যশস্বী জয়সওয়ালকে প্রজন্মের বিরলতম খোজ বললে কিন্তু মন্দ হয় না। সাবেক ভারতীয় পেসার সলিল আঙ্কোলা এই তারকাকে কেবল সেই তকমা দিয়েই থেমে থাকেননি। সাথে আরো যোগ করেছেন, ‘বহুত জিদ্দি’ মানে দৃঢ় মনোভাব। যদিও কানপুরে টেস্টে তার মারকুটে ব্যাট চালানোই সে কথার সাক্ষী দিয়ে দেয়।
সলিলের জয়সওয়ালের সাথে পরিচয় ২০২২ রঞ্জি ট্রফিতে। যদিও, এর আগেই ২০২০-এর অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপটা শেষ করেন ১৩৩.৩৩ গড়ে ৪০০ রান করে। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন সেবার।
দুবছর বাদে রঞ্জিতে সলিল আঙ্কোলা মুম্বাই দলের নির্বাচক ছিলেন। যশশ্বীর ভেতর সেই তেজ, মনোভাব আর উপস্থিত বুদ্ধি লক্ষ্য করেন তিনি। তবে, জয়সওয়ালকে দলে নিতে কিছু বিপত্তিও পার করতে হয়েছে। তাঁর মারকুটে ব্যাট চালানোর ব্যাপারটা যেন অনেকেই স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছিলেন না। প্রধানত, লাল বলের ফরম্যাট বিবেচনা করে।
এই জায়গাতেই সলীল ছিলেন ভিন্ন। তিনি বুঝতে পারেন আধুনিক টেস্ট গতিময়। সেখানে এমন তরুণই প্রয়োজন। এসময়ে দু’জন নির্বাচক তাকে সায় দেয়। জয়সওয়ালও তাঁদের নিরাশ করেননি।
সেবার রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ পর্বে এক ম্যাচও সুযোগ পান না যশস্বী। পরে তিন ম্যাচ খেলার সুবাদে ৮৩ গড়ে ৪৯৮ রান তোলেন তিনি। যেখানে দুই সেমিফাইনালে করেন শতক। সাথে একটা অর্ধশতক। মুম্বাইকে নিয়ে যান ফাইনালে।
প্রশ্ন থাকতে পারে, আনকোলা কোথায় পেলেন এই কাচা সোনা। আবার ফিরতে হলো ২০২০ সালে। ফেব্রুয়ারি মাস। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। চলছে ভারত পাকিস্তান ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে সেদিন তিনি ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
যশের শট খেলার রেঞ্জ কিংবা মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতায় মুগ্ধ আঙ্কোলা তিনি বলেন, ‘ও বহুত জিদ্দি। তার রান করার গতির সাথে আছে ব্যাট চালানোতে বৈচিত্র। কন্ডিশন আর সারফ্রেসের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিতে জানে। শটের রেঞ্জ অনেক। ও এমন খেলোয়াড় যারা কোনো প্রজন্মে একবারই আসে।’
শক্তি আর টাইমিংয়ের মেলবন্ধনই আঙ্কোলাকে যশস্বীতে বিভোর করে তোলে। তিনি বলেন, ‘ও যেকোনো পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে পারে। দরকারে সে ৩০০ বলে শতক গড়বে, ৫০ বলে দরকার হলে তাও করবে। প্রচণ্ড দৃঢ় মানসিকতার এমন মনোভাগ তাঁকে অল ফরম্যাট ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলেছে।’
জয়সওয়ালের আন্তর্জাতিক টেস্টে পদচারণা খুব অল্প দিনের। মাত্র ১১ টেস্টেই ৬৪-এরও বেশি গড়ে করেছেন ১২১৭ রান। এই জয়সওয়ালে ভর করে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেই পারে ভারত!