‘ চালে তো চান্দ তাক, নাহি তো শাম তাক’ – বিখ্যাত একটি হিন্দি প্রবাদ। এটা দিয়েই যেন সাঞ্জু স্যামসনের ২০২৪ সালের পারফরম্যান্সটা ব্যাখা করে ফেলা যায়। সোজা বাংলায় নিন্দুকেরা বলছে, তিনি যেন গুলিস্তানে বিক্রি হওয়া চাইনিজ পণ্য। টিকলে আজীবন না হলে দুই মিনিটের ও ভরসা নেই।
ব্যাক টু ব্যাক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি হাঁকানো উড়ন্ত সাঞ্জু যেন ধুপ করেই মাটিতে ছিটকে পড়লেন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি। বাকি দুই ম্যাচে রানের খাতাই খোলা হয়নি তাঁর। পূর্ণ সদস্যের দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে পাঁচটি ডাক মারার বিরল রেকর্ড গড়লেন তিনি।
২০২৪ সালে সাঞ্জু টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১১ টি। ৩২.৭০ গড়ে রান ৩২৭ ,স্ট্রাইক রেটটাও বেশ চোখ ধাঁধানো ১৭৫.৮০। দুইটা শতকের পাশাপাশি আছে একটি অর্ধ-শতকও।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে আরে এতো সুপারম্যান সাঞ্জু! তাহলে কেন তাকে নিয়ে অযথা এত সমালোচনা হচ্ছে দর্শকমহলে? এখানেই আসে সংখ্যার মারপ্যাঁচ। দাঁড়ান আরেকটু খোলাসা করি, এই ১১ ইনিংসেই আছে পাঁচটি ডাক, মানে একদম ‘গোল্লা’।
সাঞ্জু দুর্দান্ত প্রতিভাবান, আগ্রাসী ব্যাটার, এটা যেমন সত্য তেমনি তিনি যে, একদমই অধারাবাহিক সেটাও মোটা দাগে দিনের আলোর মতই স্পষ্ট। একই কথা বলেছেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক অনিল কুম্বলে। তিনি বলেন, ‘সাঞ্জুর মধ্যে শুধু ধারাবাহিকতা টাই নেই, আমি নিশ্চিত ভারতের নির্বাচকরাও এই ব্যাপারে চোখ রাখছেন।’
সাউথ আফ্রিকা সিরিজে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরির পর নিজের অবস্থা পরিস্কার করেছিলেন সাঞ্জু। তিনি বলেন, ‘ব্যর্থতা আমার জীবন ও ক্যারিয়ারের একটা অংশ। সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে নিজের আত্নবিশ্বাসে অনেক সময় ঘাটতি দেখা যায়। নিজের ইম্প্রুভমেন্টে ফোকাস রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি ব্যর্থ হলেই নিজেকে প্রশ্ন করতে জানি, নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা নিয়ে নিজেকেই কাঠগড়ায় তুলি।’
আপাতত অবশ্য ভারতের চোখের মণিই হয়ে থাকবেন সাঞ্জু। তবে, প্রার্থনা করতে হবে ব্যর্থতার মিছিল যেন দীর্ঘায়িত না হয়।