ভিত্তি গড়ার শিরোপা

তখন এখনকার মত করোনাকাল ছিল না। দরজায় কড়া নাড়ছিল বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব, পহেলা বৈশাখ। পুরো বাংলাদেশ তাই নতুন বছরকে বরণ করার প্রস্তুতিপর্ব সেরে নিতে ব্যস্ত। আর মাত্র একদিন বাকি। তারপরই নতুন বছরের পরিক্রমা শুরু হবে বাঙালির নিজস্ব বর্ষপঞ্জিতে। আসবে পহেলা বৈশাখ, নতুন বছরের প্রথম দিন, জীর্ন পুরাতনকে ভাসিয়ে দিয়ে নতুনের জয়গান করার দিনও বটে। ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সকল আবালবৃদ্ধবনিতা এক অভিন্ন হৃদয়াবেগে মিলিত হবে এই উপলক্ষ্যে। আপন জাতিসত্তার আলোকে নিজেকে চিনে নেয়ার তাগিদে উদ্বুদ্ধ সকল বাঙালি সারা দেশে মেতে উঠবে নববর্ষের বৈশাখি উৎসবে।

মূলত পহেলা বৈশাখের মত এত বড় সার্বজনীন উৎসবের উপলক্ষ্য বাংলাদেশে আর নেই। তবে নতুনকে বরণ করার আগের দিন ঠিকই আরেকটি সার্বজনীন উৎসবের উপলক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশের জনসাধারণ। আর এ উপলক্ষ্যটি এনে দিয়েছিল এদেশের ক্রিকেটাররা। ১৪০৪ বঙ্গাব্দকে বরণ করার ঠিক আগের দিন বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জিতলে দেশের মানুষ পেয়ে যায় পহেলা বৈশাখের আগে আরেকটি আনন্দোৎসবের উপলক্ষ্য।

ম্যাচে তখন টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মত আইসিসি ট্রফি নিজেদের করে নিতে শেষ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন এক রান। এমতাবস্থায় হাতের নখ কামড়াতে কামড়াতে অসংখ্য বাঙালি কান পেতে আছে রেডিওতে। ইথারে ভেসে আসছে একটি নাম, হাসিবুল হোসেন শান্ত। সেই মুহূর্তে তিনিই ছিলেন কোটি কোটি বাংলাদেশির একমাত্র স্বপ্নসারথি। কারণ ম্যাচের শেষ বলে এক রান নেয়ার জন্য তিনিই যে ছিলেন স্ট্রাইকে। রেডিওর ধারাভাষ্যকাররা বার বার শান্তকে বলছিলেন নিজেকে শান্ত রেখে বলটি মোকাবেলা করার জন্য।

সে কথাটি নিশ্চয়ই শান্তর কর্ণকুহরে পৌঁছায়নি। কিন্তু শান্ত তাদের কথামত শান্ত থেকেই শেষ বলে বহুল কাঙ্ক্ষিত রানটি নিয়ে নেন। মার্টিন সুজির করা লেগ সাইডের বলটি শান্ত ব্যাটে খেলতে পারেননি। কিন্তু বল প্যাডে লেগে ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতে যাওয়ার আগেই খালেদ মাসুদের সাথে জায়গা পরিবর্তন করে নেন তিনি। সেই সাথে ম্যাচটি জিতে যায় বাংলাদেশ। কেনিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মত আইসিসি ট্রফির শিরোপা জিতে নেয় তাঁরা। আর এই ঐতিহাসিক জয়টি উদযাপন করতে সেদিন বাংলাদেশের রাস্তায় নেমে পড়ে সর্বস্তরের মানুষ। রঙে রঙে একে অপরের পাশাপাশি তাঁরা রাঙিয়ে দেয় সমস্ত রাস্তাঘাট। খুব সম্ভবত পুরো বাংলাদেশের সম্পূর্ণ চিত্র ছিল এটি। সমগ্র বাংলাদেশ সেদিন মেতেছিল বহুল আরাধ্য এই অর্জনের আনন্দোৎসবে। আর কেন-ই বা হবেনা এরকম উদযাপন? দেশের ক্রিকেটের প্রথম বড় কোন অর্জন বলে কথা!

