লিটন দাস ছন্দে নেই। লিটন দাস নতুন বল খেলতে পারছেন না। লিটন দাসকে আর ওপেনার হিসেবে ভরসা করা যায় না। লিটন দাস কি ফুরিয়ে গেছেন? নাহ, লিটন দাস ফুরিয়ে যাননি।
লিটন দাসের ব্যাটের মত দেখতে ওই তুলিটা আজো মোনালিসা আঁকতে জানে। আর সেই মোনালিসাই তিনি আঁকলেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আর সেই চিত্রকর্মের মোড়ক উন্মোচিত হল এমন একটা দিনে যেখানে লিটন দাস প্রথমবারের কোনো আইসিসি ইভেন্টের দলে নিজের জায়গাটা হারালেন।
একে তো ঢাকা ক্যাপিটালস এখন ডুবন্ত জাহাজ, আর সেই জাহাজের ঘায়েল নাবিক। নাবিক নয়, যেন আহত বাঘ। আর আহত বাঘ কতটা ভয়ংকর হতে পারে, সেটা কে না জানে। সেই পুরনো পড়াটাই আবারও রিভিশন দেওয়ালেন লিটন।
ছক্কার বন্যায় মুছে গেল সব অফ ফর্মের যন্ত্রনা। আগের ম্যাচেই ৭৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবে, এবারে তিনি আরও আগুনে শক্তি নিয়ে বলিয়ান। চার-পাঁচ ঘণ্টা আগেই জেনেছেন দু:সংবাদ। সেই দু:সময়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের অব্যর্থ সব অস্ত্রই তিনি মোতায়েন করলেন রণাঙ্গনে।
হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি ২০০’র বেশি স্ট্রাইক রেট নিয়ে। সমান তালে চলে যান সেঞ্চুরির তিন অংকের ম্যাজিকাল ফিগারে। ৪৪ তম ডেলিভারিতে তিনি পৌঁছে যান সেঞ্চুরির মাইলফলকে। বাংলাদেশিদের মধ্যে এটাই বলের দিক থেকে দ্বিতীয় দ্রুততম।
সবার ওপরে এখানে এখনও আছেন পারভেজ হোসেন ইমন। তিনি ৪২ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন মিরপুরে, ২০২০ সালে। এই ইমনই লিটনকে টপকে জায়গা পেয়ে গেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে। লিটন কি এবার পাশার দানটা পাল্টে দিলেন না? এমন একটা ইনিংসের পরও তাঁকে ছাড়াই আইসিসি ইভেন্ট খেলবে বাংলাদেশ?
২০০৭ বিশ্বকাপের দলে মোহাম্মদ আশরাফুলের থাকার কথা ছিল না। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে তাঁকে দলে নেওয়া হয়। আশরাফুল দলে আসেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৬৩ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস খেলার পর। সেই ঘটনা তো চাইলে লিটন দাসের ক্ষেত্রে ঘটানো সম্ভব। কারণ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আসছে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো কারণ না দেখিয়েই খেলোয়াড় পরিবর্তন করার সুযোগ আছে।
ফলে, চলতি বিপিএলের পুরোটা সময়ই নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছেন। নির্বাচক প্যানেলের নজরটাও নিশ্চয়ই লিটন দাসের ওপরই আছে। আসলে তিনি যখন খেলতে থাকেন, ছন্দে থাকেন – তখন সবার নজরই তো তাঁর দিকেই থাকে।