দীনেশ কার্তিক – এই নামটা শুনলেই আপনার চোখের সামনে ভেসে উঠবে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ৷ যেখানে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিলো ১৮ কোটি বাংলাদেশির! বাংলাদেশের প্রায় জিতে যাওয়া ম্যাচ দীনেশ কার্তিকের তাণ্ডব শেষ বলে জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। সেদিন দীনেশ কার্তিক না থাকলে ভারতকে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফিটা তুলে ধরতো সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ। ভারতীয়রাও কার্তিকের সেই ইনিংসের জন্য তাকে বিশেষভাবে মনে রেখেছে।
সেই নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ভারতের জয়ের নায়ক দীনেশ কার্তিকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা মহেন্দ্র সিং ধোনির ছায়াতেই কেটেছে। ধোনি থাকায় দলে অনেকটা আসা যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন কার্তিক। কখনো ইনজুরিতে, কিংবা ব্যাকআপ উইকেটকিপার হিসেবেই তিনি দলে ছিলেন৷ সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে খেলেছিলেন তিনি। যেখানে ভারতকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে কিউইরা।
সেই সেমিফাইনালে রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ২৫ রানেই চার উইকেট হারায় ভারত। আর সেখানে দীনেশ কার্তিকের অবদান ছিলো ২৫ বলে মাত্র ৬ রান! এরপর দল থেকে বাদ পড়লেন। আর দলে ডাক পাননি তিনি। অবশ্য এটা তার জন্য নতুন কিছু না।
মহেন্দ্র সিং ধোনির আগে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও পুরো ক্যারিয়ারই কেটেছে ধোনির ছত্রছায়ায়। তবে তিনি হাল ছাড়েননি! টি-টোয়েন্টিতে ফিনিশার হিসেবে ভালো করার পরেও বাদ পড়া এই ৩৬ বছর বয়সী উইকেটরক্ষকের নজর এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
সাবেক কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই অধিনায়ক এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার লক্ষ্য স্থির করেছেন। ২০২১ এবং ২০২২ টি-বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে খেলতে চান তিনি। বললেন, ‘তারা আমার বয়স না, বরং আমি কতটা ফিট সেটাই দেখতে চায়। যদি আপনি ফিটনেস টেস্টে পাশ করেন তার মানে আপনি আপনার দেশের জন্য খেলতে প্রস্তুত। আমার লক্ষ্য দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা। টানা দুইটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে, এই বছর এবং পরের বছর। এবং আমি এটার জন্য সবকিছু করবো যাতে আমি দলের অংশ হতে পারি।’
কার্তিকের চোখে টি-টোয়েন্টি দল থেকে তাঁর বাদ পড়াটা ছিল অপ্রত্যাশিত। তিনি বলেন, ‘আমি জানি আগে আমি বেশ ভালো খেলেছি এবং যখন আমি বিশ্বকাপের পর দল থেকে বাদ পড়ি, আমি ভেবেছিলাম আমি টি-টোয়েন্টি তখনো ভালো করছিলাম। কিন্তু বিশ্বকাপে ভালো না করায় আমাকে টি-টোয়েন্টি তেও বাদ দেওয়া হয়।’
সবশেষ এবারের আসরের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) স্থগিত হবার আগ পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলেন কার্তিক। ৭ ম্যাচে ১৩৮ স্ট্রাইক রেটে ১২৩ রান করেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেতে আইপিএলের বাকি অংশে তার চমক দেখানোটা আবশ্যক। সেখানে ব্যর্থ হলে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলাটাও থেকে যাবে স্বপ্নই।