এর আগে পাঁচবার আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় খেলতে যায় বাংলাদেশ। পাঁচবারের মধ্যে দু’বার সেমিফাইনালে খেলে তাঁরা। ১৯৮২ ও ১৯৯০ সালের আইসিসি ট্রফির সেমিফাইনালগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। দু’বারই জিম্বাবুয়ের কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হয় তাদেরকে।

আর সর্বশেষ আসর অর্থাৎ ১৯৯৪ আইসিসি ট্রফিতে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ে যায় বাংলাদেশ। এইসব পরিসংখ্যান নিয়েই অধিনায়ক আকরাম খানের নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় শুরু হয় বাংলাদেশের আরেকটি আইসিসি ট্রফি মিশন। আগেরবারের আইসিসি ট্রফিতে অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবে খেলেও সেমিফাইনালে উঠতে না পারায় বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব হারান ফারুক আহমেদ। শুধু দলের নেতৃত্বই নয়, সাথে সাথে ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফির জন্য ঘোষিত ১৩ জনের বাংলাদেশ দলেও ঠাঁই মেলেনি তাঁর।

নতুন অধিনায়ক আকরাম খানের নেতৃত্বে ‘৯৭ এর আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শুভসূচনা করে তাঁরা। তারপর একে একে ওয়েস্ট আফ্রিকা, ডেনমার্ক, আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় রাউন্ডে হংকং ও নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত আইসিসি ট্রফির সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে আকরামবাহিনী। দ্বিতীয় রাউন্ডের এ দু’টি জয়ের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের একটি ম্যাচ পরিত্যাক্ত হয় বৃষ্টির কারণে।

সেমিফাইনাল ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচে জয় কেবল তাদেরকে আইসিসি ট্রফির ফাইনালেই পৌঁছে দিবে না, সুযোগ করে দিবে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করারও। আর এ মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল স্কটল্যান্ড। এর আগে দু’বার আইসিসি ট্রফির সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও এবার আর সে ভুলটি করেনি বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডকে ৭২ রানে হারিয়ে পরবর্তী বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাঁরা সোজা পৌঁছে যায় ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফির ফাইনালে।

ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কেনিয়া যারা আবার বাংলাদেশের মতই পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে ফাইনালে ওঠে। তাই লড়াইটা যে হবে সমানে সমানে সেটা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। এবং হলোও তাই। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফির ফাইনালে মালয়েশিয়ার রাজধানী কোয়ালালামপুরের কিলাত কিলাব ক্লাব মাঠে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও কেনিয়া। টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লাল সবুজের অধিনায়ক আকরাম খান। অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তকে প্রথমেই সঠিক প্রমাণিত করেন পেসার সাইফুল ইসলাম। ইনিংসের পঞ্চম বলেই একটি তীক্ষ্ণ ইনসুইংগারে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আসিফ করিমের তিনটি স্ট্যাম্পই উপড়ে ফেলেন তিনি। কেনিয়ার স্কোরকার্ডে তখন কোন রান যোগ হয়নি।

তারপর নিজের কোটার চতুর্থ ওভারে এসে আরেকটি ইনসুইঙ্গিং ডেলিভারিতে কেনেডি ওটিয়ানোকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন সাইফুল। ৬.১ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট হারনোর পর কেনিয়ার তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে ১৯ তম ওভারে এসে। খালেদ মাহমুদ সুজন নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে সন্দ্বীপ কুমার গুপ্তকে আউট করলে কেনিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৫৮ রান। দলের প্রাথমিক এই ধাক্কাটা পরে সামাল দেন স্টিভ টিকোলো ও অধিনায়ক মরিস ওদুম্বে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ১৩৮ রান।

