ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সুপার লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও আবাহনী লিমিটেড। ঐতিহ্যের এই লড়াইয়ে একটা উত্তাপ তো ছিলই। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে দেখা যায়নি সেই ঝাঁজ। আবাহনীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি মোহামেডান। ৬০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে শুভাগত হোমের দল।
মুশফিকুর রহিমের হাফসেঞ্চুরি এবং নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুনিম শাহরিয়ারের ছোট, কিন্তু কার্যকর দুটি ইনিংসে ভর করে ১৯২ রানের পাহাড় গড়ে আবাহনী। এই রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় আত্মসমর্পণ করে মোহামেডান। তবে মূল ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও বিপর্যয়ের মুখে ৪২ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন আবু হায়দার রনি।
বড় রান তাড়া করতে নেমে যে রকম শুরুর প্রয়োজন ছিল সেটাই পায়নি মোহামেডান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান অভিষেক মিত্র ও শামসুর রহমান। শূন্য রানে দুই উইকেট হারানোর পর আব্দুল মজিদ ও ইরফান শুকুরের ব্যাটে ঘুঁড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মোহামেডান।
কিন্তু এই জুটিকে খুব বেশি দূর যেতে দেননি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে জোড়া আঘাত করেন এই স্পিনার। ১৮ বলে ২৭ রান করে শুকুর বোল্ড হয়ে যাওয়ার পর শূন্য রানে মোসাদ্দেকের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান নাদিফ চৌধুরি। এরপর মজিদ ১০ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়ার পর শুভাগত হোম ফিরে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় মোহামেডান।
৪২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মাহমুদুল হাসান ও আবু হায়দার রনি চেষ্টা করলেও সেটা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ৭৮ রান। ৩৬ বলে ৩৭ রান করে মাহমুদুল ফিরে গেলেও ৪২ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন আবু হায়দার।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান সংগ্রহ করে মোহামেডান। আবাহনীর পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব ও আরাফাত সানি।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা আবাহনীর শুরুটা ভালো হয়নি। চোট কাটিয়ে এবারের আসরে প্রথম বার খেলতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাস। ৭ বলে ৪ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার। লিটন ফিরে গেলেও দারুণ ব্যাট করতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুনিম শাহরিয়ার। দ্বিতীয় উইকেটে দুজন যোগ করেন ৪০ রান।
কিন্তু ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। ১৭ বলে ২৭ রান করে শান্ত ফিরে যাওয়ার পর ২৭ বলে ৪৩ রান করে ফিরে যান মুনিম। ৭৭ রানে ৩ উইকেট হারালেও থেমে থাকেনি আবাহনীর রানের চাকা। সাবলীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন মুশফিকুর রহিম ও নাঈম শেখ।
কিন্তু ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি নাঈম। আগের ব্যাটসম্যানদের মতই উইকেটে থিতু হয়েও ১৮ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান তিনি। এরপর শেষের ঝড় তুলতে গিয়ে ৯ বলে ১০ রান করে আফিফ ফিরে গেলেও ৩৩ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান সংগ্রহ করে আবাহনী। এবারের আসরে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। মোহামেডানের পক্ষে তিনটি করে উইকেট শিকার করেন রুয়েল মিয়া ও আসিফ হাসান। এছাড়া একটি উইকেট পেয়েছেন আবু জায়েদ রাহী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড : ১৯২/৭ (ওভার: ২০; লিটন- ৪, মুনিম- ৪৩, শান্ত- ২৭, মুশফিক ৫৮*) (রুয়েল- ৪-০-১৯-৩, আসিফ- ৪-০-৪৭-৩)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ১৩৩/৭ (ওভার: ২০; মজিদ- ১০, শুকুর- ২৭, মাহমুদুল- ৩৭, রনি- ৫৩*) (সাইফউদ্দিন- ৪-১-৩৪-২, সানি- ৩-০-১৪-২)
ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ৬০ রানে জয়ী।