হাতছোঁয়া দূরত্ব, তবু অনন্ত পথ

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে উড়ন্ত শুরু পাকিস্তানের। এরপর নিউজিল্যান্ডকেও হারিয়েছে নিজস্ব স্টাইলে। নিজেদের প্রথম চার ম্যাচেই জিতে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল পাকিস্তান। বাবর-রিজওয়ানের ওপেনিং, আসিফ আলীর ফিনিশিং কিংবা শাহীন আফ্রিদির গতিতে বিপক্ষ দলকে তোয়াক্কাই করছেনা পাকিস্তান।

পাকিস্তান সবসময়ই আনপ্রেডিক্টেবল এক দল। যেকোনো আসরে, যেকোন কন্ডিশনেই তাঁদেরকে আপনি আলোচনার বাইরে রাখতে পারবেন না। এছাড়া এবার পাকিস্তান যেভাবে নিজেদের আসর শুরু করেছে তাতে তাঁদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখাটা বাড়াবাড়ি হবেনা। পাকিস্তানের দর্শকরাও ইতোমধ্যে শিরোপা জয়ের দিন গুনছেন। সবমিলিয়ে বাবর আজমের এই দল যেনো এক অন্য পাকিস্তান।

তবে শিরোপা জিততে হলে বিশ্বকাপে এখনো কঠিন দুটি ম্যাচ পাড়ি দিতে হবে পাকিস্তানকে। সেসব ম্যাচেও একই মানের ক্রিকেট খেলতে হবে বাবর আজমদের। প্রত্যাশার চাপ নিয়ে মাঠে কোন ভুল করে ফেললেই ভেস্তে যাবে সব আশা, পরিকল্পনা। শিরোপা প্রত্যাশিত পাকিস্তানের সামনে বড় হয়ে আসতে পারে যে বাঁধা গুলো বড় হয়ে আসতে পারে চলুন সেগুলো একবার দেখে নেয়া যাক।

  • ইংল্যান্ড নামের একটি দল

নিজেদের গ্রুপে পাকিস্তান ভারত কিংবা নিউজিল্যান্ডের মত বড় দলগুলোকে হারিয়েছে। তবে অন্য গ্রুপেও আছে ক্রিকেটের আরো কিছু পরাশক্তি। সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল ম্যাচে তাঁদের মুখোমুখি হতে হবে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের পাশাপাশি ইংল্যান্ডও এই বিশ্বকাপে দারুণ ক্রিকেট খেলছে। যদিও সেমি ফাইনালে এই দুলের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দুই দলই সেমির বাঁধা পাড় হতে পারলে মুখোমুখি হবে একে অপরের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি রেকর্ডও খুব একটা সুখকর না। তবে ম্যাচটা যখন ফাইনাল তখন আসলে ফেভারিট বলে কিছু নেই।

  • অস্ট্রেলিয়া নামের আরো একটি দল

ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কোনটিরই নক আউট পর্বে এখনো অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। ওদিকে অন্য গ্রুপেও অস্ট্রেলিয়াও দারুণ ক্রিকেট খেলছে। বিশ্বকাপের আগে আরব আমিরাতের কন্ডিশনে তাঁদেরকে অনেকেই ফেভারিটের তালিকায় রাখেনি। তবে আমিরাতের কন্ডিশনের নিজেদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলছে মাইটি অস্ট্রেলিয়া। ফলে ফাইনাল খেলতে হলে এই অজি বাঁধা টপকেই যেতে হবে পাকিস্তানকে।

  • এখনো পথ বাকি

বিশ্বকাপ অনেক দলই এমন উড়ন্ত শুরু করে। তবে সেটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখাটা সবচেয়ে জরুরি। সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনালে গিয়ে অনেকেই চাপ সামলাতে পারেন না। পাকিস্তানেরও সেটা মাথায় রাখতে হবে। তাঁরা এখন পর্যন্ত যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছে সেটা নক আউট পর্বেও ধরে রাখতে হবে। নাহলে শুধু আক্ষেপ নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে পাকিস্তানকে।

  • বাবর-রিজওয়ান নির্ভরশীলতা

নিজেদের প্রথম চার ম্যাচে সবমিলিয়ে ৬২৪ রান করেছে পাকিস্তান। তবে এরমধ্যে ৪০২ রানই এসেছে দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহম্মদ রিজওয়ানের ব্যাট থেকে। অর্থাৎ পাকিস্তানের মোট রানের ৬৪ শতাংশ রানই করেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ফলে পাকিস্তানের অন্য ব্যাটসম্যানদের এখনো চূড়ান্ত পরীক্ষায় পড়তে হয়নি।

বিশেষ করে ফখর জামান এখন অবধি চূড়ান্ত ব্যর্থ। শেষে আসিফ আলী ভালো করলেও পাকিস্তানের মিডল অর্ডার বড় ম্যাচে ভোগাতে পারে। এছাড়া কোন কারণে বাবর ও রিজওয়ান রান করতে না পারলে বেশ বড় সমস্যার পড়বে পাকিস্তান। তবে, আশার ব্যাপার হল মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিকরা এই বয়সেও ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম করে চলেছেন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link