এ সময় তাঁরা দু’জনেই দায়িত্ব নিয়ে বড় শর্টস খেলে রানের গতি বাড়িয়ে নেন। পরবর্তীতে এ জুটিই কেনিয়াকে একটি ভালো সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। টিকোলো এবং ওদুম্বের এই বিশাল জুটিটি ভাঙ্গেন মোহাম্মদ রফিক। ব্যক্তিগত ৪৩ রানের সময় ডাউন দ্য উইকেটে এসে হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত মরিস ওদুম্বে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। তিনি আউট হবার আগেই অবশ্য তাঁর সতীর্থ স্টিভ টিকোলো সেঞ্চুরি করে ফেলেন।

সেঞ্চুরি করেও থেমে থাকেননি তিনি। সেঞ্চুরির পর দ্রুত রান তুলতে থাকেন টিকোলো। সাইফুল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেন ১৫২ বলে ১৪৭ রানের অনবদ্য একটি ইনিংস। সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে কেনিয়া পেয়ে যায় ২৪১ রানের লড়াকু একটি পুঁজি। বাংলাদেশের হয়ে মোহাম্মদ রফিক তিনটি, সাইফুল ইসলাম ও খালেদ মাহমুদ নেন দু’টি করে উইকেট।

২৪২ রানের লক্ষ্যে সেদিন বৃষ্টির কারণে আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডে’তে। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের সামনে নতুন লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৫ ওভারে ১৬৬ রান। পুরো টুর্নামেন্টের অধিকাংশ ম্যাচেই বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ছিল নিষ্প্রভ। কেনিয়ার বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ইনিংসের প্রথম বলেই ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে বসেন অফফর্মে থাকা ওপেনার নাইমুর রহমান দুর্জয়। দ্বিতীয় উইকেটে একটি ভালো জুটি গড়লেও তা বেশি বড় করতে পারেননি মোহাম্মদ রফিক ও মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। ৪১ বলে ৫০ রানের এ জুটিটি থামে ১৫ বলে ২৬ রানের একটি ক্যামিও ইনিংস খেলে রফিক বোল্ড হয়ে গেলে। এ উইকেটটি পান দুর্জয়ের উইকেট তুলে নেয়া বোলার মার্টিন সুজির ভাই ওটিয়ানো সুজি। এর কিছুক্ষণ পরই ২৬ রান করে রফিকের পথ ধরেন নান্নু।

প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৩ তে। এ অবস্থায় একটি ভালো জুটির সন্ধানে ছিলো বাংলাদেশ। আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও আকরাম খান সেসময় একটি জুটি গড়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ জুটিও খুব বেশি বড় হয়নি। আগের ম্যাচে ৫৭ রান করা বুলবুল এ ম্যাচে ৩৭ রান করে বোল্ড হয়ে যান আসিফ করিমের বলে। এরই সাথে ভেঙ্গে যায় আকরাম ও তাঁর ৫৩ রানের জুটিটি। আমিনুল ইসলাম আউট হবার পর ওদুম্বে ও আসিফ করিমের স্পিন ঘূর্ণিতে দ্রুত আকরাম খান, এনামুল হক মনি, সাইফুল ইসলাম ও খালেদ মাহমুদের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তখন ২৩.৩ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৫১ রান।

জিততে হলে শেষ ৯ বলে বাংলাদেশের দরকার ১৫ রান। ঠিক এসময় ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেন সেমিফাইনালের ম্যাচসেরা খালেদ মাসুদ পাইলট। ২৪ তম ওভারের শেষ ৩ বলে ৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ফলে ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে তাদের দরকার পড়ে ১১ রান, হাতে ছিল ২টি উইকেট। শেষ ওভারে মার্টিন সুজির করা প্রথম বলেই সরাসরি সাইটস্ক্রিন বরাবর ছক্কা হাকিয়ে ব্যাটে স্বস্তির চুমু এঁকে দেন পাইলট। দ্বিতীয় বল ডট, পরের বল ওয়াইড এবং পরের বলে সিঙ্গেল।

