বল হাতে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালালেন শেখ মেহেদী হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং অর্ডারকে একেবারে তছনছ করে দিয়েছেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। স্বল্প পুঁজিকে প্রতিপক্ষের জন্যে বিশাল লক্ষ্যে পরিণত করেছনে তিনি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারের মালিকও বনে গেছেন শেখ মেহেদী।
গ্লোবাল সুপার লিগ জিতেছে রংপুর রাইডার্স। সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন শেখ মেহেদী। ব্যাটে খুব বেশি অবদান রাখার সুযোগ তিনি পাননি। কিন্তু বল হাতে ঠিকই কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই উইকেট বাগিয়েছিলেন, এমনকি রানের নদী শুকিয়ে দিতেও সহয়তা করেছিলেন তিনি।
সেই ধারা অব্যাহত রাখলেন জাতীয় দলের জার্সিতে। এদিন অবশ্য বল হাতে ক্যারিবিয়ানদের নাস্তানাবুদ করার আগে ব্যাট হাতেও রানের দেখা পেয়েছেন। যদিও ২৪ বলে খেলা ২৬ রানের ইনিংসটি নিয়ে হতে পারে সমালোচনা। কিন্তু বল হাতে সমালোচনার কোন সুযোগ রাখেননি এই অলরাউন্ডার।
মাত্র ১৪৮ রানের টার্গেট ছুড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ওমন দানবীয় সব ব্যাটারদের বিপক্ষে এই সংগ্রহ মামুলি বটে। কিন্তু বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট স্বল্প পুঁজিতে সর্বোচ্চ লড়াইটাই করতে চাইল। ইনিংসের প্রথম ওভারে হাসান মাহমুদের খরচা এক রান। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদ একটি রানের বিনিময়ে তুলে নেন ব্যান্ডন কিংয়ের উইকেট।
এরপরই দৃশ্যপটে হাজির শেখ মেহেদী। পাওয়ার প্লে-তে স্পিনার হয়েও বোলিং করতে দ্বিধা করেননি। বরং চেপে ধরেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের। সেই চাপ সইতে না পেরে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন নিকোলাস পুরান। মেহেদীর প্রথম ওভারে খরচা মাত্র এক রান।
সেখানেই থেমে থাকেননি মেহেদী। তিনি ছিলেন দারুণ ছন্দে। তাইতো পাওয়ার প্লে-তেই দ্বিতীয় ওভারের জন্যে অধিনায়ক বল তুলে দেন তার হাতে। তিনি আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন নিজেকে উজাড় করে। এদফা একটা বাউন্ডারি হজম করার পরের বলে জনসন চার্লসকে ফিরিয়েছেন প্যাভিলিয়নে।
ছন্দে ব্যঘাত ঘটাতে চাইলেন না লিটন কুমার দাস। তাইতো এক প্রান্ত থেকে টানা বোলিং করে গেলেন মেহেদী। নিজের তৃতীয় ওভারে এবার দুইটি উইকেট ঢুকল মেহেদী পকেটে। তার উইকেট প্রাপ্তিতে অধিনায়ক লিটনও রাখলেন অবদান। আন্দ্রে ফ্লেচারের পর রস্টন চেজ, দুইজনই ক্যাচ দিয়েছেন লিটনের হাতে। সেই ওভারে মেহেদীর খরচ মাত্র তিন রান।
দিনশেষে মেহেদী আর কোন উইকেট নিজের করে নিতে পারেননি। তার শেষ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা নিয়েছে চার রান। ১৩ রানে চার উইকেট নিয়ে নিজের বোলিং স্পেল শেষ করেন মেহেদী হাসান। এটাই তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার।
তার কল্যাণে মাত্র ৩৮ রানেই ৫ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। নিজের কাজটা যথাযথভাবেই পূর্ণ করেন শেখ মেহেদী হাসান। জয়ের জন্যে বাকি পথ পাড়ি দেওয়ার কাজটা অন্য বোলারদের উপরই বর্তায়।