কখনো চার নম্বর, কখনো ছয় নম্বর কখনো আবার পুরোদস্তুর টপ অর্ডার ব্যাটার – লোকেশ রাহুল ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের সে মানুষটা যাকে যখন ইচ্ছে নামানো যায়। মানিয়ে নেয়ার কাজটা তাই কখনোই সহজ ছিল না তাঁর জন্য, কিন্তু বিনা যুদ্ধে কি আর হাল ছাড়া যায়? তিনি তাই নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালনে বড্ড মনোযোগী।
৮২ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এই ডানহাতি ২৩ বার খেলেছেন ওপেনার হিসেবে, তিন নম্বরে খেলেছেন তিনবার আর চার নম্বরে ১৩ বার। এছাড়া মিডল অর্ডারে অর্থাৎ পাঁচ এবং ছয় নম্বরে খেলেছেন ৩৭ বার। এমনকি সাত নম্বরে একবার ব্যাট করেছেন।
এই ব্যাটার বলেন, ‘এটা কারো জন্যই সহজ নয়; তবে দল যেটা ভাল মনে করে, যাকে যেখানে ভাল মনে হবে সেখানেই খেলাবে। আপনাকে শুধু নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।’
রাহুলের জন্য মানিয়ে নেয়া যেমন কঠিন, তেমনি কঠিন দুবাইয়ের মাঠে স্ট্রাইক রোটেট করা। তাই ডট বলের চাপ জমা হয় ব্যাটারের কাঁধে। এ ব্যাপারে রাহুল বলেন, ‘স্ট্রাইক রোটেট করাটা চ্যালেঞ্জিং, তাই ডট বলের চাপ বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে তখন বড় শট খেলতে হয়; বোলাররা সুযোগ পেয়ে যায়।’
সমাধান হিসেবে এই তারকা অন্যপ্রান্তে থাকা ব্যাটারের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিরাট, শ্রেয়াসদের কাছে গিয়ে কথা বলি। তাঁরা মাঝের ওভারে আমার মত চ্যালেঞ্জ অনুভব করে, তো তাঁরা কিভাবে ভাবছে সেটা বোঝার চেষ্টা করি। এমনিতে প্রত্যেকের খেলার ধরন আলাদা, তো সবার কথা শুনে নিজের জন্য যেটা উপযুক্ত সেটাই করি।’
ভারতের ওয়ানডে দলের মেইন উইকেটরক্ষক এখন অবশ্য লোকেশ রাহুল। বলতে গেলে ঋষাভ পান্তকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে জায়গাটা পেয়েছেন তিনি, কিন্তু চূড়ান্ত জয় নয় এটা। দু’জনের মধ্যে মধুর লড়াই কিন্তু চলছে।
সেটা নিয়ে রাহুল বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দিতা অবশ্যই আছে। কিন্তু আমি তাঁর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি না। টিম ম্যানেজম্যান্ট ঠিক করে কাকে খেলাবে। সে কি করতে পারে, কিভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে সেটা সবাই জানে। পারফরম্যান্সই আসলে একাদশে জায়গা পাইয়ে দেয়, তাই নিজের মত খেলে সেরাটা দেয়াই মূল ব্যাপার।’
দলের জন্য নিজের পজিশন উৎসর্গ করলেও রাহুলকে ব্যাপক বিদ্রুপ সহ্য করতে হয়। সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে হেয় করা হয় যখন তখন। তবে এসবে কিছু যায় আসে না, গঠনমূলক সমালোচনা হলে তিনি সেটা নিয়ে ভাবেন অন্যথায় এসবে কান দেয়ার সময় কই – কি জানি, হয়তো ব্যঙ্গ বিদ্রুপই তাঁকে আরো দৃঢ় করে তুলেছে।