এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) অবশেষে করা গেল। মাঝে করোনার থাবা পড়লেও দ্বিতীয় দফায় বেশ সফলতার সাথেই অনুষ্ঠিত হয়েছে এই আসর। চেন্নাই সুপার কিংস চতুর্থ বারের মত নিজেদের ঘরে শিরোপা নিয়ে গিয়েছে। এছাড়া এবারের আইপিএলে ভারতের তরুণ ক্রিকেটাররাও বেশ আশাজাগানীয়া পারফর্মেন্স করেছেন।
অনেক ক্রিকেটারই এবারের আইপিএলে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন নতুন উচ্চতায়। তবে ভিন্ন চিত্রও আছে। অনেক ক্রিকেটারই এবারের আইপিএলে নিজেদের সেরাটা দিতে পারেননি। এবারের আসরের ফ্লপ সেই ক্রিকেটারদের নিয়েই খেলা ৭১-এর এই একাদশ। চলুন দেখে নেই কারা জায়গা পেলেন দুর্ভাগাদের এই একাদশে?
- ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): পাঞ্জাব কিংস
আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ও আকর্ষণীয় ক্রিকেটারদের একজন ক্রিস গেইল। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিং এর কারণে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাঁকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী থাকে। দ্য ইউনিভার্স বসের কাছ থেকে দলগুলোর আশাও তাই অনেক বেশি। তবে এবারের আইপিএলে একেবারেই ব্যর্থ ছিলেন ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান। ১০ ম্যাচ খেলে তিনি করেছেন মাত্র ১৯৩ রান।
- ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া): সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ
আমাদের এই একাদশের আরেক ওপেনার হিসেবে আছেন ডেভিড ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ক আইপিএলেরও বেশ সফল ক্রিকেটারদের একজন। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ তাঁর নেতৃত্বে শিরোপাও জিতেছিল আইপিএলের। এবারো অধিনায়ক হিসেবেই শুরু করেছিলেন আসর। তবে বাজে ফর্মের কারণে পরে দল থেকেই বাদ পড়েন এই ব্যাটসম্যান।
- সুরেশ রায়না (ভারত): চেন্নাই সুপার কিংস
সুরেশ রায়নাকে বলাই হয় মিস্টার আইপিএল। ভারতের এই অলরাউন্ডার আইপিএলের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। চেন্নাইয়ের হয়ে পুরো ক্যারিয়ারে দারুণ সব কীর্তি আছে তাঁর। এই আসরও একটি হাফ সেঞ্চুরির মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। তবে এরপর আর সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। এরপর দল থেকেই বাদ পড়েছিলেন।
- ইয়োন মরগ্যান (ইংল্যান্ড-অধিনায়ক): কলকাতা নাইট রাইডার্স
অধিনায়কন হিসেবে হয়তো মরগ্যানকে এখন ব্যর্থ বলা যাবে না। তাঁর নেতৃত্বেই এবারের আসরের ফাইনাল খেলেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তবে ব্যাটসম্যান হিসেবে মরগ্যান ছিলেন একেবারেই ব্যর্থ। কলকাতার হয়ে ১৭ টি ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ১৩৩ রান। আসরের মাঝপথে তাঁকে একাদশ থেকে বাদ দেয়ার অভাসও পাওয়া যাচ্ছিল।
- সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ): কলকাতা নাইট রাইডার্স
অলরাউন্ডার সাকিবকে আবার দলে ভিড়িয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। একসময় ব্যাটিং , বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টেই কলকাতাকে দারুণ সার্ভিস দিয়েছেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে খুব বেশি ভালো সময় কাটাচ্ছেন না সাকিব। কলকাতার হয়েও ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি। বল হাতেও ছিল না বড় কোন সাফল্য।
- ঋদ্ধিমান সাহা (ভারত-উইকেটরক্ষক): সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের এই উইকেটরক্ষকও আছেন আমাদের এই একাদশে। তিনিও এই আসরে ব্যাট হাতে ছিলেন ফ্লপ। ১৩ টি ম্যাচ খেলে করেছেন ১৩১ রান।
- হার্দিক পান্ডিয়া (ভারত): মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের বড় তারকা হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাটিং, বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টেই এই ফরম্যাটে বেশ কার্যকর তিনি। ফলে আইপিএলের নিলামেও তাঁর বেশ চড়া দাম উঠে। তবে এবারের আইপিএল মুম্বাইয়ের হয়ে বাজে একটি মৌসুম পাড় করেছেন তিনি।
- ক্রুনাল পান্ডিয়া (ভারত): মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স
ভারতের আরেক কার্যকর অলরাউন্ডার ক্রুনাল পান্ডেয়া। তবে এই অলরাউন্ডারও ব্যাট বল হাতে এই আসরে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। এইবার আইপিএলে মোট ১৩ টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখানে ব্যাট হাতে করেছেন ১৪৩ রান। এছাড়া বল হাতে পেয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট।
- ভূবনেশ্বর কুমার (ভারত): সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ
ভারতীয় ক্রিকেটের সফল এক পেসারের নাম ভূবনেশ্বর কুমার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দিন দিন নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন এই বোলার। তবে এবারের আইপিএলে খুব একটা ভালো সময় কাটেনি এই বোলারের। এই আসরে ১১ টি ম্যাচ খেলে মাত্র ৬ টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
- রবীচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত): দিল্লী ক্যাপিটালস
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারত দলে ডাক পেয়েছেন অশ্বিন। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনারদের একজন তিনি। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এবার নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি অশ্বিন। এবারের আইপিএলে ১৩ টি ম্যাচ খেলে এই স্পিনার নিয়েছেন মাত্র ৭ উইকেট।
- মোহম্মদ সিরাজ (ভারত): রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু
ভারতের পেসিং বোলিং অ্যাটাকের নতুন সংযোজন মোহম্মদ সিরাজ। যদিও রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে এখনো সেভাবে প্রমাণিত নন এই বোলার। এবার আইপিএলেও সেভাবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। এই আসরে ১৫ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১১ উইকেট।