পিঞ্চ হিটার একাদশ

ক্রিকেট বিশ্বে অনেক পিঞ্চ হিটার অবশ্য নিজেদের দারুণ ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে ব্যাট হাতে দলকে জয় এনে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরবর্তী সময়ে গ্রেট বনে গেছেন। সব ধরণের পিঞ্চ হিটারদের মিলিয়ে একটা ব্যালান্সড একাদশ গঠন করেছে খেলা ৭১।

পিঞ্চ হিটার শব্দটি মূলত এসেছে বেসবল থেকে। তবে ক্রিকেটে এখন পিঞ্চ হিটার বেশ পরিচিত বিষয়। মূলত লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের উপরে পাঠানো হয় দ্রুত কিছু রান করে দেয়ার জন্য। এই ধরনের ব্যাটসম্যানরা সাধারণত শট খেলতে পছন্দ করেন। এছাড়া তাঁদের উইকেট পড়ে গেলেও দলের উপর খুব বেশি চাপ পড়ে না। ফলে কখনো কখনো ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে পিঞ্চ হিটারদের ব্যবহার করা হয়।

ক্রিকেট বিশ্বে অনেক পিঞ্চ হিটার অবশ্য নিজেদের দারুণ ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে ব্যাট হাতে দলকে জয় এনে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরবর্তী সময়ে গ্রেট বনে গেছেন। সব ধরণের পিঞ্চ হিটারদের মিলিয়ে একটা ব্যালান্সড একাদশ গঠন করেছে খেলা ৭১।

  • সনাথ জয়াসুরিয়া (শ্রীলঙ্কা)

সনাথ জয়াসুরিয়া ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। ওপেনার হিসেবে তিনি কতটা সফল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে তিনি শ্রীলঙ্কা দলে এসেছিলেন মূলত অফ স্পিনার হিসেবে। যিনি লোয়ার অর্ডারে কিছু রান এনে দিতে পারেন। তবে কোন এক ম্যাচে পিঞ্চ হিটার হিসেবে উপরে নামানো হয় তাঁকে।

সেখানে নিজেকে দারুণ ভাবে প্রমাণ করেছিলেন জয়াসুরিয়া। শ্রীলঙ্কার এই ওপেনার নব্বই এর দশকের বোলারদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিলেন। ৪৪৫ ওয়ানডে ম্যাচে এই ব্যাটসম্যানের ঝুলিতে আছে ১৩৪৩০ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ৯১.২০।

  • মার্ক গ্রেটব্যাচ (নিউজিল্যান্ড)

ক্রিকেটে মার্ক গ্রেটব্যাচই প্রথম পিঞ্চ হিটার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন। নিউজিল্যান্ড ১৯৯২ বিশ্বকাপে প্রথম এই পরিকল্পনা করে। গ্রেটব্যাচ একটি নক আউট ম্যাচে দলকে জয়ও এনে দিয়েছিলেন। এরপর অনেক ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের হয়ে ওপেন করেছেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৮.২০ গড়ে এই ব্যাটসম্যানের ঝুলিতে আছে ২২০৬ রান।

  • শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান): সহ-অধিনায়ক

পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন আফ্রিদি। তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এর জন্যও বহুল পরিচিত তিনি। প্রথম বল থেকেই বোলারদের ওপর চড়াও হন তিনি। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললেও প্রায়ই তাঁকে উপরে পাঠানো হত দ্রুত রান তোলার জন্য। তবে পরবর্তীকালে নিজেকে পরিপূর্ণ ব্যাটার হিসেবেই প্রমাণ করেছেন তিনি। ৩৯৮ ওয়ানডে ম্যাচে ২৩.৫৭ গড়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৮০৬৪ রান।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত): অধিনায়ক

এই তালিকায় ধোনির নাম দেখে হয়তো অবাক হবেন অনেকেই। তবে ভারত ধোনিকে দলে এনেছিল একজন কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে যে শেষ দিকে দ্রুত কিছু রান এনে দিতে পারে। তবে একবার তাঁকে তিন নম্বরে পাঠানো হলে সেখানে তিনি ১৮৩ রানের এক ইনিংস খেলেন।

এরপর থেকে আর কখনো পিছন ফিরে তাকাননি ভারতের এই কিংবদন্তি। ভারতের হয়ে ৩৫০ ওয়ানডে ম্যাচে ৫০.৫৭ গড়ে এই ব্যাটসম্যানের ঝুলিতে আছে ১০৭৭৩ রান। এই একাদশের অধিনায়ক হিসেবেও নিশ্চয়ই তিনিই থাকবেন।

