অবিশ্বাস্য এক কাণ্ড করে ফেলেছেন জায়ডন সিলস। একটা ত্রাসের রাজত্ব তিনি সৃষ্টি করেছেন স্যাবাইনা পার্কে। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মনে ভয়ের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন যে, তারা রান নিতেই যেন ভুলে গিয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই স্বর্ণালী অতীতের একটা ঝলকই যেন দেখালেন সিলস।
এই শতাব্দীতে এমন রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেউ গড়তে পারেননি। প্রায় ১৬ ওভার বোলিং করেছেন সিলস, নির্দিষ্ট করে বললে ১৫.৫ ওভার বল করেছেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ে তার খরচ মোটে ৫ রান। অভাবনীয়, অবিশ্বাস্য! শেষ এমনটি ঘটেছিল ১৯৬৪ সালে।
৯৫টি বল ছুড়েছেন সিলস। এই ৯৫টি বলে একটিও বাউন্ডারি হজম করতে হয়নি তাকে। বাংলাদেশের ব্যাটারদের পপিং ক্রিজের মধ্যে রীতিমত বন্দী করে রেখেছিলেন। একের পর এক আগুনের গোলা ছুড়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বাংলাদেশি ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তোলা শাস্তি দিয়ে গেছেন।
বদলে চারটি উইকেটও পকেটে ঢুকেছে তার। লিটন দাসের মত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকেও শিকার করেছেন। তার এমন বিরল রেকর্ডকে পূর্ণতা দিতে তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানাকে সাজঘরের পথ ধরতে বাধ্য করেছেন।
১৫ বা তার বেশি ওভার বল করে ৫ রান দেওয়ার রেকর্ড পুরো ক্রিকেট ইতিহাসে ঘটেছে দুইবার। এর মধ্যে উইকেট প্রাপ্তির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন জায়ডন সিলস। ভারতের বা-হাতি স্পিনার রমেশচন্দ্র নাদকারনি ১৯৬৪ সালে ৩২ ওভার বল করেছিলেন। শূন্য উইকেটের বিনিময়ে ৫ রান খরচা করেছিলেন তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। চেন্নাইয়ের স্পিনিং উইকেটে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।
দীর্ঘ বহুদিন ধরে তার সেই রেকর্ডই ছিল এক ও অনন্য। কিন্তু এক ইনিংসের বোলিং গড়ে এগিয়ে গেলেন জেডন সিলস। ঠিক কতটুকু ক্ষুরধার বোলিং করেছেন সিলস, তা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না। টেস্ট ক্রিকেটের বনেদী পোশাকে, এক সময় ক্যারিবিয়ান পেসাররা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতেন। সেই স্মৃতিই যেন আরও একটিবার মনে করিয়ে দিলেন সিলস।
জ্যামাইকার মাটিতে গড়া এই রেকর্ড নিশ্চয়ই দীর্ঘদিন ধরে অক্ষত থাকতে চলেছে। এমন রেকর্ড তো আর বলে-কয়ে গড়া যায় না, আবার ভাঙাও যায় না। ক্রিকেট ইতিহাসে তাই অমর হয়েই থাকবেন জায়ডন সিলস।