মনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে আছে লঙ্কান দল

অথচ সেই শ্রীলঙ্কাই পরে আবারও প্রথম দিকের দলগুলোর একটি হিসেবে পাকিস্তানে সফর শুরু করে। কিন্তু, ইসলামাবাদের সাম্প্রতিক ঘটনাটি যেন আবারও সেই পুরোনো আতঙ্ক ফিরিয়ে এনেছে—এবারও শ্রীলঙ্কা দলকে ঘিরেই।

পাকিস্তান সফর ঘিরে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলে। ইসলামাবাদে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলের কয়েকজন সদস্য ও তাঁদের পরিবার। অনেকে দেশে ফিরতে চাইলেও, কঠোর অবস্থান নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)। বোর্ড স্পষ্ট জানিয়েছে—যে কেউ বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে দেশে ফিরলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএলসি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে যদি কোনো খেলোয়াড় বা সাপোর্ট স্টাফ দেশে ফেরেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা করা হবে এবং তার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। ইসলামাবাদে, যেখানে বর্তমানে শ্রীলঙ্কা দল অবস্থান করছে, সেখানেই ঘটে আত্মঘাতী হামলা। এরপর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সফরকারী দলের ভেতরে। অনেক খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফ দেশে ফেরার অনুরোধ জানান। তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বুধবার রাতভর চলে বৈঠক—দলের খেলোয়াড়, ম্যানেজমেন্ট, এসএলসি ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্মকর্তারা ছিলেন আলোচনায়। এমনকি পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ও পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিও নিজে হাজির হন হোটেলে, শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের আশ্বস্ত করতে। নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারাও উপস্থিত থেকে নিশ্চিত করেন যে দলের সুরক্ষায় কোনো ঘাটতি রাখা হবে না।

তবে এসব আলোচনার প্রভাবে সিরিজের সূচি পরিবর্তন হয়েছে। বাকি দুই ওয়ানডে এক দিন পিছিয়ে ১৪ ও ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। আগের সূচি ছিল ১৩ ও ১৫ নভেম্বর। এছাড়া পরবর্তী ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচও এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে।

এসএলসি জানিয়েছে, বোর্ড দ্রুতই নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করার চেষ্টা করেছে। এদিকে মহসিন নাকভি শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ফ্রেড সিরিওয়ারার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পিসিবির এক বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কা দলের জন্য নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিস্তারিত ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে, এবং সিরিওয়ারা এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

২০০৯ সালে লাহোরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিল শ্রীলঙ্কা দল। সেই ভয়াবহ ঘটনার পর দীর্ঘদিন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্থগিত ছিল। অথচ সেই শ্রীলঙ্কাই পরে আবারও প্রথম দিকের দলগুলোর একটি হিসেবে পাকিস্তানে সফর শুরু করে। কিন্তু, ইসলামাবাদের সাম্প্রতিক ঘটনাটি যেন আবারও সেই পুরোনো আতঙ্ক ফিরিয়ে এনেছে—এবারও শ্রীলঙ্কা দলকে ঘিরেই।

Share via
Copy link