চলতি প্যারিস অলিম্পিকে তিনটি ব্রোঞ্জ পদক ইতোমধ্যে জিতেছে ভারত, কুস্তিগির ভিনেশ ফোগট ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার রৌপ্য পদকও নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কোটি ভারতীয় তখন আশা করেছিল ফাইনাল জিতে সোনাও পাবেন তিনি। কিন্তু ছোট্ট একটা ভুলে এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু, স্রেফ একশো গ্রাম ওজন বেশি থাকায় টুর্নামেন্ট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে তাঁকে!
এবং এর ফলে নিশ্চিত রৌপ্য পদক হাতছাড়া হলো এই ভারতীয় ক্রীড়াবিদের; সোনা জয়ের নেশায় মগ্ন পুরো দেশের জন্যই এটা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত। তিনি নিজেও ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন বটে।
মহিলাদের ৫০ কেজি বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন ভিনেশ; শুরুতেই স্বর্ণপদক বিজয়ী ইউই সুসাকিকে হারিয়েছিলেন তিনি। এরপর একে একে ওকসানা লিভাচ আর ইউসনেলিস গুজম্যানকে টপকে ফাইনালে পৌঁছে যান – কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল, ফাইনালের আগে মাপতে গিয়ে দেখা যায় তাঁর ওজন একশো গ্রাম বেশি, তাতেই বদলে যায় পুরো দৃশ্যপট।
মূলত ৫৩ কেজি বিভাগে ভারত থেকে অন্তিম পাঙ্গল কোয়ালিফাই করায় বাধ্য হয়ে এই ক্রীড়াবিদকে খেলতে হয়েছে ৫০ কেজি বিভাগে। তখন দ্রুত ওজন কমাতে হয়েছিল তাঁকে – যার ফলে ঝুঁকি রয়ে গিয়েছিল।
গত মঙ্গলবার দিন একটানা তিন ম্যাচ খেলে ক্লান্ত এই তারকা শরীরের ঘাটতি পূরণে ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় ও বিভিন্ন প্রোটিন জাতীয় খাবার খেয়েছেন। সেজন্য হয়তো ওজন নির্ধারিত সীমা থেকে বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি কম চেষ্টা করেননি, সারারাত না ঘুমিয়ে ব্যায়াম করেছেন। তবু শেষ রক্ষা হলো না।
একটা কৌশল অবশ্য অনুসরণ করতে পারতো ম্যানেজম্যান্ট, কোন খেলোয়াড় চোট পেলে তাঁকে পুনরায় ওজন মাপতে হয় না। বরং যে ফলাফল অর্জন করেছেন সেখানেই শেষ হয় তাঁর যাত্রা। অর্থাৎ ভিনেশকে আঘাতপ্রাপ্ত প্রমাণ করতে পারলে অন্তত রৌপ্য পদক রক্ষা করা যেত।
আজন্ম লড়াই করে যাওয়া এই কুস্তিগির প্রতিবাদ করেছিলেন রাস্তায় নেমেও, রেসলিং ফেডারেশনের সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সে সময় সফলও হয়েছেন তিনি, কিন্তু এবার আর ভাগ্য সহায় হলো না, মাত্র একশো গ্রামের ব্যবধানে আটকে গেল আরাধ্য পদক খানা।