আধুনিক ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের সংজ্ঞা গুড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বের যে কোনো বোলারের জন্যই তিনি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। অথচ, সেই ভিভকেই সরাসরি বোল্ড করেছিলেন এক ভারতীয় নারী। না, মাঠে নয়, ভিভ বোল্ড হয়েছিলেন হৃদয়ের বাইশ গজে।
পাত্রী হলেন নীনা গুপ্তে। সিনেমাপাড়ার খোঁজখবর যারা রাখেন, তাদের কাছে এই নামটা খুবই পরিচিত। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন তিনি হলেন ‘বাধাই হো’ খ্যাত সেই নারী যিনি নিজের বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলিউডে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সিনেমাজগতের সাথে অনেকবারই মিলেমিশে একাকার হয়েছে ক্রিকেট। বলিউডের নায়িকারা অনেক ক্রিকেটারের হৃদয়ের ঠাঁই পেয়েছেন, সংসারও করেছেন। তবে, এই দু’জনের মত প্রেমের এত আলোচনা ও বিতর্কের এমন তুমুল ঝড় আর কেউই তুলতে পারেননি।
তখন আশির দশক। সাল ১৯৮৭ কি ৮৮। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি ব্যাটসস্যান ভিভ রিচার্ডস বিবাহিত ছিলেন। কিন্তু স্ত্রী মিরিয়ামের সাথে আলাদা থাকতেন। তখন তাঁর জীবনে আসেন নীনা গুপ্তা। দু’জনের মনের আদান প্রদান হয়। অল্প সময়েই দু’জন এত কাছাকাছি চলে আসেন যে, নীনা সন্তানসম্ভবা হন।
সেই মেয়েটি হলেন মাসাবা। মাসাবা খুবই প্রতিভাবান একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। অনেকের মত তিনি নিজের জায়গায় সময়ের সেরা। তিনি ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির ভিভ রিচার্ডসন। মাসাবা ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক ও উদ্যোক্তা মধু ম্যান্টেনা ভার্মাকে বিয়ে করেন ২০১৫ সালে। ছাড়াছাড়ি হয় ২০১৮ সালে।
যদিও, ভিভ এই সন্তান চাননি। নীনা অনেকটা জোর করেই সন্তানকে নিজের শরীরে বড় হতে দেন। একটা সময় ভিভ আলাদা হয়ে যান নীনার কাছ থেকে। তাদের সম্পর্কে পূর্ণতা আসেনি। যদিও, দু’জনের সম্পর্ক কখনোই গোপন ছিল না। ক্রিকেটার কিংবা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবাই জানতো।
এমনকি প্রথম জীবনে মাসাবাকে সন্তানের স্বীকৃতি ভিভ রিচার্ডস তাকে দেননি। নীনারও অনেক কঠিন সময় কাটাতে হয়েছে। সিঙ্গেল মাদারকে সিনেমায় নিলে দর্শকদের মধ্যে বাজে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে ভেবেই পরিচালকরা তাকে খুব একটা অভিনয়ের অফার দিতেন না। মুম্বাই মিররে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নীনা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমার হয়তো বিয়ে না করে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্তটাই ভুল ছিল।
নীনার জীবন অবশ্য থেমে থাকেনি। যদিও, লম্বা সময় তিনি সঙ্গীহীন জীবন কাটিয়েছেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই দিল্লির চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও পিডব্লিউসি ইন্ডিয়ার অংশীদার বিবেক মেহরাকে যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ে করেন তিনি।
ভিভ পরে ফিরে গিয়েছিলেন স্ত্রী মিরিয়ামের কাছে। যদিও, সন্তান মাসাবাকে স্বীকার করেন তিনি। সন্তান এবং সন্তানের মায়ের সাথে তাঁর বোঝাপড়াটা এখন বেশ যুতসই।