চিরায়ত নিয়ম, অলিখিত নিয়ম – ব্যালন ডি’অরের মঞ্চে প্রায় সময়ই দেখা গিয়েছে ফরোয়ার্ডদের। কখনো মিডফিল্ডার বা ডিফেন্ডাররা জায়গা পেয়েছেন ব্যালনের সংক্ষিপ্ত তালিকায়। গোলরক্ষকদের জন্য সেটা অবশ্য অবাস্তব স্বপ্ন, কিন্তু সেটাকেই বাস্তবে নামিয়ে এনেছিলেন ম্যানুয়েল নয়্যার; মর্যাদার ব্যালন না পেলেও স্থান পেয়েছিলেন সেরা তিনে।
২০০৯ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তাঁর; অলিভার কানের উত্তরসূরি হিসেবে প্রত্যাশার চাপ সবসময়ই ছিল কাঁধে। তবে সেটা তাঁকে নুইয়ে দিতে পারেনি একটুও, কি অবিশ্বাস্য দৃঢ়তা নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন তিনটি কাঠ খন্ডে ঘেরা জায়গাটাতে।
যদিও জার্মানির জার্সিতে আর সেই দৃশ্য দেখা যাবে না, কেননা হুট করেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন এই তারকা। কি জানি, তাঁর মনে তখন কি ভাবনা ছিল তবে তিনি চাইলে আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত হয়তো খেলতে পারতেন। সবশেষ ইউরোতেও কি দারুণ পারফর্ম করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু এখন ইতি ঘটলো সবকিছুর।
বায়ার্ন মিউনিখের অধ্যায় অবশ্য চলমান থাকবে আরও কিছুকাল, তবে জাতীয় দলে এই গোলরক্ষককে দেখতে না পাওয়া সমর্থকদের জন্য বেদনার বিষয় বটে। ২০১৪ বিশ্বকাপে বার্লিনের দেয়াল হয়ে উঠেছিলেন তিনি, দুর্ধর্ষ সব সেভে দলকে এনে দিয়েছিলেন চতুর্থ বিশ্বকাপ শিরোপা। পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই জার্মান দুর্গ রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
সেই দায়িত্ব কতটা ভালভাবে পালন করেছেন – এই প্রশ্নের উত্তর দিবে পরিসংখ্যান, উত্তর দিবে বিশ্বের আনাচে-কানাচে সৃষ্টি হওয়া নয়্যারের সমর্থকেরা। ‘সুইপার কিপিং’কে নতুন করে চিনিয়েছেন তিনি, অসম সাহস নিয়ে নিজেই বারবার উঠে এসেছেন ডি বক্সের সামনে – জার্মানি হয়তো আরও অনেক ভাল গোলরক্ষক পাবে, কিন্তু তাঁর মত কাউকে পাওয়া সম্ভব নয়।
এই প্রজন্মের সেরা গোলরক্ষকের আলোচনা অবশ্যই উঠে আসবে জার্মান কিংবদন্তির নাম। ইকার ক্যাসিয়াস, পিটার চেক কিংবা বুফনদের ভিড়ে তাঁর নামটা বোধহয় সবচেয়ে জোরেই শোনা যাবে! আপাতত বায়ার্নের জার্সিতে তাঁকে বাকি দিনগুলো দেখার অপেক্ষায় থাকবে ফুটবলপ্রেমীরা, এরপর তো এত দিনের সোনালী উপন্যাসখানা শেষ হয়ে যাবে।