সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) খোঁজখবর রাখলে একটা ব্যাপার বোধহয় পরিষ্কার ভাবেই বোঝা যায় টি-টোয়েন্টিতে একটা দলের টপ অর্ডার যত বেশি শক্তিশালী ম্যাচে তাঁরা ততটাই ফেভারিট। পাওয়ার প্লের সুবিধা আদায় করে দলকে শুরুতেই এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয় তখন, কিন্তু বাংলাদেশের হাঁটছে অন্য পথে, টি-টোয়েন্টি দলের টপ অর্ডার রান করাই ভুলে গিয়েছে।
আইপিএলের সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মেলানো যায় না সেটা সত্য। কিন্তু টাইগার ব্যাটাররা সাম্প্রতিক সময়ে যে ভয়াবহ ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়ে চলছেন সেটা রীতিমতো বিস্মিত করার মত। বর্তমানে এক, দুই আর তিন নম্বরে ব্যাট করেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত আর তানজিদ হাসান তামিম। এদের মধ্যে তানজিদ বাদে বাকিদের ফর্ম ভয়াবহ!
টি-টোয়েন্টিতে সৌম্য সর্বশেষ হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন প্রায় তিন বছর আগে, ইনিংসের হিসেবে সংখ্যাটা ২৫। এসময় তাঁর ব্যাটিং গড় নেমে এসেছে ১১.১২ তে, এবং স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০৫.৭০। তবু বিশ্বকাপের স্কোয়াডে অটো চয়েজ ছিলেন তিনি, হয়তো সেরা একাদশেও তাঁর জায়গা পাওয়া নিশ্চিত। কিন্তু এমন ফর্ম নিয়ে কিইবা করবেন এই বাঁ-হাতি?
সেই তুলনায় লিটনের অবস্থান অবশ্য একটু ভালোর দিকে, গত বছরের মার্চেই ফিফটি করেছিলেন। এরপর অবশ্য এগারো ইনিংস ধরে পঞ্চাশের গন্ডি পেরুতে পারেননি; ব্যাটিং গড় ১৯.২০ হলেও স্ট্রাইক রেট ১০০.৫২ – টি-টোয়েন্টিতে দেশের সেরা ওপেনার তিনি, অথচ এমন বিভীষিকাময় পরিসংখ্যান সঙ্গে গিয়ে বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছেন।
অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আরেক কাঠি সরেস, অর্ধশতকের প্রতীক্ষা এখনো দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ না করলেও রান করার দিক থেকে বড্ড পিছিয়ে আছেন। গত আট ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং গড় ১৫, আর স্ট্রাইক রেট ৯৫ এরও নিচে। যদিও তাঁর পুরো টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের স্ট্রাইক রেট হতাশ করার মতই, স্রেফ ১১০!
জুনিয়র তামিমকে নিয়ে মন্তব্য করার সময় আসেনি এখনো, মাত্রই বিশ ওভারের সংস্করণে পথ চলা শুরু হয়েছে তাঁর। কিন্তু তাঁকে কতটা ভরসা করা যাবে, যেখানে তিন অভিজ্ঞ ব্যাটারের ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি’ অবস্থা। এখন দেখার বিষয় বিশ্বকাপে কি অপেক্ষা করছে টিম টাইগার্সের জন্য, অবশ্য প্রত্যাশা এখন বোধহয় শূন্যেরও নিচে।