বহুদিন বাদে মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে ধ্বনিত হয়েছে, ‘সাকিব, সাকিব’। কতদিন বাদে হয়েছে এমন জয়োধ্বনি তা হয়ত হিসেব কষে বের করা দুষ্কর। তবে সেই জয়োধ্বনির স্থায়িত্ব কাল ছিল খুবই অল্প। তবে সাকিব আল হাসানের কার্যকারিতা যে দীর্ঘস্থায়ী। ব্যাটে না পারলেও বল হাতে দলের জয়ে অবদান ঠিকই রাখেন তিনি।
বিতর্ক যেন সাকিবের পিছু ছাড়েনা। কখনোই তিনি আলোচনার বাইরে থাকেন না। এই জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগেই আবারও বিতর্কিত হয়েছিলেন তিনি। জনসম্মুখে জিম্বাবুয়ে সিরিজকে তাচ্ছিল্যই করেছেন। সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের পরিবর্তে খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের দুই ম্যাচ।
তবে সাকিব জাতীয় দলে ফিরতেই যেন সেসব বিতর্ক ধামাচাপা পড়ে গেল। তিনি নিজ হাতেই যেন দিয়েছেন মাটিচাপা। ওই বাইশ গজ সাকিবকে দিয়েছে অনেককিছুই। সাকিব আদায় করে নিয়েছেন বললেই বরং যথার্থ হয়। বল হাতে এদিন চার উইকেট নিয়েছেন। সেটা একদিক থেকে একটু হাইলাইট করবার মতই।
কেননা বহুদিন বাদে যে তিনি সাদা গোলক হাতে ৪টি নিতে সক্ষম হয়েছেন। শেষবার গেল বছরের মার্চে ৫টি উইকেট শিকার করেছিলেন সাকিব। এরপর সাদা বল হাতে বাজে সময় কাটিয়েছেন। অবশ্য সার্বিক পরিস্থিতিই যে ছিল ঠিক তার বিপরীতে।
এই তো সেদিন ডিপিএলে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে ৪ উইকেট নিলেন। যেন আভাস দিচ্ছেন একটু একটু করে তিনি ফিরছেন নিজের চেনা রুপে। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপটা সম্ভবত প্রত্যাশার চাইতেও গিয়েছে খারাপ। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তেমনটি ঘটুক, সেটা মোটেও চাচ্ছেন না যেন সাকিব।
সেই না চাওয়ার পথের যাত্রাটা তিনি শুরু করেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। শেষ ওভারে দলের জন্যে ১৪ রান ডিফেন্ড করেছেন। শুধু কি তাই? সেই ওভারে তিনবার উইকেট শিকারের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন। সফল হয়েছেন দুইবার। তানজিদ তামিম ক্যাচ ছেড়ে না দিলে অবশ্য আরও আগেই খেলা শেষ করতে পারতেন সাকিব।
তাছাড়া আবারও সেই মাইন্ড রিডার সাকিবের দেখাও পাওয়া গেছে ইনিংসের শেষ ওভারে। আগের বলে ছক্কা হাকিয়ে ব্লেসিং মুজারাবানির ছিল জয়ের তাড়া। তাইতো তিনি ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে চালিয়ে খেলতে চান। সাকিবের অফস্ট্যাম্পের বহু বাইরের বলটির নাগাল পাননি মুজারাবানি। তাতেই স্ট্যাম্পিং হতে হয় তাকে। তা আগে থেকে আন্দাজ করেছিলেন সাকিব।
রিচার্ড এনগারাভাকে বোল্ড করবার আগে সাকিব আরও দুইটি উইকেট শিকার করেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট ছিল সম্ভবত জনাথন ক্যাম্পবেলের উইকেট। কেননা দারুণ খেলতে থাকা এই তরুণ রীতিমত জয়ের পথেই রেখেছিলেন দলকে। সে ভাবনায় জল ঢেলেছেন সাকিব।
তাতেই অন্তত প্রমাণিত হয়, সাকিবের কার্যকারিতা একেবারেই হারিয়ে যায়নি। তিনি একেবারেই ফুরিয়ে যাননি। ধীরে ধীরে যেন সাকিব বলছেন, সবুর করো, রাজা ফিরছে তার সিংহাসনে।