আপনি বিরাট কোহলি, ক্রিকেট বিশ্বের কাছে আপনার প্রমাণের বাকি নেই আর কিছুই। তবু আপনার বিরতি নেয়ার সুযোগ নেই, একদণ্ড অবসর নেই। ম্যাচের পর ম্যাচ পারফর্ম করে যেতে হবে নিরলস, আর এর বিপরীত কিছু হলে উঠতে হবে নিন্দুকের কাঠগড়ায়। ঠিক সেটাই ঘটছে এখন বিরাট কোহলির সঙ্গে।
লন্ডনে কিছুদিন অবকাশ যাপনের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করেছেন এই ব্যাটার। তবে স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি, দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর সংগ্রহ মাত্র ২৩ রান – সত্যি বলতে, পুরো বছরটাই এমন রান খরার মধ্য দিয়ে কাটাচ্ছেন তিনি।
২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র একটা হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন এই ডান-হাতি। যদিও সবচেয়ে প্রয়োজনের মুহূর্তে সেই ইনিংস খেলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে। কিন্তু বছরের বাকি সময় জুড়ে তাঁর অফ ফর্ম দুশ্চিন্তা করার মতনই। গত বছর যেখানে তিনি ব্যাট করেছেন ৬৬.০৬ গড়ে, সেখানে চলতি বছর সংখ্যাটা স্রেফ ১৮.৭৬!
বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে কোহলির পারফরম্যান্সের গ্রাফ নিন্মমুখী। কেবল দুই এক বছরের হিসেবে নয়, করোনা মহামারির আগে এবং পরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৮৪ ম্যাচ খেলে সাত হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি, ব্যাটিং গড় প্রায় ৫৫ এবং সেঞ্চুরি ২৭টি। অথচ ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ ম্যাচে করেছেন ১৬৬৯ রান, সেটাও মাত্র ৩২.৭২ গড়ে। আর এ সময় সেঞ্চুরি করেছেন কেবল দুইবার – ব্যবধানটা চোখে পড়ার মতই।
পারফরম্যান্সের অধঃপতন এই তারকাকে হয়তো আর চিন্তিত করে না। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে সে ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি, আগের মত নিয়মিত খেলার চেয়ে বরং সুবিধামত ছুটি নিতেই আগ্রহ তাঁর।
তবু সাদা পোশাকে কোহলি এখনও নিবেদিত, টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেয়া অন্তত সেই বার্তা দেয়। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর চলতি বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর সম্ভবত এখন তাঁর ধ্যান জ্ঞান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ – অবসরের আগে আরাধ্য এ শিরোপা জিততে পারবেন তো তিনি?