‘ভাগ্যবান যে সিরিজ জিতেছি’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল স্বাগতিকরা। সিরিজ জিতলেও অধিনায়ক তামিম ইকবাল মনে করেন সিরিজে তারা কোন ম্যাচেই নিঁখুত খেলা খেলেননি।

সিরিজের প্রতিটা ম্যাচেই ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। প্রথম ম্যাচে ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৭৪ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আর আজ ৮৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে মাত্র ১৮৯ রানে।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জুটিতে লড়াই করার মত পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ম্যাচ জিতিয়েছেন বোলাররা। আজ মুশফিক ইনিংস বড় করতে পারেননি। মুশফিকের ব্যর্থতার দিনে দলের হাল ধরতে পারেননি অন্য কেউই। এমন পারফরম্যান্সের পর সিরিজ জিতে নিজেদের তাই ভাগ্যবান মনে করছেন তামিম।

তিনি বলেন, ‘আমি গত ম্যাচ শেষে বলেছিলাম যে আমরা সিরিজ জিতেছি কিন্তু আমার কাছে কখনোই মনে হয়নি নিঁখুত খেলা খেলেছি। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ীও কখনো খেলিনি। আমরা ভাগ্যবান যে আমরা সিরিজ জিতেছি।
তবে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যে গুলো নিয়ে আমাদের গুরুত্ব সহকারে কাজ করা দরকার।’

শ্রীলঙ্কাকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার কুশাল পেরেরা ও দানুশকা গুনাথিলাকা। ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করা এই দুই ব্যাটসম্যানকে আটকানোর কোন পথই পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। দুজনই রান তুলতে থাকেন সমান গতিতে। তিন বার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন পেরেরা। তামিম মনে করেন ক্যাচ গুলো নিতে পারলে ৩০ রান কম হতে পারতো শ্রীলঙ্কার।

তামিম বলেন, ‘ওদের আজ খুব আক্রমণাত্মক মানসিকতা ছিল এবং আমরা প্রচুর শর্ট বল ও প্রচুর বাইরে বল করে ওদের সহায়তা করেছি। সুযোগ পেয়েও আমরা ক্যাচ নিতে পারিনি। যদি আমরা ক্যাচ গুলো নিতে পারতাম তবে ওদের ৩০ রান কম হতে পারত।’

সিরিজ জুড়েই ব্যর্থ ছিলেন জুনিয়র ক্রিকেটাররা। প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ হয়ে শেষ ম্যাচে নাঈম শেখের কাছে জায়গা হারিয়েছেন লিটন দাস। সুযোগ পেয়ে সেটা কাজে লগাতে পারেননি নাঈমও। প্রথম ম্যাচে ২৭ রান করলেও পরের দুই ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন আফিফ হোসেন। সিনিয়রদের উপর এই নির্ভরতা নিয়েই উদ্বিগ্ন তামিম।

তিনি বলেন, ‘সিনিয়রদের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা সম্ভবত উদ্বেগের বিষয়। তবে আমি এমন একজন মানুষ যে সব সময় তরুণদের পাশে দাঁড়াতে চায়। কারণ আমি মনে করি না যে তারা চেষ্টা করছে না। তারা যদি ভালো করা শুরু করে তবে দলের জন্য এটি আরো ভাল হবে।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ সাত ওয়ানডেতে ৯২.৬৬ গড়ে ৫৫৬ রান সংগ্রহ করেছেন মুশফিকুর রহিম। এই সিরিজেও ২৩৭ রান করে হয়েছেন সিরিজ সেরা। মুশফিক জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সাথে রান করা সহজ না হলেও উপভোগ করেন তিনি।

মুশফিক আরো বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান করা সহজ কাজ নয়, তারা আমাদের সাথে কঠোর থাকে, তারা কখনোই হার মানে না। আমি এটা উপভোগ করি। যখনই আমার উপর চাপ পড়ে, আমি শান্ত থাকতে পছন্দ করি। এটি আমাকে ভাল করার তাগিদ দেয়।’

গত জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডেতে হোয়াটওয়াশ করলেও তাদের সাথে টেস্ট সিরিজে হোয়াটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। এর পরের সিরিজে বিধ্বস্ত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের সাথে। মুশফিক জানিয়েছেন আগের সিরিজ গুলোতে সেরা ক্রিকেট না খেললেও এই সিরিজে পরিকল্পনা কার্যকর করতে পেরেছেন তারা।

তিনি বলেন, ‘সবাই এই সিরিজের জন্য সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করেছিল। গত কয়েক মাসে আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট না খেললেও এই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ম্যাচে আমরা আমাদের পরিকল্পনা গুলো কার্যকর করেছি। যদি আপনি ১৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন তবে আপনাকে আরো বেশি বেশি অবদান রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link