সর্বজয়ী অ্যালেকজ্যান্ডার দ্য গ্রেট ভারত মহাসাগরে একটা ‘অনাবিষ্কৃত’ দ্বীপ খুঁজে পেয়েছিলেন। তার নাম তাপ্রোবেন। পরে নাম পাল্টে হয় সেয়লন, এরপর শ্রীলঙ্কা।
অ্যালেকজান্ডারকে এই অঞ্চলের মানুষ বলতো সিকান্দার। শ্রীলঙ্কান ভূখণ্ড আবিষ্কারের ২৩০০ বছর পর আরেকজন সিকান্দারকে দেখা যাচ্ছে সেই একই উপমহাদেশেই ছড়ি ঘোরাতে। কখনও সেটা আইপিএলে। কখনও বা বাংলাদেশের বিপক্ষে।
পাকিস্তানের শিয়ালকোট জন্ম নেওয়া সিকান্দার রাজা আসলে ঠিক একটি চরিত্র নয়। তিনি হাজারও চরিত্রের মিশেল। হতে চেয়েছিলেন পাইলট, স্বপ্ন দেখতেন ভূপাতিত করে দেবেন শত্রুর যুদ্ধ বিমান। তখন বযস মোটে ১১ বছর। ক্ষুদে সিকান্দারে পাইলট হয়ে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্নটা সত্যি হওয়ার পথেই ছিল।
নিজেকে গড়ে তুলে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী কলেজেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। সেখানে বছর তিনেক ছিলেনও তিনি। একজন যোদ্ধা হবার সব প্রশিক্ষণও রপ্ত করে ফেলেছিলেন প্রায়। তবে এরপর জানতে পারেন চোখে সমস্যার জন্য তিনি বিমান চালানোর যোগ্য নন।
বিধাতা এক হাতে নেয়, অন্য হাতে ফিরিয়েও দেয়। ভাঙা মন নিয়ে সিকান্দার মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হতে চলে গিয়েছিলেন স্কটল্যান্ডে। এরপর সেখান থেকে বাবা-মায়ের কাছে জিম্বাবুয়ের হারারেতে। ভাগ্যই সম্ভবত তাঁকে সেখানটায় টেনে নিয়ে যায়। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের সাথে ক্রমশ যুক্ত হতে শুরু করেন। আর এখন তো তিনি রীতিমত রাজার হালে করছেন বসবাস।
আর এখন সেই জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটই তাঁর ধ্যান জ্ঞান। এই সময়ে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সম্পদ তাঁদের এই অধিনায়ক। সিকান্দার উড়তে চেয়েছিলেন আকাশে। আজ তিনি উড়ে বেড়াচ্ছেন ক্রিকেট মাঠে। মিরপুরের গ্যালারিতে যখন তিনি একের পর এক চর ছক্কা উড়িয়ে মারছিলেন, তখন হয়তো শৈশবের আক্ষেপ কিছুটা হলেও কমিয়ে ফেলতে পেরেছেন তিনি।