আইপিএল নয় বাংলাদেশী সমর্থকদের নজরটা এখন পাকিস্তান সুপার লিগে। কারণটা স্পষ্ট, পিএসএলে যে খেলছেন বাংলার তারকারা। বিশেষ করে অভিষেক ম্যাচে রিশাদ হোসেনের পারফরম্যান্স যেন আগ্রহ বাড়িয়েছে বহুগুণ। পিএসএল অভিষেকে কোন বাংলাদেশী কেমন করেছিল, সে জিজ্ঞাসাও তৈরি হয়েছে সকলের মাঝে।
এখন পর্যন্ত আট জন বাংলাদেশী ক্রিকেটারের পিএসএল অভিষেক হয়েছে। ২০১৬ সালে সাকিব আল হাসান নিজের প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে করেছিলেন বাজিমাত। ব্যাট হাতে ৩৫ বলে ৫১ সাথে চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন এক উইকেট। অভিষেকেই হয়েছিলেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচ।
দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খানের অভিষেক ম্যাচ তৈরি করেছিলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অভিষেকেই খেলেছিলেন ৫১ বলে ৫১ রানের ধীরগতির এক ইনিংস। যদিও তার দল ম্যাচটি জিতে যায়, তবুও তার ব্যাটিং নিয়ে একটা প্রশ্নের উদ্রেক ঘটিয়েছিল। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তার সেই ইনিংসটি মন্দ ছিল না।
একই বছর মুশফিকুর রহিমেরও অভিষেক হয়েছিল পিএসএলে। ফিনিশিং রোলে ব্যাট করতে নেমে খেলেন সাত বলে ১০ রানের অপরাজিত ইনিংস। উইকেটের পেছনে দুইটি স্টাম্পিংও করেন তিনি। অভিষেক ম্যাচে নিজের দল হারলেও ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২০ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে প্রমাণ করেছিলেন নিজের ফিনিশিং দক্ষতা।
তবে সবচেয়ে বাজে পারফর্মার ছিলেন এনামুল হক বিজয়। ২০১৭ সালে সুযোগটা আসে পিএসএল খেলার। আর প্রথম ম্যাচটাই ছিলো মহাগুরুত্বপূর্ণ ফাইনাল। তবে টপ অর্ডারে নেমেই নয় বলে তিন রানের ইনিংস খেলে দলের বিপর্যয়টাই বাড়িয়েছিলেন।
কাটার মাস্টার ফিজের অভিষেকটা হয় নিজের প্রাইম টাইমে। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেই তুলে নেন প্রতিপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট। বোলিং স্পেলটা ছিল চার ওভার ২২ রান দুই উইকেট। সাব্বির রহমানও সুযোগ পেয়েছেন পিএসএল খেলার। তবে সুযোগ থাকলেও কাজে লাগাতে ব্যার্থ হয়েছেন তিনিও। নিজের প্রথম ম্যাচে ১১ বলে ১১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যদিও দিনশেষে জিতে যায় তার দল।
সর্বশেষ সুযোগটা পেয়েছেন রিশাদ এবং অভিষেকেই আলো ছড়িয়েছেন তরুণ এই লেগ স্পিনার। ব্যাট হাতে তেমন কিছু করার সুযোগ না পেলেও বোলিং জাদুতে মুগ্ধ করেছেন তিনি। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩১ রান দিতে তুলে নেন তিনটি উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট তোলার দক্ষতা কাজে লাগিয়েছেন পিএসএলেও।
বিদেশী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো শুরু হলেই বাংলাদেশীদের আগ্রহের জায়গায় থাকে দেশের কেউ দল পেলো কি না! দেশের ক্রিকেট তারকারা বিদেশী লীগে খেলবেন, পারফর্ম করবেন এটাই যেন ভক্তদের চাওয়া। তবে সে সুযোগটা মেলে কালে ভদ্রে, দেশের ক্রিকেট তারকারা সে সুযোগটা কতটুকু কাজে লাগাতে পারেন তা নিয়েও থাকে প্রশ্ন!
এবারের আসরে খেলার কথা ছিলো লিটন দাসেরও। তবে ভাগ্যের পরিহাসে ইনজুরিতে ছিটকে যান তিনি। এখন অপেক্ষাটা নাহিদ রানার জন্য। পিএসএলে সাকিব রিশাদদের মতোই কি রাঙাতে পারবেন অভিষেকটা? উত্তরটা সময় বলে দেবে।