৪৯১ রানের মহাকাব্য

এক মাসের মধ্যে ওয়ানডে ক্রিকেট তাঁর ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান দেখেছিল দুইবার, পুরুষদের ক্রিকেটে আর নারীদের ক্রিকেটে । ২০১৮ সালের ১৯ জুন ৪৮১ রান করেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নটিংহামে এই কীর্তি করে ইংল্যান্ড। তবে তাঁর কিছুদিন আগের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান করে নিউজিল্যান্ড নারী দল। ইংল্যান্ড পুরুষ দলের সর্বোচ্চ রানের থেকে ১০ রান এগিয়ে ছিল তাঁরা।

ইংল্যান্ডের পুরুষ ক্রিকেট দল সেদিন ওয়ানডের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ছুঁলেও সেটা ছিল স্রেফ পুরুষদের ক্রিকেটে। আসল রেকর্ডটা আসলে মেয়েদের ক্রিকেটেই। নিউজিল্যান্ডের সেই রেকর্ড আজো অক্ষয়। সেটা টপকাতে কেউ আদৌ পারবে কি না সেটা আগাম বলা মুশকিল।

২০১৮ সালের আট জুন।

নিউজিল্যান্ডের নারী দল সেদিন খেলতে নেমেছিল আয়ারল্যান্ডের নারী দলের বিপক্ষে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই এই বিশ্বরেকর্ড করে বসে নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯১ রানের পাহাড় গড়ে কিউই নারীরা। ডাবলিনের সেই ম্যাচে অধিনায়ক সুজি বেটস সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কিউইদের। তাঁর দেড়শ রান ও ম্যাডি গ্রিনের সেঞ্চুরিতে ওই বিশাল পাহাড় গড়েছিল নিউজিল্যান্ড।

ম্যাচের শুরুতে সুজি বেটস আরেক ওপেনার জেস ওয়াক্টিনকে নিয়ে ঝড়ো শুরু করেন। মাত্র ১৮ ওভারে ১৭২ রানের জুটি গড়েন এই দুইজন। ১৯ তম ওভারে ওয়াক্টিন আউট হয়ে ফিরলে ক্রিজে আসেন ম্যাডি গ্রিন। ম্যাডি ইনিংস আসলে রানের গতি যেনো আরো বেড়ে যায় কিউইদের।

তাঁরা দুইজন মিলে করেন ১১৬ রানের জুটি। ২৮৮ রানে যখন বেটস আউট হন তখন বেটসের ব্যক্তিগত সংগ্রহ ১৫১ রান। ৯৪ বলে ১৬০.৬৩ স্ট্রাইকরেটে ১৫১ রানের সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন সুজি। ইনিংসে ছিল ২৪ টি চার ও ‍দু’টি ছক্কা। ওদিকে ম্যাডি গ্রিন ৭৭ বলে ১৫৮.৪৪ স্ট্রাইকরেটে করেন ১২২ রান। তাঁর ইনিংসে ছিল ১৫ টি চার ও একটি ছক্কা।

তারপর শুরু হয় ১৭ বছর বয়সী এক বালিকার শো। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১৭ বছর বয়সে সেদিন খেলতে নামেন অ্যামিলা কের। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ বলে ৮১ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। সেই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ১৮০.০০। সবমিলিয়ে ৫০ ওভার ব্যাটিং শেষে চার উইকেট হারিয়ে ৪৯১ রানের সংগ্রহ হয় নিউজিল্যান্ডের।

এটিই আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান। এরপর ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের মালিক ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিল ৪৮১ রান। ওদিকে বল হাতেও একই রকম ধারালো ছিল নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। মাত্র ১৪৪ রানেই আয়ারল্যান্ডকে অল আউট করে দেয় নিউজিল্যান্ড। বল হাতে ক্যাসপেরেক নেন ৪ উইকেট। এছাড়া হান্নাও নেন ২ উইকেট। ফলে শেষ পর্যন্ত ৩৪৭ রানের বিশাল জয় পায় নিউজিল্যান্ড।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link