেখান নিজের শেষ ওভারে, স্লোয়ারের মায়ায় ফেলে আউট করেন প্রতিপক্ষের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে। পরের দুই বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি মিচেল স্টার্ক, তৃতীয় বলে ঠিকঠাক ব্যাট লাগিয়েছেন বটে কিন্তু ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েছেন রাচিন রবীন্দ্রের হাতে। শেষপর্যন্ত এক রান দিয়েই এই ওভার শেষ করেন তিনি।
এই ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় আবারো সবার উপরে উঠে এলেন মুস্তাফিজ। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে মাত্র ১৪.২২ গড়ে নিয়েছেন নয় উইকেট – তাঁর বোলিং ইকনোমিও অধিকাংশ সেরা উইকেটশিকারীর চেয়ে কম। সবমিলিয়ে পরিপূর্ণ ছন্দেই দেখা যাচ্ছে তাঁকে।
পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই তিনি এভাবে পারফরম করবেন এমনটাই নিশ্চয়ই চাইবে চেন্নাই, বাংলাদেশও চাইবে এই পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস হয়ে উঠুক; লাল-সবুজের জার্সিতেও যেন জ্বলে উঠতে পারেন দ্য ফিজ!