ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) বিষয়ে যেন রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটালেন ব্র্যাড হজ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ক্রিকেটার দাবি করেছেন দশ বছর আগে খেলা আইপিএলের চতুর্থ আসরের পুরো পারিশ্রমিক এখনো বুঝে পাননি তিনি। হজ জানিয়েছেন ২০১১ সালে কোচি টাস্কার্স কেরালার হয়ে খেলা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক এখনো বকেয়া রয়েছে।
টেলিগ্রাফ ক্রিকেট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জানায় ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাইজ মানি এখনও বুঝে পাননি ভারতীয় নারী দলের ক্রিকেটাররা। তাঁর রিটুইটে অজি তারকা হজ অভিযোগ করেন ২০১১ সালে কোচি টাস্কার্সের হয়ে খেলা ক্রিকেটাররাও পারিশ্রমিকের ৩৫ শতাংশ এখনো পাননি।
বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) কাছে হজ প্রশ্ন রাখেন ঐ আসরের পারিশ্রমিকের সেই ৩৫ শতাংশ টাকা এখন পাওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা।
তিনি বলেন, ‘দশ বছর আগে কোচি টাস্কার্সের হয়ে আইপিএলে খেলা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের ৩৫ শতাংশ এখনো বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা আদায় করা যেতে পারে, এমন কোন সুযোগ কি রয়েছে বিসিসিআই?’
৪ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ঐ আসরে হজকে ২০১২ সালের নিলাম থেকে দলে নিয়েছিল কোচি টাস্কার্স। তার দাবি অনুযায়ী এখনো ১ লাখ ২৭ হাজার মার্কিন ডলার পাবেন তিনি। কোচির হয়ে ঐ আসরে ১৪ ম্যাচে ৩৫.৬৩ গড়ে ২৮৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। সেই আসরে কোচির হয়ে আরো খেলেছিলেন রাহুল দ্রাবিড়, মাহেলা জয়াবর্ধনের মতো তারকারা।
কোচি টাস্কার্স কেরালা আইপিএলে অংশ নিয়েছিল শুধু চতুর্থ আসরেই। ১৫৫০ কোটি রুপি দিয়ে রাহুল দ্রাবিড়, শ্রীশান্ত ও মাহেলা জয়াবর্ধনের মত তারকাদের কিনে কোচি। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর এই অর্থের ১০ শতাংশ বা ১৫৬ কোটি রুপি ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হতো মালিকপক্ষকে। কিন্তু সেই অর্থ দিতে না পারায় পরের আসর থেকেই তাঁদের সাথে চুক্তি বাতিল করে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। সেই আসরে ১০ দলের মধ্যে অষ্টম হয় তাঁরা।
কোচি টাস্কার্স কেরালার মালিকদের একটি ছিল রেন্ডজভস স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড। তাঁদের সাথে চুক্তি বাতিল করার জন্য বিসিসিআইয়ের সাথে মুম্বাইয়ের হাই কোর্টে আইনি লড়াইয়ে জড়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। হাই কোর্ট বিসিসিআইকে নির্দেশ দেয় ৫৫০ কোটি রুপি কোচি টাস্কার্সকে দেওয়ার জন্য।
আইপিএলের সব আসরে আট দল অংশ নিলেও ঐ আসরে দশ দলকে খেলার সুযোগ করে দিয়েছিল বিসিসিআই। কোচি টাস্কার্স কেরালার সাথে অন্য দলটি ছিল পুনে ওয়ারিয়র্স ভারত।
আইপিএলে পারিশ্রমিক নিয়ে অভিযোগ ওঠা এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১২ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়, বাতিল হয়ে যাওয়া গুলো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের ৩০-৪০ শতাংশ এখনও পরিশোধ করেনি।
আইপিএলে কোচি টাস্কার্স ছাড়াও এই অজি ব্যাটসম্যান কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে খেলেছেন। এছাড়া ল্যাঙ্কশায়ার, ভিক্টোরিয়া, মেলবোর্ন রেনেগেডস, মেলবোর্ন স্টার্সের হয়েও খেলতে দেখা গেছে তাকে।
৪৬ বছর বয়সী হজ কোচির হয়ে সেই আসরে খেলেন ১৪ ম্যাচ। ৩৫.৬৩ গড়ে করেন ২৮৫ রান। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের হয়ে ছয় টেস্ট, ২৫ ওয়ানডে ও ১৫ টি টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি।