আজিজুল হাকিম তামিম, যাকে খুঁজছি এতদিন। বাংলাদেশের একজন টপ অর্ডার ব্যাটার, অনায়াসে উইকেটের চারদিকে দৃষ্টিনন্দন সব শটের পসরা বসিয়েছেন। ভাবতেও কেমন খটকা লাগে না! এত বছরেও এমন সূর্য যে উঁকিও দেয়নি আমাদের ক্রিকেট আকাশে।
তবে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশে একটু হলেও যেন উজ্জ্বল আলোর আভাসটা দেখা যাচ্ছে। উত্থান হচ্ছে হালকা পাতলা গড়নের এক কিশোরের। যার খেলার ধাচঁটা মোটেও গড়পড়তা বাঙালি ব্যাটারের মত নয়। হার্ড হিটিংটা যেন তার কাছে হাতের মোয়া। হয়ত ভাবছেন গায়ের জোরেই মারেন বোধহয়। তবে তামিমের খেলা একবার হলেও দেখা উচিত। চোখের প্রশান্তির জন্য বেশ ভালো রসদই অবশ্য পাবেন, এ কথা বলা যায় নির্দ্বিধায়।
সম্প্রতিই অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জিতিয়ে আসলেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে। চার ম্যাচে ৬২.৬৬ গড়ে রান ১৮৮। একটা করে আছে অর্ধ-শতক আর শতক। জার্সির কলারটার উঁচিয়েই রাখেন তিনি মাশরাফি-সাকিবের মত। পারফরম্যান্সটাও যে সেই আত্নবিশ্বাসের পালে হাওয়া দিচ্ছে।
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের পরেই খেলছেন চলতি এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে। প্রথম ম্যাচেই করেছিলেন ফিফটি। এখন অবধি টুর্নামেন্টের চর্তুথ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। ৭ ম্যাচে ৩০ এর উপরে গড়ে রান করেছেন ২১৭। স্ট্রাইক রেটটাও ১৪০ এর উপরে।
লিগ পর্বের শেষটাও করলেন রঙিনভাবেই। টস হেরে ব্যাট করতে নামে খুলনা। ওপেনার হিসেবেই রাজশাহীর বিরুদ্ধে ক্রিজে এলেন তামিম। শুরুতেই অভিজ্ঞ এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারালেও রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন তামিম। সঙ্গী মিথুনের দীর্ঘ গতির ব্যাটিংয়ের বিপরীতে খেলছেন ঝড়ো ইনিংস। ৪১ বলে ৬৬ রানে সাজঘরে ফিরছেন সীমানার কাছে ক্যাচ আউটে কাটা পরে। কিন্তু এরমধ্যেই মেরেছেন সাতটি বাউন্ডারি ও চারটি ওভার বাউন্ডারি। সাত ম্যাচে ১৮ টি চার, ১৪টা ছয়!
অথচ এই খেলোয়াড় কিনা নেই বিপিএলের কোন দলে। তামিমের দুর্বলতাও কিন্তু আছে বটে, বড্ড ডট বল খেলে ফেলেন কিছুসময়। তবে একজন ১৮ বছর কিশোর হিসেবে তা নজর আন্দাজ নিশ্চয়ই করা যায়! আজিজুল হাকিমের মধ্যে ‘বিগ থিং’ হবার জন্য প্রয়োজনীয় সব রসদই আছে। দরকারটা শুধু পরিচর্যার, সঠিক নির্দেশনার। এখন বাকিটা তার পরিশ্রম, ক্রিকেট বোর্ডের সহযোগিতা আর নিয়তির হাতেই আপাতত। ব্যাটে বলে মিলে গেলে বাংলায় ও হয়ত আসতে যাচ্ছে কলার উঁচানো ব্যাটিং দানব।