নায়ক হতে গিয়ে আমির আজ খলনায়ক

সুপার ওভারে গড়িয়েছে ম্যাচ। পাকিস্তান সম্ভবত তখনই হেরে গেছে। অনভিজ্ঞ এক যুক্তরাষ্ট্র দল যে গোটা সময়টা জুড়েই পাকিস্তানকে নাকানিচুবানি খাইয়েছে। তবুও তো জয়ের জন্যে চেষ্টা করতেই হয়। বাবর আজম দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের হাতে বলটা তুলে দিলেন।

কিন্তু মোহাম্মদ আমির যা করলেন সুপার ওভারের সেই ছয়টি বলে, তাতে অভিজ্ঞতার ছিটেফোঁটাও খুঁজে পাওয়া দায়। ছয় বলের ওভারের জন্যে আমির বল ছুড়েছেন ৯ বার! একজন অভিজ্ঞ বোলার সুপার ওভারের মত এক স্নায়ুচাপে ভরকে যাবেন- তা কি মেনে নেওয়া যায়?

হয়ত যায় না। সুপার ওভারের প্রথম বলেই থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে চার আদায় করে নেনে অ্যারন জোন্স। যুক্তরাষ্ট্রকে কানাডার বিপক্ষে অভাবনীয় জয়টা তো তিনিই এনে দিয়েছিলেন। তিনি এদিন আরও একটি জয়ের নায়ক হলেন। তবে তাতে অবশ্য মোহাম্মদ আমিরই সর্বাত্মক সহয়তা করেছেন তাকে।

মিডল স্ট্যাম্প থেকে লেগ স্ট্যাম্পের দিকে বেড়িয়ে যাবে বল। এমন চিন্তাভাবনা থেকে বল ছুড়ে সুপার ওভারে তিনখানা ওয়াইড বল করেছেন মোহাম্মদ আমির । জোন্সের সাথে সুপার ওভার খেলতে নেমেছিলেন হারমিত সিং। তিনি স্ট্রাইকিং প্রান্তে যাওয়া মাত্রই খেই হারিয়েছেন আমির।

তাতে করে ম্যাচ হারাবার মঞ্চটাও প্রস্তুত করে দিয়েছিলেন বা-হাতি এই পাকিস্তানি পেসার। শেষ অবধি হয়েছেও তাই। ইফতেখার আহমেদ ও শাদাব খানরা ১৯ রান নিতে পারেননি শেষতক।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টাই পেয়েছে মোনাঙ্ক প্যাটেলের দল। অবশ্য সুপার ওভারের ম্যাচ হারাবার আগে আমিরই কিন্তু পাকিস্তানকে ফিরিয়েছিলেন ম্যাচে।

১৬০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে থাকা যুক্তরাষ্ট্র বেশ অবলীলায় জয়ের দিকেই রেখেছিল চোখ। মোনাঙ্ক প্যাটেলের ব্যাটে চেপে জয়ের বন্দরের দিকে ছুটছিল আমেরিকান নেভি ফ্লিট।

কিন্তু ডেথ ওভারে বল করতে এসেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন আমির। ১৫ তম ওভারের শুরুতেই তুলে নেন অর্ধশত রান করা মোনাঙ্ক প্যাটেলের উইকেট। এরপর সেই ওভারে রান খরচা করেন মাত্র ৪। তাতেই চাপ ঘনিভূত হতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের উপর।

এরপর আবার ১৯ তম ওভারের বোলিংয়ে আসেন আমির। তখন যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের জন্য প্রয়োজন ২ ওভারে ২১ রান। সেই ওভারটিতে মাত্র ৬ রান দিয়ে পাকিস্তানের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন আমিরই। তবে সেই আশার ধানে মই দেন হারিস রউফ। তিনি শেষ ওভারে ১৪ রান হজম করলেই ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

দলকে ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার পরও, ম্যাচ হারের সমস্ত দায় এখন আমিরের কাঁধেই চেপে বসেছে। যদিও এদিন নির্ধারিত ২০ ওভারেরে মধ্যে ৪ ওভার করেছিলেন আমির। তাতে মাত্র ২৫ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট নিজের করে নিয়েছিলেন। এরপরও দিনশেষে তাকে ঐতিহাসিক এক লজ্জাজনক হারের দায় নিয়ে ছাড়তে হয়েছে মাঠ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link