দৌড়ে প্রায় বোলিং ক্রিজের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন নাহিদ রানা, এ সময় হুট করে স্ট্রাইক থেকে সরে যান ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। এরপর কি হলো, সহজ ভঙ্গিতে পরের বলটা করলেন নাহিদ; শর্ট লেন্থে পিচ করিয়ে সোজাসুজি রিজওয়ানের হেলমেটে – উইকেট নয়, পাকিস্তান সিরিজে তাঁর বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন এটিই।
এই পেসার কয় উইকেট পেয়েছেন, কাকে কখন আউট করেছেন স্কোরকার্ড খাটলেই বেরিয়ে আসবে সব৷ বাবর আজমকে দুইবার আউট করা, কিংবা এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়ার হিসেব লেখা আছে নিশ্চয়ই।
কিন্তু যেটা লেখা নেই সেটা হলো ‘ভয়’ এর গল্প, তিনি ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন ব্যাটারদের মনে। ঘন্টায় ১৫০ কিমি ছুঁই ছুঁই গতিতে বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তাই তো অজান্তেই বলের লাইন থেকে শরীর সরিয়ে ফেলতেন ব্যাটাররা, আবার স্ট্যাম্পের বাইরের বলে ব্যাট নেয়ার সুযোগ খানিকটা পেলেও পা নড়ানোর সময় হয়ে উঠতো না।
তাঁর এক্সপ্রেস পেসের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন শান মাসুদরা। তাঁদের আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা সবকিছুতেই প্রচন্ড গতিতে আঘাত লেগেছিল। প্রথম ইনিংসে সায়িম আইয়ুবের আউটটা লক্ষ করলেই বোঝা যায়, পর পর দুই ওভারে নাহিদের পেস সামলাতে গিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে বেরুনোর জন্য চার্জ করে বসেন মিরাজকে – ফলাফল আউট।
রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের উঠোনে দাঁড়িয়ে এক্সপ্রেস বোলিংয়ের অনন্য প্রদর্শনী দেখিয়েছেন এই ডান-হাতি। তাঁর বোলিংয়ের ভয়ানক সুন্দর দিক তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন স্লিপে থাকা মিরাজ, সাদমানরা। ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়া পাক ব্যাটারদের দিকে বিদ্রূপের হাসিও ছুঁড়ে দিয়েছেন কেউ কেউ।
তবে সবদিন এমন হবে না, লাইন লেন্থ হারিয়ে নাহিদ হয়তো কোন ম্যাচে রান মেশিন হয়ে যাবেন প্রতিপক্ষের জন্যই। কিন্তু একটা জিনিস ধ্রুব থাকবে, তাঁর গতির ভয় ব্যাটারদের শঙ্কিত করবে, ভুল পথে হাঁটতে বাধ্য করবে। বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত এমন সম্পদ পায়নি, তাঁকে হাতছাড়া করা যাবে না; ইনজুরি যেন তাঁকে ছিনিয়ে নিতে না পারে খেয়াল রাখতে হবে।