ঋষাভ বলেই সম্ভব!

ঋষাভ পান্ত ফিরে এলেন, বিস্ময় জাগালেন, ফিফটি পূর্ণ করে ব্যাটটা উঁচিয়ে ধরে ক্রিকেট ময়দানে সৃষ্টি করলেন এক অনন্য নজির।

ঋষাভ পান্ত ফিরে এলেন, বিস্ময় জাগালেন, ফিফটি পূর্ণ করে ব্যাটটা উঁচিয়ে ধরে ক্রিকেট ময়দানে সৃষ্টি করলেন এক অনন্য নজির।

আগের দিন ৩৭ রানে মাঠ ছেড়েছিলেন, এদিন যখন সাজঘরে ফিরছেন রান তখন ৫৪—পার্থক্যটা কেবল ১৭ রানের। তবে এই ১৭ টা রান শুধু সংখ্যা নয়, একটা স্টেটমেন্ট ছিল, ফিরে আসার গল্প ছিল। যে গল্পের মহানায়ক তো এই পান্তই।

ওল্ড ট্রাফোর্ডের দ্বিতীয় দিনের সকাল। ইংল্যান্ডের পেস সামলাতে না পেরে রবীন্দ্র জাদেজা সাজঘরে ফিরলেন। শার্দুল ঠাকুরও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারলেন না। এই পর্যন্ত সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল।

তবে হঠাৎ করেই সমস্ত ক্যামেরার লেন্স গিয়ে ঠেকলো ড্রেসিংরুম থেকে নেমে আসা একজনের দিকে। খোড়া পা নিয়ে নেমে আসলেন ঋষাভ পান্ত। গ্যালারি ভর্তি দর্শক করতালিতে বরণ করে নিল। অবাক হওয়ার আর কিছু কি বাকি ছিল?

ম্যানচেস্টার টেস্টের প্রথম দিন ক্রিস ওকসের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ডান পায়ে আঘাত পান ঋষাভ পান্ত। মুহূর্তেই তাঁর পায়ে ফোলা, রক্তপাত এবং প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দেয়, গলফ কার্টে করে মাঠ ছাড়তে হয়।

পরীক্ষার পর দেখা যায় হাড়ে চিড় ধরা পড়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ বিশ্রাম প্রয়োজন। অর্থাৎ এই সিরিজ এখানেই ইতি। বাকি সময় ভারতকে খেলতে হবে কার্যত ১০ জন ব্যাটার নিয়ে।

 

তবে সবকিছু বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঋষাভ ঠিকই ফিরে এলেন। ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে মাঠে নামলেন, দলের হাল ধরলেন। ওই খোঁড়া দুটো পা নিয়ে সামলালেন আর্চার, স্টোকস—একেকটা আগুনের গোলা।

এদিন ব্যাটে যোগ করলেন ১৭ রান। ততক্ষণে ফিফটি পেরিয়ে গেছে। ওই খোড়া পা নিয়ে যখন সাজঘরে ফিরছিলেন, ক্রিকেটটাই বুঝি তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছিল, হয়তো সময়টা অবাক হয়ে প্রশ্ন করছিল—‘এভাবেও কি ফিরে আসা যায়?’

হ্যাঁ, ফিরে আসা যায়, অদম্য ইচ্ছেশক্তি যার সে ঠিকই ফিরে আসতে পারে। মৃত্যুর দরজায় খিল এটে দিয়ে যারা বিস্ময় জাগাতে পারে, তারা বারবার ফিরে আসে। ঋষাভ যেন এটাই বলে গেলেন, নিঃশব্দে বুঝিয়ে দিলেন, ‘ফিরে আসার জন্যই তো আমার জন্ম।’

 

লেখক পরিচিতি

প্রত্যয় হক কাব্য

স্বপ্ন লেখার কি-বোর্ড

Share via
Copy link