তারপর চতুর্থ বলটি উড়িয়ে খেলতে গিয়ে মিস করে বসেন হাসিবুল হোসেন শান্ত। এই সময়ে এরকম শট খেলার প্রচেষ্টা দেখে সীমানা দড়ির বাইরে থেকে কোচ গর্ডন গ্রিনিজ ও তৎকালিন বোর্ড সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী হাত দিয়ে শান্তকে ঠান্ডা মাথায় খেলার ইঙ্গিত করেন। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩ রান। পঞ্চম বলে পুল করলে ডিপ মিড উইকেট থেকে ফিল্ডার বল ফেরত পাঠানোর আগে দুটি রান পেয়ে যান শান্ত। একটা সময় মনে হচ্ছিলো যে এটা চার হয়ে যাবে কিন্তু আউটফিল্ড স্লো থাকায় তা আর হয়ে ওঠেনি।

ঐতিহাসিক জয় থেকে আর মাত্র এক রান দূরে বাংলাদেশ। স্ট্রাইকে হাসিবুল হোসেন শান্ত। অপর প্রান্ত থেকে খালেদ মাসুদ পাইলট এগিয়ে এসে শান্তকে কিছু পরামর্শ দিলেন। পরবর্তীতে জানা যায় তিনি সেসময় শান্তকে বলেছিলেন চার বা ছয় মারার চেষ্টা না করতে। বলেছিলেন যেভাবেই হোক স্ট্যাম্প বাঁচিয়ে খেলতে। বল ব্যাটে লাগুক বা প্যাডে, এক রান তুলে নিতে। তারপর মার্টিন সুজি দৌঁড়ে এসে শেষ বলটা করলেন।

লেগ স্ট্যাম্পের দিকে করা ফুলার লেন্থের ডেলিভারিটা সরাসরি আঘাত হানে শান্তর প্যাডে, বল চলে যায় ফাইন লেগে। এই ফাঁকে এক রান পূর্ণ করে দুই হাত উঁচু করে শান্ত এক দৌঁড়ে ছুটে যান ড্রেসিংরুমের দিকে। পথিমধ্যেই কোলাকুলি করেন বিপরীত দিক থেকে দৌঁড়ে আসা বিসিবি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরির সাথে। এমন একটি জয়ের পরও কোচ গর্ডন গ্রিনিজ শান্ত থাকলেন, দেখে মনে হলো চুপটি করে মনে মনে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন। অধিনায়ক আকরাম খান তখন পুরো দল নিয়ে দৌঁড়ে মাঠ প্রদক্ষিণে করছেন। মূলত সেখান থেকেই ক্রিকেটে আসল দৌঁড় শুরু আজকের বাংলাদেশের।

১৩ এপ্রিল, ১৯৯৭। সেদিন নতুন সূর্য উদিত হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। বলতে গেলে সেদিনই আকরাম, বুলবুল, শান্তদের হাতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বীজ রোপিত হয়। একসময় বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ফুটবলের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিল ক্রিকেট। কিন্তু আইসিসি ট্রফি জেতার পর এদেশে ক্রিকেট খুব তাড়াতাড়ি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। তখন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যাট-বল হাতে তুলে নেয় বহু কিশোর-তরুণ। সেই কিশোর-তরুণদের আইডল আকরাম, বুলবুল, নান্নুদের দেখানো পথে হেঁটে আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।

১৯৯৭ সালে তাঁরা যে পথ তৈরি করে দিয়েছিল সে পথে এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। বর্তমানে তাঁরা বুক চিতিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে বাংলাদেশকে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে দেবার জন্য। আর সে লড়াই করার সুযোগ বা পথটা তৈরি হয়েছিল সেদিন। তাই, শ্রদ্ধা ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশের হয়ে খেলা প্রতিটি ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফসহ দলটির পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করা সবার প্রতি। তাদের সেই কীর্তি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে চির অম্লান হয়ে থাকবে। নিশ্চয়ই তাদের সকলের নিকট বাংলাদেশ ক্রিকেট চিরকৃতজ্ঞ ও চিরঋনী হয়ে থাকবে আজীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link