অপলক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে থাকতে মন চায় নিশ্চয়ই। বাংলাদেশের একজন পেসার ক্রমাগত গতির ঝড় তুলছেন। এই দৃশ্য দেখার জন্যে তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করেছে সবাই। ব্যাটারদের ‘চিন মিউজিক’ শোনাচ্ছে আমাদেরই কেউ একজন। ভাবতেই তো উচ্ছ্বাসের স্রোতে আছড়ে পড়ে হৃদয় জুড়ে। এ সব কিছুর জন্যেই তো নাহিদ রানার ধন্যবাদ প্রাপ্য।
নাহিদ রানা, রীতিমত এক ফেরারি গাড়ি। চোখের নিমিষে তিনি দিতে পারেন বিশাল পথ পারি। আর ঠিক এ কারণেই তাকে বেশ আদর-যত্ন করে রাখতে হবে। বহু সখ করেই তো ফেরারি গাড়ি একদিন নিজের করে নেওয়া যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে তো ফেরারি হয়ে যায় দূর আকাশের নক্ষত্র।
আপনি নাহিদ রানাকে নিত্যদিনের টয়োটার মত করে ব্যবহার করতে পারবেন না। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের লাক্সারি। সে বিষয়টি অন্তত বুঝতে হবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের। তার প্রতি সদয় হতে হবে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সকলের। মুগ্ধতা ছড়ান নাহিদ, প্রতিপক্ষের চোখে-মুখে ভয় ধরিয়ে দেন। এমন দৃশ্য প্রতিনিয়ত দেখতে চাইবে সকলে।
কিন্তু চাহিদা আর বাস্তবতার মাঝে রাখতে হবে ফারাক। এই বছরে গড় গতি বেগের দিক থেকে তিনি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। গড়ে ১৪০.৯৩ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বল ছুড়েছেন তিনি। টেস্টে উইকেট বাগিয়েছেন ১৯টি। প্রতিনিয়ত ১৪০ এর বেশি গতিতে বল ছুড়ে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। শরীরের উপর দিয়ে অনেকখানি ধকল যায়।
তাইতো নাহিদ প্রসঙ্গে অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে বাংলাদেশকে। এমনকি এই সতর্ক বার্তা দিয়ে রেখেছেন খোদ ইয়ান বিশপও। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন ২০২৭ সাল অবধি নাহিদকে ফিট রাখার জন্যে। তেমনটি করা গেলে ২০২৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে নাহিদ হতে পারেন বাংলাদেশের তুরুপের তাস।
ফেরারি আর টয়োটার মধ্যকার পার্থক্য বুঝতে হবে। নিত্যদিনের ব্যবহার্য গাড়ি নাহিদ নন। এটা যত দ্রুত উপলব্ধি করা যাবে, ততই তা নাহিদ ও দেশের ক্রিকেটের জন্যে মঙ্গল।