  • নিকি বোয়ে (দক্ষিণ আফ্রিকা)

মূলত বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে এসেছিলেন নিকি বোয়ে। ১১৫ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ৯৬ উইকেট। শুরুতে তিনি ব্যাট করতেন ৯ নম্বরে। তবে ৩ নম্বরে মোট ১৮ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। সেখানে প্রায় ১০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন তিনি। ২৮ টি ম্যাচ ৯ নম্বরে ব্যাট করার পরেও ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর ঝুলিতে আছে ১৪১৪ রান। ২৬.৬৭ গড়ে এই রান করেছিলেন তিনি।

  • ইয়ান হার্ভি (অস্ট্রেলিয়া)

মূলত অলরাউন্ডার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলে খেললেও প্রায়ই পিঞ্চ হিটার হিসেবে তাঁকে উপরের দিকে পাঠানো হতো। ব্যাট বল দুই ডিপার্টমেন্টেই বেশ সফল এই অলরাউন্ডার। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রায় ৯০ স্ট্রাইকরেটে তাঁর ঝুলিতে আছে ৭১৫ রান। এছাড়া বল হাতেও ৭৩ ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ৮৫ উইকেট।

  • ক্রিস মরিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ক্রিস মরিস টেকনিকালি খুব শক্তিশালী ব্যাটসম্যান না হলেও নিয়মিতই বড় শট খেলতে পারেন। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা তাঁর ব্যাটিং টা বেশ ভালো ভাবেই ব্যবহার করে। দেশটির এই বোলিং অলরাউন্ডার এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৪২ টি ওয়ানডে ম্যাচ। সেখানে ৪৮ উইকেটের পাশাপাশি তাঁর ঝুলিতে আছে ৪৬৭ রান।

  • অজিত আগারকার (ভারত)

মূল পরিচয়টা তাঁর পেস বোলারের। তবে, ব্যাট হাতেও বেশ ভাল দক্ষ ছিলেন তিনি। সব ফরম্যাট মিলিয়ে তিনি হাজার দুয়েকের মত রান করেন তিনি। এর মধ্যে টেস্টে একটা সেঞ্চুরি ও ওয়ানডেতে তিনটা হাফ সেঞ্চুরি আছে তাঁর। এর মধ্যে ওয়ানডেতে বেশ কয়েকবার ভারত তাঁকে ব্যবহার করেছে পিঞ্চ হিটার হিসেবে।

  • মোহাম্মদ রফিক (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনারদের একজন মোহাম্মদ রফিক। সবমিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ২২৬ টি আন্তর্জাতিক উইকেট। তবে পিঞ্চ হিটার হিসেবেও তাঁকে ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ। কয়েকবার বাংলাদেশের হয়ে ওপেনও করেছেন তিনি। এছাড়া আরো নানা পজিশনেই খেলেছিলেন এই স্পিনার। ওপেনিংয়ে নেমে একাধিক হাফ সেঞ্চুরি আছে তাঁর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবমিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ২ হাজারেরও বেশি রান।

  • মিশেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া)

এই মুহূর্তে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা পেস বোলারদের একজন মিশেল স্টার্ক। তবে ব্যাট হাতেও যথেষ কার্যকর তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেন নিয়মিতই। এছাড়া কয়েকবার তাঁকে পিঞ্চ হিটার হিসেবে উপরের দিকেও ব্যবহার করেছে অস্ট্রেলিয়া।

  • সুনীল নারাইন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

বল হাতে সুনীল নারাইনের সাফল্য গাঁথা কে না জানে। তবে পিঞ্চ হিটার হিসেবেও একই রকম কার্যকর তিনি। বিশেষ করে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে প্রায়ই তাকে দ্রুত রান তোলার জন্য টপ অর্ডারে ব্যাট করতে দেখা যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়েও ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩৬৩ রান করেছেন তিনি।

  • দ্বাদশ ব্যক্তি: ইরফান পাঠান (ভারত)

ফাস্ট বোলার হিসেবে ভারতীয় দলে আসা ইরফান পাঠানকে এক সময় অলরাউন্ডারই ভাবতে শুরু করেছিল ভারত। বেশ কয়েকবার তাঁকে আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে, সেটা করতে গিয়ে বড় বোলার হয়ে ওঠা হয়নি তাঁর। প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক রানের মালিক ইরফান পাঠান টেস্টে একটা সেঞ্চুরি ও ওয়ানডেতে পাঁচটা হাফ সেঞ্চুরি করেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...