টেস্টে ১০ হাজার ২৫০ নিউ জিল্যান্ড ডলার, ওয়ানডেতে ৪ হাজার ডলার ও টি-টোয়েন্টিতে আড়াই হাজার ডলার। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি এটা। ছেলে ও মেয়ে আলাদা করে বলার দরকার নেই। কারণ দুই দলেরই ম্যাচ ফি সমান!
পারিশ্রমিকে লিঙ্গ সমতার ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার একই চুক্তিতে যৌথভাবে ছেলে ও মেয়েরা। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট, তাদের বড় ছয়টি আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা, নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন ও লিঙ্গ সমতা বিশেষজ্ঞরা মিলে তৈরি করেছে পারিশ্রমিকের নতুন এই কাঠামো।
শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছেলে ও মেয়েদের ম্যাচ ফি রাখা হয়েছে সমান। ঘরোয়া বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট প্লাঙ্কেট শিল্ডে ম্যাচ ফি ১ হাজার ৭৫০ নিউ জিল্যান্ড ডলার, ৫০ ওভারের সংস্করণের টুর্নামেন্টে ম্যাচ ফি ৮০০ ডলার ও টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সুপার স্ম্যাশে ৫৭৫ ডলার।
কেন্দ্রীয় চুক্তিতে শীর্ষ ক্যাটেগরিতে থাকা একজন নারী ক্রিকেটার এখন এখান থেকে আয় করতে পারবেন বছরে ১ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৬ ডলার পর্যন্ত, আগে যা ছিল সর্বোচ্চ ৮৩ হাজার ৪৩২ ডলার।
তাদের চুক্তিতে ক্যাটেগরি অনেক। কিন্তু আয়ের ব্যবধান খুব বেশি নেই। এমনকি নবম ক্যাটেগরিতে থাকা নারী ক্রিকেটার বছরে আয় করতে পারবেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৪৬ ডলার (আগে যা ছিল সর্বোচ্চ ৬৬ হাজার ২৬৬ ডলার) এবং সপ্তদশ ক্যাটেগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের আয় হবে এক লাখ ৪২ হাজার ৩৪৬ ডলার পর্যন্ত (আগে যা ছিল সর্বোচ্চ ৬২ হাজার ৮৩৩)।
শুধু ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা শীর্ষস্থানীয় নারী ক্রিকেটারদের আয় হবে সর্বোচ্চ ১৯ হাজার ১৪৬ নিউজিল্যান্ড ডলার, আগে যা ছিল স্রেফ ৩ হাজার ৪২৩ ডলার।
শুধু ম্যাচ ফি-ই নয়, বাড়ছে ঘরোয়া ক্রিকেটে চুক্তিতে থাকা নারী ক্রিকেটারের সংখ্যাও। আগে ছয়টি দল চুক্তিতে রাখত পারত ৯ জন করে ক্রিকেটার। এখন চুক্তিতে রাখা হবে প্রতি দলে ১২ জন করে। ৫৪ থেকে বেড়ে তাই চুক্তির আওতায় মোট ক্রিকেটার হবেন ৭২ জন।
এছাড়াও মেয়েদের ক্রিকেটে উত্তরাঞ্চল বনাম দক্ষিণাঞ্চলের নতুন একটি সিরিজের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে বাড়বে তাদের ম্যাচ সংখ্যা ও সামগ্রিক আয়।
শুধু পারিশ্রমিকই নয়, ভ্রমণ, আবাসন, ট্রেনিংসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাতেও ছেলে ও মেয়ে ক্রিকেটারদের একই মান নিশ্চিত করা হয়েছে নতুন এই চুক্তিতে।
এছাড়া গর্ভকালীন ও মাতৃত্বকালীন সুযোগ-সুবিধার আগের প্রশংসিত ধারাগুলো রেখে দেওয়া হয়েছে নতুন চুক্তিতেও…
বলে রাখা ভালো, এবার মেয়েদের বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের পারফরম্যান্স ছিল বেশ বাজে। শিরোপা প্রত্যাশী দল দেশের মাঠে ৯ দলের মধ্যে হয়েছে ষষ্ঠ। তার পরও, প্রক্রিয়ায় কোনো আপোস নেই। এটাই পেশাদারিত্ব। নিউজিল্যান্ড পথ দেখাল। অসাধারণ ও সুন্দর।
- সংযুক্তি
অবশ্যই স্পন্সরশিপ ও অন্যান্য খাত থেকে আয় মেয়েদের ক্রিকেটে খুব বেশি হবে না নিউ জিল্যান্ডেও। কোনো দেশেই হয় না। ছেলেদের ক্রিকেট থেকে বোর্ডের আয়ের সঙ্গে তুলনাই হয় না মেয়েদের ক্রিকেট থেকে আয়ের। তার পরও এই উদ্যোগ তুলে ধরে নিউ জিল্যান্ডের দৃষ্টিভঙ্গি। এভাবেই এগিয়ে যেতে হয় সমতার পথে।
– ফেসবুক থেকে