বেশ ঘটা করেই ২০২২ বিশ্বকাপ খেলার আশ্বাস দিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ দলের আগামী বছর কাতার যাওয়ার আশা কাহজে কলমে শেষ। কিন্তু এখনও চীন যাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়নি। ২০২৩ এশিয়ান কাপে খেলার সম্ভাবনা কাগজে কলমে এখনও বেঁচে আছে বাংলাদেশের। কিন্তু নিজেদের হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে বাংলাদেশ।
২০১৯ সালের জুনে লাওসকে হারিয়ে বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং রাউন্ডের দ্বিতীয়পর্বে উঠেছিল বাংলাদেশ। এশিয়া থেকে কাতার, ওমান, আফগানিস্থান আর ভারতের সঙ্গী হয়েছিল বাংলাদেশ। পাঁচ দলের মধ্যে প্রথম দুই দল সুযোগ পাবে বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারের তৃতীয় পর্বে খালার সুযোগ।
আর পরের দুই দল পাবে এশিয়া কাপ কোয়ালিফারের তৃতীয় রাউন্ড খেলার সুযোগ। পাঁচ ম্যাচ শেষে এক পয়েন্ট নিয়ে একেবারে তলানিতে বাংলাদেশ। যদিও আফগানিস্থান আর ভারতের সাথে পয়েন্ট ব্যবধান মাত্র তিন। তাই বেঁচে আছে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ খেলার স্বপ্ন।
কিন্তু সেই স্বপ্নে বাঁধা হয়ে এসেছে ভেন্যু। গ্রুপের আর মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলা বাকি রয়েছে বাংলাদেশের। সেই তিনটি ম্যাচই আবার দেশের মাটিতে। আগামী ২৫ মার্চ আফগানিস্তান, ৭ জুন ভারত ও ১৫ জুন ওমানকে আতিথ্য দিবে বাংলাদেশ। দিবে বললে ভুল হবে, দেওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে কোনো দেশই বড় ট্রাভেল করতে রাজি না হওয়ায় ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ হারানোর শঙ্কায় বাংলাদেশ।
যদিও শুরু থেকেই হোম অ্যাডভাইন্টেজ নেওয়ার ব্যাপারে অনড় ছিল বাফুফে। কিন্তু ইদানীং সুর বদল হয়েছে এএফসি ও বাফুফে দুই পক্ষেরই। তাতে করে শেষ তিন ম্যাচের সবগুলোই সেন্ট্রালাইজ ভেন্যুতে খেলতে হতে পারে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে।
আপত্তি মূলত আফগানিস্থানের। সামনেই ২৫ মার্চ তাদের আসার কথা ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু আফগান খেলোয়াড়দের সকলে একজায়গায় নেই, বরং তাদের খেলোয়াড়েরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এশিয়ার বিভিন্ন লিগে। যে কারণে তাদের বাংলাদেশে এসে নিয়ম মেনে কোয়ারেন্টিনে থেকে খেলা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে আগে থেকেই এএফসির সাথে চিঠি চালাচালি করছিল আফগান বোর্ড। যদিও বাংলাদেশ রাজি করতে চাইছে তাদের রাজি করাতে।
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহামের কথায় বোঝা যাচ্ছে এই ম্যাচ বাংলাদেশে না হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, ‘এএফসি আমাদেরকে যে চিঠি দিয়েছে, সেখানে এটাও বলা হয়েছে আফগানিস্তান মার্চ উইন্ডোতে ম্যাচটি খেলতে চায় না। জুন উইন্ডোতে খেলাটা আয়োজন করার যে অপশন রয়েছে, আফগানিস্তান চাইছে সেভাবে। পরোক্ষভাবে আফগানিস্তানের ইচ্ছাটা জুনে খেলার, সেটা তারা এএফসিকে জানিয়েছে। আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করছি। তাদের পরের ফিডব্যাক পাওয়ার পর বলতে পারব মার্চে খেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিনা।’
মার্চে এই খেলা অনুষ্ঠিত না হলে খেলা পিছিয়ে পরবর্তী ইন্টারন্যাশনাল ব্রেক অর্থাৎ জুনে চলে যাবে। আর সেসময় ম্যাচ হলে নিউট্রাল ভেন্যুতেই হবে। বলা বাহুল্য ফিফা নিজে থেকেই যেসব দেশ ট্রাভেল করতে অনিচ্ছুক তাদের সবাইকে একত্র করে একটি নিউট্রাল ভেন্যুতে সব ম্যাচ আয়োজন করার চিন্তাভাবনা করছে।
যেমনটা উয়েফা করেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের সময়ে। বাংলাদেশ বাদে গ্রুপের বাকি চারটি দলই এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। বাংলাদেশই বেঁকে বসেছিল ‘হোম অ্যাডভাইন্টেজ’ নেওয়ার জন্য। হাজার হলেও নিজেদের মাটিতে নিজেদের দর্শকদের সামনে খেললে জয়ের সম্ভাবনা সামান্য হলেও বাড়ে বৈকি।
বিশ্বকাপে কোয়ালিফায়ারের পাঁচ ম্যাচে চার হার ও এক ড্রয়ে ‘ই’ গ্রুপের তলানিতে বাংলাদেশ। একমাত্র পয়েন্ট এসেছে ভারতের বিপক্ষে কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে।