২০২৪ সালে মুশফিকুর রহিমের টেস্ট ব্যাটিং গড় ৩৩.১। খারাপ মনে হচ্ছে না নিশ্চয়ই। কিন্তু সংখ্যার খেলার মজাটা এখানেই। শুভঙ্করের ফাঁকি কাজে লাগিয়ে মুশফিক থেকে যাচ্ছেন সমালোচনার বাইরে।
এই বছর ছয়টি টেস্ট খেলেছেন মুশফিক। এর মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ইনিংসেই ১৯১ রান করেছিলেন মুশফিক। এছাড়া বাকি খেলা ১০ ইনিংসে তার সংগ্রহ মোটে ১৪০ রান। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম ইনিংসটি বাদ দিলে বর্ষীয়ান এই ব্যাটারের সর্বোচ্চ রান সংখ্যা ৩৭। শেষ দশ ইনিংসের হিসেবে তার ব্যাটিং গড় দাঁড়ায় মাত্র ১৫.৫৬।
যার কৃতিত্ব আবার পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা অপরাজিত ২২ রানের একটি ইনিংসের। নতুবা আরও খানিকটা কমে যেত গড়। এই হচ্ছে মুশফিকুর রহিমের সাম্প্রতিক অবস্থান। ব্যর্থতার ভীষণ দুর্দিনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
মিস্টার ডিপেন্ডেবল বলা হয় তাকে। দীর্ঘ ১৯ বছরের ক্যারিয়ার তার। সুদীর্ঘ এই পথচলার অনেকবারই তো খারাপ সময়ের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। কিন্তু এতটাও বাজে সময় হয়ত তার ক্যারিয়ারে খুব কমই এসেছে। ব্যাট হাতে তিনি যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। কোনভাবেই যেন সমীকরণ মেলাতে পারছেন না।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠেও বেজায় ধুঁকেছেন এই ব্যাটার। চার ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এক ইনিংসে আউট হয়েছে শূন্য রানে। মোটে ৪৬ রান নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে।
মুশফিকুর রহিমের নিবেদনের কোন কমতি নেই। এই বয়সে এসেও অনুশীলনে অনীহা নেই। সবার আগে অনুশীলন করতে আসেন তিনি। মাঠ ত্যাগ করেন সবার পরে। তবুও কেন, এমন হচ্ছে? সহজ কারণ, তার এখনও বেশ কিছু টেকনিক্যাল দুর্বলতা রয়েছে। ফ্লিক করতে গিয়ে এখনও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। অফ স্ট্যাম্প থেকে ভেতরে ঢোকা পেসারের বল খেলতে খাবি খান তিনি।
এছাড়াও সুইপ শট তার সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। কিন্তু সেটাই আবার কাল হয়ে দাঁড়ায় অধিকাংশ সময়ে। ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে এমন সব অপারগতা মেনে নেওয়া কষ্টকর বটে। ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নে সমালোচনার অগ্নিকুণ্ডে ফেলতে নিশ্চয়ই কেউ চায় না। কিন্তু দ্বিতীয় কোন পথও যে খোলা নেই।
আর যেক’টা দিন তিনি রয়েছেন, নিজের দুর্বলতাগুলো ঢেকে রেখেই খেলতে চাইবেন নিশ্চয়ই। এখন যে টেকনিক্যাল দুর্বলতা দূর করবার পর্যাপ্ত সময়ও আর বাকি নেই। নাকি খামখেয়ালি সব শট খেলেই কাটিয়ে দেবেন?