২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল মনে আছে নিশ্চয়ই। এক ট্রাভিস হেডের কাছে শিরোপা হেরেছিল ভারত। সেই ট্রাভিস হেডই ভারতের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০০৮ সালের পর পার্থের টেস্ট জয়ের দ্বারপ্রান্তে ভারত। কিন্তু তাদের জয়কে স্রেফ দীর্ঘায়িতই করেছেন ট্রাভিস হেড।
অফ স্ট্যাম্পের খানিক বাইরের লাইনে দূর্বলতা রয়েছে হেডের। সেটা বেশ ভাল করেই জানা ভারতের। মূলত সীমিত ফুটওয়ার্কের কারণে ওই চ্যানেলের বল খেলতে গিয়ে বিপাকে পড়েন হেড। সেই চ্যানেলে চতুর্থ দিনের সকাল থেকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিলেন ভারতীয় পেসাররা।
কিন্তু প্রাথমিক সেই চ্যালেঞ্জগুলো অনেকটা ভাগ্যের জোরেই উৎরে গিয়েছিলেন হেড। মধ্যাহ্ন বিরতির পরও বেশ খানিকক্ষণ ব্যাটিং করেছেন তিনি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরির দিকে। দিনের শুরুতে উসমান খাজা ও স্টিভেন স্মিথকে হারিয়েছেন হেড।
এরপর মিচেল মার্শকে সঙ্গী করে পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর কাজ শুরু করেন। কিন্তু থিতু হতে থাকা হেড, বড্ড বেশি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন ভারতের জন্যে। যদিও জয় পাওয়া ছিল অজিদের জন্যে দুষ্কর। তবুও একটা শঙ্কার মেঘ ঘনিভূত হতে শুরু করেছিল টিম ইন্ডিয়ার আকাশে।
সেই মেঘকে দূরে সরিয়ে উজ্জ্বল সূর্যের আলো হয়ে হাজির হয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। প্রায় আট ওভার পরে বোলিং প্রান্তে এসেই বুমরাহ করেন বাজিমাত। সেই কাল্পনিক পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্ট্যাম্পের চ্যানেল ধরে ছুড়ে দিলেন ব্যাক অব লেন্থের বল। তাতেই আউট সাইড এডজ হয়ে ৮৯ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ট্রাভিস হেড।
শুধু যে হেডের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়েছেন বুমরাহ, তা কিন্তু নয়। তিনি হেডকে খানিকটা বাধ্য করেছেন ভুল করতে। শর্ট বলের ভয় দেখিয়ে, তিনি ক্রিজের ভেতর দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন হেডকে। তাতে করে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের সেই লাইনে পা নিতে দেরি হয়ে যায়। এরপর যা হওয়ার হয়েছে তাই। একজন সেট ব্যাটারকে যথাযথ পরিকল্পনার ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন বুমরাহ। এখানেই বুমরাহের মাহাত্ম ফুটে ওঠে বর্ণিল চিত্রকর্ম হয়ে।
হেডের বিদায় পুরো ভারত শিবিরে একটা স্বস্তির হিমেল হাওয়া বইয়ে দিয়েছে। জয়ের সুঘ্রাণ তীব্র হয়েছে। এদফা মাথাব্যথার একটা কার্যকর ঔষধ পাওয়া গেছে। আরও এক হতাশার কারণে পরিণত হতে পারেননি হেড।