ফুটবলের সর্বকালের সেরা কে – লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নাকি অন্য কেউ? ভক্ত হিসেবে আপনার উত্তর ভিন্ন হতেই পারে, দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বদলে যেতে পারে আপনার পছন্দের সর্বকালের সেরা ফুটবলারের নাম। তবে খেলা-৭১ চেষ্টা করেছে এমন দশজন তারকার তালিকা তৈরি করতে যারা যেকোনো বিচারে সর্বকালের সেরা।
- লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা)
লিওনেল মেসিকে ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা মানেন এমন সমর্থকদের সংখ্যা নিঃসন্দেহে সর্বোচ্চ। বিশেষ করে ২০২২ বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে আর কাউকে তাঁর সমকক্ষ ভাবতে নারাজ অধিকাংশই। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে একের পর এক ট্রফি জিতেছেন তিনি, সর্বোচ্চ আট বার ব্যালন জিতেছেন। আর সবচেয়ে আরাধ্য শিরোপা হিসেবে জিতেছেন ফুটবলপ্রেমীদের মুগ্ধতা।
- পেলে (ব্রাজিল)
ছোটবেলায় ফুটবলের রাজা পেলে কথাটা বোধহয় সবাই পড়েছে। পেলে আসলেই ফুটবলের রাজা, ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ছয় গোল করে বিশ্ব মঞ্চে নিজের আগমনী বার্তা দেন তিনি। আর হ্যাটট্রিক বিশ্বকাপ জিতেছে নিজেকে ফুটবল বিশ্বের নরপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই সেলেসাও কিংবদন্তি।
- ডিয়েগো ম্যারাডোনা (আর্জেন্টিনা)
ফুটবল যে সংখ্যা দিয়ে ব্যাখ্যা করার মতন কোন খেলা নয় সেটা প্রথম প্রমাণ করেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। মাত্র ৩৫৩ গোল এবং ১২টা ট্রফি নিয়েই ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ঢুকে পড়েছেন তিনি। এমনকি অনেক আর্জেন্টাইন সমর্থক তাঁকেই সর্বকালের সেরা ভাবেন।
- ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল)
ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ডটা দখলে রেখেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো; ইংল্যান্ড, স্পেন, ইতালি কিংবা ইউরোপ – যখন যেখানে খেলেছেন সেখানেই রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যালনও আছে তাঁর দখলে। সবচেয়ে বড় কথা, ফুটবল অঙ্গনে পর্তুগালকে আলাদা একটা পরিচয় এনে দিয়েছেন এই সুপারস্টার।
- ইয়োহান ক্রুইফ (নেদারল্যান্ডস)
ফুটবল রাজনীতি নয়, অথচ ফুটবলে রীতিমতো বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন এক অতিমানব – ইয়োহান ক্রুইফ। খেলোয়াড় এবং কোচ দুই পরিচয়েই সফল তিনি। শুধু জিতেই ক্ষান্ত ছিলেন না, খেলাটায় একটা নিজস্ব ধাঁচ তৈরি করেছিলেন এই ডাচ, যা কি না ‘টোটাল ফুটবল’ নামে পরিচিত।
- জিনেদিন জিদান (ফ্রান্স)
কন্ট্রোল আর টেকনিক যদি হয় চিত্র, তাহলে নিঃসন্দেহে সর্বকালের সেরা চিত্রকর জিনেদিন জিদান। এক জোড়া পায়ের জাদুতে তিনি মাতিয়েছেন তুরিন, মাদ্রিদ; জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বিশ্বকাপ। ঢুস কাণ্ডের বিতর্ক না থাকলে দুই দুইটা বিশ্বকাপ থাকতো তাঁর হাতে।
- রোনালদো নাজারিও (ব্রাজিল)
ফুটেও ফুটলো না, রোনালদো নাজারিও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছিলেন ততদিনে কিন্তু সামর্থ্যের সবটুকু দিতে পারেননি। ভয়ংকর ইনজুরি কেড়ে নিয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারের বড় একটা অংশ। তবু তিনি যা করেছেন সেটা বড় বড় ফুটবলারদের জন্য স্বপ্ন। ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডে ছিলেন এই স্ট্রাইকার, পরের বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছেন, এরপর তো ২০০২ জন্ম দিয়েছেন ইতিহাসের।
- জার্ড মুলার (জার্মানি)
সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারের তর্কে রোনালদো নাজারিওর সঙ্গে ভালভাবেই উচ্চারিত হয় জার্ড মুলারের নাম। ১৯৭০ বিশ্বকাপে ১০ গোল রীতিমতো চমকে দিয়েছিলেন তিনি, পরের আসরেও দিয়েছিলেন চার গোল। দুবারই অবশ্য শিরোপা উঁচিয়ে ধরার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর।
- আলফ্রেডো ডি স্টেফানো (আর্জেন্টিনা)
রিয়াল মাদ্রিদ এবং আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি আলফ্রেডো ডি স্টেফানোকে ধরা হয় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে কমপ্লিট খেলোয়াড়দের একজন। দশ বছরের ব্যবধানে রিয়ালকে আট বার লা লিগা জিতিয়েছিলেন তিনি, সেই সাথে টানা পাঁচ বার জিতেছিলেন ইউরোপিয়ান টাইটেল।
- মিশেল প্লাতিনি (ফ্রান্স)
ফ্রান্স ফুটবলের বড় একটা অংশ আড়ালে থেকে যাবে যদি মিশেল প্লাতিনির নাম না নেয়া হয়। নিজের প্রজন্মের সেরা মিডফিল্ডার ছিলেন তিনি, তা সত্ত্বেও ক্যারিয়ার জুড়ে ৩৫৩ গোল আছে তাঁর। সেই সাথে তিন তিনটা ব্যালন পেয়েছেন এই ফরাসি স্টার।