উইল জ্যাকস: নেক্সট জেনারেশন পাওয়ার হিটার

একটি আন অফিশিয়ার টি-টেন ম্যাচে ২৫ বলে সেঞ্চুরি করে ফেলেছিলেন। সেই থেকেই হার্ড হিটিং ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁকে নিয়ে আলোচনাটা শুরু হয়। ইংল্যান্ডের সহ-অধিনায়ক হিসেবে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও খেলেছেন। তবে ধারাবাহিকতার অভাবে এখনো জাতীয় দলের হয়ে ডাক পাননি। যদিও বিপিএলে নিজের ধারাবাহিকতার প্রমাণ দিচ্ছেন নিয়ম করেই।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে কেনার লুইসকে সাথে নিয়ে প্রায় প্রতি ম্যাচেই দারুণ শুরু এনে দিয়েছেন। মিরপুরের উইকেটে মিনিস্টার ঢাকার বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪১ রানের ইনিংস। এরপর খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষেও ২৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবে আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের বাইশ গেজে যেন ঝড় বয়ে গেল।

প্রতিপক্ষ সিলেট সানরাইজার্সের বোলাররা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন জ্যাক উইলসের এমন ব্যাটিংয়ে। উইকেটের চারপাশে অসাধারণ সব শট। পাওয়ার প্লের ছয় ওভার একদম পুরোপুরি ব্যবহার করেছেন। মাত্র ১৯ বলের একটি ইনিংস। তবে এতে ছিল মোট ৭ টি চার ও ৩ টি ছয়। ব্যাটিং করেছেন ২৭৩.৬৮ স্ট্রাইক রেটে। ১৯ বলের এই ইনিংস থেকে এসেছে ৫২ টি রান। তাঁর এই ইনিংসেই ৪ ওভার ৪ বলে ৬২ রানের ওপেনিং জুটি পায় চট্টগ্রাম। ১৮ বলে পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা, যেটা বিপিএলের ইতিহাসেরই দ্বিতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি।

ওদিকে ইংল্যান্ড অনেকদিন ধরেই উইল জ্যাকস নামে একটা তারকার অপেক্ষায় আছে। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে পরিচিত এক নাম তিনি। বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার সময় থেকেই তাঁকে নিয়ে স্বন দেখছে দেশটির ক্রিকেট। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন সহ-অধিনায়ক হিসেবে। সেই আসরে কানাডার বিপক্ষে একটি সেঞ্চুরিও করেছিলেন। তবে এরপর আর আসরটা ভালো কাটেনি।

এছাড়া কাউন্টি ক্রিকেটেও তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন উইল জ্যাকস। লম্বা এই ব্যাটসম্যান পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন তাঁর ক্লিন হিটিং অ্যাবিলিটির জন্যই। এছাড়া বল হাতেও বেশ কার্যকর এই স্পিনার।

ইংল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার অনেকদিন ধরেই জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছেন। তবে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার আগে তাঁকে কোথাও ধারাবাহিকভাবে প্রমাণ করতে হতো। সেই কাজটার জন্যই বোধহয় বিপিএলকে বেঁছে নিলেন এই ব্যাটসম্যান।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অন্যতম শক্তির জায়গা হয়ে উঠেছেন এই ওপেনার। প্রতি ম্যাচেই তাঁর ব্যাটে চড়ে দারুণ শুরু পাচ্ছে চট্টগ্রাম। ধারাবাহিকতা ও স্ট্রাইকরেট দুটোই সমানতালে প্রমাণ করে যাচ্ছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে ৬৮ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন উইলস। সেখানে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১৪০১ রান। তবে এই ফরম্যাটে তাঁর স্ট্রাইকরেট অবাক করার মত। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে ব্যাটিং করেছেন ১৫৩.৪৫ স্ট্রাইক রেটে।

ওদিকে ইংল্যান্ড ক্রিকেটও প্রত্যাশা করে আছে এই ব্যাটসম্যানের উপর। ধারণ করা হয় ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের অন্যতম তারকা হতে পারেন উইল জ্যাকস। তবে তাঁর আগে তো জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া জরুরি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দেয়ার আগে নিজেকে প্রমানের বড় জায়গা হতে পারে এই বিপিএল।

পরের ম্যাচগুলোতেও নিজেকে প্রমান করতে পারলে হয়তো জাতীয় দলেও জায়গা পেতে পারেন। এরপর আবার বিপিএল খেলতে আসলে হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তারকা হয়েই আসবেন এই ব্যাটসম্যান।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link