সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও হারতে হবে, নিশ্চয়ই ভাবেননি শাই হোপ। ভাবা যাচ্ছিল—এটা বুঝি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিন। ২১৪ রানের পাহাড় গড়ে একরকম চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল তারা। কিন্তু, ভাবেননি কেবল একজন, অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভুলে গিয়েছিল, অন্য প্রান্তে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছেন, যিনি ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন, নাম তাঁর — টিম ডেভিড। নাম নয় যেন, ব্যাটে আগুন। আর সেই আগুনে ঝলসে গেল ক্যারিবিয়ান স্বপ্ন, চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল হোপের শতরানের মূল্য।
ম্যাচের সময় হিসেব করলে, ডেভিড নামক বিস্ফোরণটা শুরু হয়েছিল প্রায় এক ঘণ্টা আগে। কিন্তু প্রতিপক্ষের মনে তা চলবে বহুদিন। কে বলবে অস্ট্রেলিয়া ৮৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল? কে বলবে এই মাঠেই কয়েক ওভার আগেও শিমরন হেটমায়ারদের মুখে ছিল অজেয় হাসি?
ডেভিড মাঠে এসে যা করলেন, সেটাকে আর ব্যাটিং বলা চলে না—ওটা ছিল একটা নি:শব্দ প্রতিশোধ। ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করেছেন, স্ট্রাইকরেট ২৭৬! সাম্প্রতিক কালে টি-টোয়েন্টিতে এত বড় ব্যাটিং ঝড় দেখাই যায়নি।
চার কিংবা ছক্কা, সবই যেন তাঁর খেলনার বাক্সে সাজানো। ৬ টি চার, ১১ টি ছক্কা। বল পড়ল, ডেভিড তুলে মারলেন। লেগ স্পিন, অফ স্পিন, ইয়র্কার, ফ্ল্যাট—কিছুই তোয়াক্কা করেননি। তাঁর কাছে প্রতিটি ডেলিভারি ছিল শুধু একটা নতুন গল্প বলার সুযোগ, নতুন এক ঝড় তোলার আয়োজন।
আর মিশেল ওয়েন যেন ছিলেন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। ১৬ বলে ৩৬ রানের ইনিংস দিয়ে নিখুঁতভাবে করেছেন নিজের কাজ, ঠিক যেমন নাটকে মুখ্য চরিত্রকে চোখে পড়ার সুযোগ করে দেয় পার্শ্বচরিত্র।
শেষ পর্যন্ত ১৬.১ ওভারে ২১৫ রানে ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ২৩ বল আর ছয় উইকেট হাতে রেখে সিরিজ পকেটে পুরে নেয় তারা—৩-০ ব্যবধানে। কিন্তু স্কোরলাইন নয়, ম্যাচটা মনে থাকবে একটা নামেই—টিম ডেভিড। এই অনন্য আগ্রাসনেই তো শাই হোপের সেঞ্চুরিটা দিন শেষে রীতিমত তামাশায় পরিণত হয়েছে।