শান্ত, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না

চেষ্টা করে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি কি জয়ের জন্যে চেষ্টা করে গেছেন? সম্ভবত না, তিনি একটা প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তার ব্যাটে আসা প্রতিটা রান আড়াল করতে চেয়েছে তার ভুল সিদ্ধান্ত, তার অধিনায়কত্বের ফাঁক-ফোঁকর, সর্বোপরি একটা বাজে দলকে।

১২৫ স্ট্রাইকরেটের একটা ইনিংস খেলে গেছেন শান্ত। ৩২ বলে ৪০ রান করেছেন। ৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন, সাথে ১টি চার। ভাল ইনিংস। অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লড়াকু ইনিংস বলে বাহবা দেওয়ার প্রয়াশ হয়ত করা যায়। কিন্তু করে কি হবে? এই ইনিংসের কার্যকারিতা কি? এই ইনিংস ঠিক কি দিয়েছে বাংলাদেশকে?

উত্তরটা হচ্ছে একটা সম্মানজনক পরাজয়। তবে ভারতের বিপক্ষে ৫০ রানের পরাজয় এখনও কি সম্মানজনক? সম্ভবত না। বহু চেষ্টা করেও নাজমুল হোসেন শান্ত তার ও টিম ম্যানেজমেন্টের উপর ওঠা প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে পারলেন না।

দিনের সম্ভবত প্রথম ভুল সিদ্ধান্ত, দলে একজন বোলারের বদলে একজন ব্যাটার খেলানো। সেখানে টিম ম্যানেজমেন্ট যতটা দায়ী ঠিক সমপরিমাণ দায়ী অধিনায়ক। কারণ একাদশ গঠনের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতাই থাকে অধিনায়কের। বাতাসের প্রভাব রয়েছে অ্যান্টিগায়, সুইং বোলার হয়ত দারুণ কিছু করে দেখাতে পারতেন।

তাছাড়া ভারত দলে ডানহাতি ব্যাটারদের অভাব নেই। টপ অর্ডারের রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি বা-হাতি পেসারের বিপক্ষে একটু হলেও সংগ্রাম করেন। সেই সুযোগগুলো কাজেই লাগাতে পারল না বাংলাদেশ। তারা ভেবে নিল উইকেটে গ্রিপ করবে। স্পিনার খেলাতে হবে। ব্যাটিং কলাপ্স করলে অতিরিক্ত ব্যাটার লাগবে। সবগুলো পরিকল্পনাই বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসেই ভেস্তে গেছে।

তাছাড়া অধিনায়ক শান্তর বেশ প্রশংসা হয়েছে এবারের বিশ্বকাপ যাত্রায়। সেই ধূর্ত অধিনায়ক যে এদিন কিংকর্তব্যবিমূঢ় বনে গেলেন। আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজানো তো দূরে থাক, ফিল্ডারকে সঠিক স্থানে রাখতে পারেননি। উলটো ছিলেন দ্বিধায়। ব্যাটার যেদিকেই মারছেন, পরবর্তী বলে সেদিকেই ফিল্ডার পাঠিয়েছেন।

তাছাড়া বোলারদেরও আজকের দিনে যথাযথ ব্যবহার করতে পেরেছেন কি-না সে প্রশ্নও তোলা যায়। অবশ্য বোলিংয়ে তার কাছে বিকল্পই তো ছিল অল্প। ব্যাটিং উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমান প্রায় নিষ্প্রভ। রিশাদ হোসেন, তানজিম সাকিবরা উইকেট নিলেও রান বিলিয়েছেন। মোদ্দা কথা দল হিসেবেই বাংলাদেশ বড্ড বেশি গড়পরতা।

সেই বিষয়টা সামনে এসেছে ব্যাটিংয়ের সময়। দলে দশজন ছিলেন যারা কি-না টুকটাক ব্যাটিং করতে জানেন। তবুও বাংলাদেশ দল সর্বসাকুল্যে স্কোরবোর্ডে জমা করেছে ১৪৬ রান। একজন অতিরিক্ত ব্যাটার যুক্ত করাটা ঠিক কি কাজে এলো? ব্যর্থ টপ অর্ডারে রান এসেছে বটে। কিন্তু সেগুলো মোটেও কার্যকর নয়। সেসব কিছুর উপর পর্দা দিতে চেয়েছিলেন শান্ত।

কেননা তার শরীরি ভাষায় কিংবা ব্যাটিং করবার ধরণে কখনোই মনে হয়নি তিনি ১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করছেন। বরং ক্ষুতকে আড়ল করতে চেয়েছেন। একটু বাড়িয়ে বললে নিজেকেও অক্ষত রাখতে চেয়েছেন। টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড কিংবা অধিনায়কত্বের পতন থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link