অভিমানের মেঘ জমেছে সিমন্সের মনে

বাংলাদেশ থেকে মন উঠে গেছে ফিল সিমন্সের। এমনিতেই দলের মধ্যে তাঁর তেমন একটা সরব উপস্থিতি নেই, টিম ম্যানেজমেন্টেও বড় কোনো ভূমিকা রাখেন না। তাই, তিনি চলে গেলে বাংলাদেশ দলের মাথঅয় আকাশ ভেঙে পড়বে - সেটাও বলা যাচ্ছে না।

শ্রীলঙ্কা সফর থেকেই নাকি জমতে শুরু করেছে অভিমানের স্তর। সেই সফরে টিম মিটিংয়ের ভেতরের আলোচনা বাইরে ফাঁস হওয়াটা অনেকেই হালকাভাবে দেখলেও, সেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি প্রধান কোচ ফিল সিমন্স।

শান্ত, সজ্জন, কিন্তু আত্মমর্যাদায় অটল—এই তকমায় যাঁকে চেনা যায়, সেই ক্যারিবিয়ান কোচ মুখে কিছু না বললেও মন থেকে নাকি সরে যেতে শুরু করেছিলেন তখনই। এবার তিনি দ্রুতই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছেন।

ড্রেসিংরুমে চুপচাপ থাকেন। পরিকল্পনার বাইরে থাকেন প্রায়ই। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের রাতে বাংলাদেশ দল যখন হোটেলে ফিরে কেক কাটছে, ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ধরা পড়ছে তাসকিন-জাকেরদের মুখে হাসির ঝিলিক, পাশে দাঁড়িয়ে আছেন পেস বোলিং কোচ শন টেইট, বাকি কোচিং স্টাফরা—ঠিক তখনই দৃশ্যপট থেকে নিখোঁজ প্রধান কোচ। সিমন্স ছিলেন না কোনো আলিঙ্গনে, ছিলেন না কোনও উল্লাসে।

টিম ম্যানেজমেন্টের ভেতরে এখন জোর গুঞ্জন—সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনই নাকি হয়ে উঠেছেন দলের নিয়ন্ত্রণকর্তা। মাঠ, ড্রেসিংরুম, এমনকি প্র্যাকটিস সেশনেও এখন মূল মঞ্চে তাঁরই উপস্থিতি, আর কোচ সিমন্স যেন সেই দৃশ্যের নীরব দর্শক।

গেল শ্রীলঙ্কা সফরের সময়ই সংবাদমাধ্যমে ভেসে আসে এই ‘ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার’ খবর। আর সেটাই নাকি চূড়ান্তভাবে আঘাত করে সিমন্সের পেশাদার আত্মসম্মানে। যিনি দলের প্রধান কোচ, তাঁকেই যদি বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়, তাহলে সেই দায়িত্বে থাকার অর্থ কী?

সিমন্স মুখে কিছু বলেননি, কারণ সেটাই তাঁর স্বভাব। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিই এখন ভাষা হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এখন দাঁড়িয়ে আছে এক বিব্রতকর বাস্তবতার সামনে—কাগজে-কলমে কোচ থাকলেও, মাঠে-ম্যাচে, এমনকি উদযাপনেও তিনি অনুপস্থিত।

তাঁর মনোযোগ এখন আর বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে নেই, সেটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে। প্রশ্নটা তাই একেবারে পানির মত সরল — সিমন্স কি থেকেও নেই? নাকি বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে চুপিচুপি?

বাংলাদেশ থেকে মন উঠে গেছে ফিল সিমন্সের। এমনিতেই দলের মধ্যে তাঁর তেমন একটা সরব উপস্থিতি নেই, টিম ম্যানেজমেন্টেও বড় কোনো ভূমিকা রাখেন না। তাই, তিনি চলে গেলে বাংলাদেশ দলের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে – সেটাও বলা যাচ্ছে না।

Share via
Copy link